ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উঁচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম শফিকের বিরুদ্ধে ধর্ষন ধামাচাপা দিতে ধর্ষণে গর্ভবতী কিশোরীকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর ওই চেয়ারম্যান ও তার ভাইসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন কিশোরীর বাবা।
মামলার আসামিরা হলেন, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উঁচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, তার ভাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, চেয়ারম্যানের দুই বডিগার্ড দুলাল মিয়া, মাহাবুবুল আলম ও কিশোরীর মা।
ময়মনসিংহ জেলা ও জজ আদালতের আইনজীবী মকবুল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, কিশোরীর বাবা মঙ্গলবার ময়মনসিংহের নারী ও শিশু আদালতে অভিযোগ দিলে বিচারক ঈশ্বরগঞ্জ থানাকে মামলা হিসেবে গণ্য করার আদেশ দেন।
আইনজীবী মকবুল অভিযোগের বরাতে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান শফিক কিশোরীর মায়ের মৌন সম্মতিতে মিথ্যা বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এতে কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। বিবাদীরা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য কিশোরীকে কবিরাজি ওষুধ দিয়ে গর্ভপাতের চেষ্টা করেন। এতে কিশোরী অসুস্থ হলে ৯ মে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নিতে বলেন। কিন্তু তাকে ঢাকায় না নিয়ে বাড়িতে রাখা হয়। এতে কিশোরী আরও অসুস্থ হয়। ১১ মে তাকে ঢাকায় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরদিন মৃত্যু হয়।
বাদির আইনজীবী মকবুল বলেন, “বাদি তার আবেদনে বিবাদীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ এনেছেন।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল হক মঞ্জু। তিনি বলেন, “সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। আমরা যেন নৌকা প্রতীক না পাই এবং আমাদের হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এমনটি ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে আমরা কোনোভাবেই জড়িত নই।”
বিশেষজ্ঞরা জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে প্রায়ই বিভিন্ন রকমের অভিযোগ আসে। তারা জনপ্রতিনিধি হয়েও বিভিন্ন দুর্নীতি, সরকারি অনুদান চুরি, জোর করে জমি দখলসহ আরো বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েন যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এমনকি ক্ষমতার প্রভাবে ধর্ষণের মতো জঘণ্য কাজেও জড়িয়ে পড়েন। জনগণের পাশে থাকার জন্য নির্বাচিত হলেও তারা আদতে নিজেদের ফায়দা লুটার জন্য নির্বাচনে দাঁড়ান বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে নিজেরা এতোটাই প্রভাবশালী ও ক্ষমতাশালী বনে যান তারা মনে করেন তাদের শাসনেই চলতে হবে ইউনিয়নকে। ইউপি চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন অভিযোগ আসে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ক্ষমতা বলে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ থেকে পার পেয়ে যান বলে তারা স্থানীয় পর্যায়ে নানা অপকর্মে উৎসাহী হয়ে ওঠেন। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া চললে এমনটি হবার ঘটনা অনেকটাই নেমে আসবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এবিষয়ে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের যথাযথ ভূমিকা পালনের দাবি জানান তারা।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯১৪
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ