সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রতি বিরূপ মনোভাব দেখা যাচ্ছে য়ুরোপ আমেরিকার মতো দেশগুলোতে। দখলদার ইসরায়েল নিয়ে ইরানের মনোভাব অনেক আগে থেকে বিশ্ব রাজনীতিতে সুস্পষ্ট। সম্প্রতি আরও কঠোর সমালোচনা জানাচ্ছে দেশটি। ইরানের সংসদ স্পিকারের বিশেষ সহকারী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের সাম্প্রতি মন্তব্য সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে ইসরায়েলের জন্য বড় অস্বস্তি ও দুশ্চিন্তার জায়গা মার্কিন পার্লামেন্টে তাদের বিরুদ্ধাচারণ। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাট দলের এমপি ইসরায়েলের নৃশংতা দেখেও বাইডেনের না দেখার ভান করার বিষয়টিতে বেশ চটেছেন। আন্তর্জাতিক নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ফিলিস্তিনে দখলদারিত্ব চালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ম্যারি নিউম্যানের মতো অনেক ডেমোক্র্যাট দলের কংগ্রেস সদস্য।
বাইডেনকে মার্কিন এমপির আহ্বান
জেরুজালেম এবং পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর দখল এবং তাদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা বন্ধে বাইডেন প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের এক এমপি।
সূত্র মতে, ইলিয়ন থেকে নির্বাচিত মার্কিন কংগ্রেসের নারী প্রতিনিধি ম্যারি নিউম্যান পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে কঠোর ভাষায় ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন এবং তাদের বাড়িঘর দখল করার ঘটনায় ইসরায়েলের নিন্দা জানান।
ম্যারি নিউম্যান পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেন, বলেন, পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এবং পশ্চিমতীরের আল-বুসতান এলাকা থেকে জোর করে ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করে তাদের বাড়িঘর গুড়িয়ে দিয়ে সেখানে অবৈধ ইহুদি বসতি গড়ার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
তাদের এসব বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে যুগের পর যুগ পৃষ্ঠপোষতা করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আমি আজ হাজার হাজার নির্যাতিত ফিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছি, মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, ইসরায়েলি সরকার সম্প্রতি আল-বুসতানের সিলওয়ান এলাকায় ফিলিস্তিনিদের বাড়ি গুড়িয়ে দেয়ার আদেশ দিয়েছে। কয়েক মাস আগে যেভাবে তারা শেখ জারায় ফিলিস্তিনিদের বাড়ি দখলের আদেশ দিয়েছি, একই ভাবে কাঠামোগত দখলদারিত্ব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। কাল হয়তো অন্য এলাকা দখলের আদেশ দেবে ইসরায়েলের আদালত।
মার্কিন এ এমপি আরও বলেন, করোনার এ মহামারিতে ফিলিস্তিন নারী ও শিশুদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে তাদের চোখের সামনে তা গুড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করছে। শিশুদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। এটা অন্যায়, ইসরায়েলকে থামাতে হবে।
যদি আমরা দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে এ সমস্যার সমাধান চাই, তাহলে অবশ্যই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উচিৎ ইসরইলের দখলদারিত্ব বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া।
আরও কঠোর সমালোচনায় ইরান
অধিকৃত জর্ডান নদীর পশ্চিমতীরে একটি অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকালে শুক্রবার ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদিবাদী ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় অন্তত ১৫০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। নাবলুস শহরের কাছে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বেইতা শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত অবৈধ ইহুদি বসতি এভিয়াটার উচ্ছেদের দাবিতে বিক্ষোভের সময় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনারা। এতে চটেছে মার্কিন পাড়া থেকে শুরু করে ইরান।
শনিবার এক টুইটার বার্তায় ইরানের সংসদ স্পিকারের বিশেষ সহকারী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, এই অঞ্চলে ইসরায়েলের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। ভবিষ্যতে এখানে তাদের কোনো জায়গা হবে না। তারা ইহুদিদেরকেও জিম্মি করে রেখেছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরতের কূটনৈতিক সম্পর্কের সমালোচনা করে ইরানের সংসদ স্পিকারের এ বিশেষ সহকারী বলেন, ফিলিস্তিনের সাম্প্রতিক প্রতিরোধ যুদ্ধে দখলদার ইসরায়েল পরাজিত হওয়ার পরও সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাস খুলেছে এবং বাহরাইনও তেল আবিবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে এসব দেশের শাসকরা ইসরায়েলের ভাগ্যের সঙ্গে নিজেদের জড়িয়ে ফেলার পরিণতি সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারছেন না।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৯৯০
আপনার মতামত জানানঃ