আগামী ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিতভাবে জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী উদযাপনে ১৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামী ২৯ মে শনিবার থেকে শুরু হয়ে এই কর্মসূচি চলবে ১২ জুন পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বে থাকা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচির মধ্যে আছে, ২৯ মে বিকাল সাড়ে ৩টায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভা, ৩০ মে ভোরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ পরিধান, সকাল ১১টায় শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পন, ৩১ মে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) উদ্যোগে আলোকচিত্র প্রদর্শনী।
৩০ ও ৩১ মে রাজধানীর ৮০টি স্থানে দুস্থদের মধ্যে খাবার ও কাপড় বিতরণ করবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।
এছাড়া জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবনের ওপরে ১ জুন স্বেচ্ছাসেবক দল, ২ জুন ছাত্রদল, ৩ জুন যুবদল, ৫ জুন মৎস্যজীবী দল, ৬ জুন শ্রমিক দল, ৭ জুন জাসাস, ৮ জুন তাঁতী দলের উদ্যোগে আলোচনা সভা, ৪ জুন মহিলা দলের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল এবং ৯ জুন জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে শহীদ জিয়ার উপর প্রকাশিত বই প্রদর্শনীর কর্মসূচি রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ৩০ মে বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত শোকের একটি দিন। এই দিনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান দেশি-বিদেশি চক্রান্তে নিহত হয়েছিলেন। যিনি আমাদের জাতীয় ইতিহাসের নানা ক্রান্তিলগ্নে নিজের জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বীর দর্পে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নজির স্থাপন করেছেন।’
তিনি বলেন, জাতি যখন নেতৃত্বহীন এবং দিশেহারা অবস্থায় পতিত হয়েছে, তিনি তখনই আবির্ভূত হয়েছেন ত্রাতার ভূমিকায়। দেশপ্রেমের শক্তিতে বলিয়ান এই ক্ষনজন্মা পুরুষকে তাই জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। ১৯৭১ সালের ২৫মার্চ কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনীর ক্র্যাকডাউনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে সেনা সদস্যদের নিয়ে ‘উই রিভোল্ট’ বলে পাকিস্থানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করেছিলেন, তিনি পরের দিন কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মহান স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছিলেন। তিনিই আবার ৭৫’র ৭ নভেম্বর অমানিষার অন্ধকার থেকে অস্থির, বিশৃঙ্খল, হতাশাগ্রস্থ ও ষড়যন্ত্রের কবলে নিপতিত জাতিকে রক্ষা করেছিলেন। জাতি পরমনির্ভরতায় দেশের সমস্ত দায়ভার এই ত্রানকর্তার উপর অর্পন করেছিল।
প্রিন্স আরও বলেন, বিএনপি শহীদ জিয়ার হাতে গড়া সংগঠন। তাঁর আদর্শ তথা, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ১৯ দফা কর্মসূচিকে ধারণ করে এই দল দেশ ও জাতির কল্যানে এবং অধিকার আদায়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সেকারণেই শহীদ জিয়ার জাতীয়তাবাদী রাজনীতি আজ জনগণের আস্থা-ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে জনগণের মধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কোন ষড়যন্ত্র চক্রান্তই শহীদ জিয়ার রাজনীতিকে এবং তার প্রতিষ্ঠিত দলকে ধ্বংস করতে পারে নাই। ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতেও পারবে না।
প্রিন্স বলেন, “প্রতিবছরের ন্যায় এবারও মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী এই কর্মসূচি বিএনপি গ্রহণ করেছে। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।”
১ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত সারাদেশে জেলা ও মহানগরীতে ইউনিটের উদ্যোগে আলোচনা সভা হবে। এসসব আলোচনা সভায় দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সরাসরি অথবা ভার্চুয়ালি ওইসব কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে জানান প্রিন্স।
এ উপলক্ষে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে পোস্টার প্রকাশ করেছে বিএনপি। ৩০ মে বিভিন্ন সংবাদপত্র ক্রোড়পত্র প্রকাশিত করবে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে দলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা সিদ্দিকী, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম নকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৭১৪
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ