
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে ফাইজারের তৈরি টিকা ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার ইমার্জেন্সি ইউজ অথরাইজেশনের জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর আবেদন করে। পরদিন ২৫ মে অধিদফতর ভ্যাকসিনটির ডোসিয়ার (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পার্ট, সিএমসি পার্ট এবং রেগুলেটরি স্ট্যাটাস) মূল্যায়ন করে এ সংক্রান্ত গঠিত কমিটির মতামতের জন্য উপস্থাপন করে।
কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ফাইজার-বায়োএনটেকের এই টিকার জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর জানায়, ভ্যাকসিনটির লোকাল লিগ্যাল অর্গানাইজেশন হিসেবে থাকছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ফাইজারের টিকাটি ১২ বছর এবং তার বেশি বয়সী ব্যক্তির জন্য ব্যবহারযোগ্য। দেশে এটি সরকারের ডিপ্লয়মেন্ট প্ল্যান অনুযায়ী নির্ধারিত বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে প্রদান করা হবে। টিকাটি দুই ডোজের। প্রথম ডোজের ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। এর সংরক্ষণ তাপমাত্রা মাইনাস ৯০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি। তবে টিকাটি ৫ দিন ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এবং ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ২ ঘণ্টা স্ট্যাবল থাকবে।
উল্লেখ্য, ফাইজারের এই টিকাটি ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর কর্তৃক জরুরি ব্যবহারে অনুমোদনপ্রাপ্ত চতুর্থ টিকা। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। এছাড়াও গত ২৭ জুন রাশিয়ার স্পুটনিক ভি টিকা এবং গত ২৯ এপ্রিল চীনের সিনোফার্ম টিকার জরুরি ব্যবহারে অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ২২ জন
বিশ্বব্যাপী তাণ্ডব চালানো মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ২২ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৪৮০ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন আরও ১ হাজার ২৯২ জন। দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৯৪ হাজার ৯৮৫ জনে।
করোনাভাইরাস নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ২৯১ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৩৫ হাজার ১৫৭ জন। এদিন মোট করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫ হাজার ৯১৫ জনের। এর আগে বুধবার (২৬ মে) দেশে করোনায় ১৭ জন মারা যান, আর নতুন করে শনাক্ত হয় ১ হাজার ৪৯৭ জন।
এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে মারা গেছেন আরও প্রায় ১২ হাজার ৩২৭ জন মানুষ এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৪১৭ জন। এ নিয়ে বিশ্বে এখন পর্যন্ত মোট করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৫ লাখ ১২ হাজার ১৮৭ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ কোটি ৯০ লাখ ৭৬ হাজার ১৬৮ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ কোটি ৭ লাখ ২ হাজার ৮৭৭ জন।
করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৭১ হাজার ২০৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬ হাজার ১৭৯ জনের।
আক্রান্তে দ্বিতীয় ও মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত মোট সংক্রমিত হয়েছেন ২ কোটি ৭৩ লাখ ৬৭ হাজার ৯৩৫ জন এবং এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১৫ হাজার ২৬৩ জনের।
আক্রান্তে তৃতীয় এবং মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত করোনায় ১ কোটি ৬২ লাখ ৭৫ হাজার ৪৪০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৬২৩ জনের।
আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬ লাখ ২১ হাজার ৬৯৬ জন। ভাইরাসটিতে মারা গেছেন এক লাখ ৯ হাজার ২৩ জন।
এ তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে তুরস্ক। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৫২ লাখ ১২ হাজার ১২৩ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪৬ হাজার ৭৮৭ জন। এদিকে আক্রান্তের তালিকায় রাশিয়া ষষ্ঠ, যুক্তরাজ্য সপ্তম, ইতালি অষ্টম, জার্মানি নবম এবং স্পেন দশম স্থানে রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম, যেখানে মোট মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ৪৫৮ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছে ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯৩ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৮৩৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ