অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনে গত বর্ষায় ভয়াবহ বন্যা ও ভাঙনের কবলে পড়লেও, এবারও কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বালু উত্তোলন ও বিক্রিতে জড়িত প্রত্যেকেই প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সূত্র মতে, চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের ২৫ থেকে ৩০টি জায়গা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে বর্ষা মৌসুমে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
কী বলছেন ভুক্তভোগীরা?
গত বর্ষায় ভয়াবহ বন্যা ও ভাঙনের কবলে পড়ে চিলমারী উপজেলা ব্রহ্মপুত্রের বুকে জেগে ওঠা চর মনতলা। পুরো চরটি ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। চর জেগে ওঠার পরে একে একে ৪৫০টি পরিবার সেখানে বাস করতে শুরু করে। বন্যা ও ভাঙনে তারা প্রত্যেকে বাস্তুচ্যূত হয়েছেন।
‘প্রকাশ্যে বালু বিক্রি করছে একটি সিন্ডিকেট। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন কোনোদিনই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি।’
তাদেরই একজন নূর আলম শেখ। নূর আলমের বয়স বর্তমানে ৬৫ বছর। কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা পাশের চরে অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছি। অনেকেই সরকারি প্রকল্পের ঘর পেয়েছেন। এত মানুষের ক্ষতির পরও বালু তোলা বন্ধ হয়নি।’
চিলমারী উপজেলার রমনা ঘাট এলাকার বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, ‘সারা দিনরাত ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে নদের পাড়ে স্তূপ করে রাখা হয়। প্রকাশ্যে বিক্রি করছে একটি সিন্ডিকেট। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন কোনোদিনই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি।’
কী বলছেন বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতরা?
লালমনিরহাট শহরের বালু ব্যবসায়ী একরামুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘চিলমারীর বালুর চাহিদা ব্যাপক এবং দামও বেশি পাওয়া যায়। যে কারণে চিলমারীর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আমিও বালু কিনে আনি।’
চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র থেকে বালু উত্তোলন ও বিক্রিতে জড়িত হারুনুর রশিদ দাবি করেন, ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে পরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সেই জন্য প্রশাসনিক কোনো ঝামেলা হয় না। এতে প্রশাসনের বিনা খরচে খননের কাজও হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছি। এ কাজে স্থানীয় অনেক শ্রমিক জড়িত। তারা আয় করার সুযোগ পাচ্ছেন। আয়ের টাকায় তাদের সংসার চালছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি শুনেছি, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/২০০৫
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ