রাজধানীর হাজারীবাগ ঝাউচর এলাকায় একটি মাদ্রাসায় আট বছরের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষক যুবায়ের হোসেনকে (২২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যায় হাজারীবাগ ঝাউচর এলাকার ওই মাদ্রাসায় পড়তে যায় শিশুটি। রাত ১১টার দিকে পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে অসুস্থ অবস্থায় ওই শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করে।
শিশুটির পরিবার অভিযোগ করে বলেন, ঝাউচর এলাকার একটি বস্তিতে থাকে শিশুটি পরিবার। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে সে। করোনাকালীন মাদ্রাসা বন্ধ থাকলেও সন্ধ্যায় মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাদের পড়াতেন। সোমবার সন্ধ্যায় শিশুটি আরও কয়েকজন শিশু মিলে মাদ্রাসায় পড়তে যায়। সেখান থেকে রাতে শিশুটি বাসায় ফিরে। তখন কাউকে কিছু না জানালেও রাত সাড়ে ১১টার দিকে শরীরে ব্যথা অনুভব করছে বলে জানায়। তখন তার মা শিশুটির শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হতে দেখতে পায়। পরে শিশুটির মুখ থেকে ঘটনাটি শুনে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানান তিনি।
এরপর হাজারীবাগ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আর শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠায়।
এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, সোমবার সন্ধ্যার পর স্থানীয় মাদ্রাসায় শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষককে আটক করা হয়েছে। শিশুটির পরিবার মামলা করলে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, মাদ্রাসাগুলোতে ধর্ষণ থেকে শুরু করে জোরপূর্বক যৌন নির্যাতন করা হয়৷
শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের প্রধান আবদুস শহীদ এএফপিকে বলেন, ‘‘বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় বছরের পর বছর ধরে তা প্রকাশ্যে আসেনি৷ ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা শিশু সন্তানদের মাদ্রাসায় পাঠান, কিন্তু তারা এই অপরাধগুলো নিয়ে কথা বলেন না এটা ভেবে যে এতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি হবে৷’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মামদুহ বলেন, মাদ্রাসায় যারা পড়াশোনা করেছে তাদের সবাই এই যৌন নির্যাতন সম্পর্কে জানে৷
আমি জানি অনেক মাদ্রাসা শিক্ষক শিশুদের সঙ্গে যৌন মিলনকে বিবাহবহির্ভূত নারীদের সঙ্গে যৌন মিলনের থেকে কম অপরাধ বলে বিবেচনা করেন৷ যেহেতু তারা মাদ্রাসায় একই ছাত্রাবাসে থাকেন তাই তারা সহজেই তাদের অপরাধ আড়াল করতে পারেন এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের এ বিষয়গুলো চেপে রাখতে চাপ দেন৷
এসডব্লিউ/এমএন/এফএ/১৫১৪
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ