মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার-এর এক মার্কিন সম্পাদককে ইয়াঙ্গুনে আটক করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, সোমবার (২৪মে) বিমানে ওঠার আগে মার্কিন নাগরিক ও তাদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ড্যানি ফেন্সটারকে আটক করা হয়। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার তাদের ভেরিফাইয়েড টুইটার অ্যাকাউন্টে জানায়, আমরা জানি না কেন ড্যানিকে আটক করা হয়েছে। সকাল থেকে আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। তাকে নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন এবং দ্রুত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। সংবাদমাধ্যমটি আরও বলেছে, আমাদের অগ্রাধিকার হলো তিনি যে নিরাপদ আছেন তা নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য হিলের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মন্তব্য জানতে চাইলে তারা জানায়, গোপনীয়তার বিবেচনায় আমরা বিস্তারিত জানাতে পারছি না। বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, ড্যানি যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েটভিত্তিক সাময়িকী মেট্রো ডেট্রয়টেও সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন।
ড্যানিকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার। তারা বলেছে, এখন তাদের অগ্রাধিকার হলো ড্যানি যে নিরাপদে আছেন, তা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি তাকে প্রয়োজনীয় সবধরনের সহায়তা দেওয়া। ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমারের প্রধান সম্পাদক টমাস কিন জানান, ড্যানি প্রায় এক বছর ধরে তাদের সংবাদমাধ্যমটিতে কাজ করছেন। তিনি তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চাচ্ছিলেন।
আটকের পর ড্যানিকে ইয়াঙ্গুনের কুখ্যাত ইনসেইন কারাগারে নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করছে ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার। মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী মানুষের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরাও দমন-পীড়ন, হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারের শিকার হচ্ছেন। মিয়ানমারজুড়ে অন্তত ৩৪ জন সাংবাদিক ও ফটোসাংবাদিক কারাগারে রয়েছেন।
মিয়ানমারজুড়ে অন্তত ৩৪ জন সাংবাদিক ও ফটো সাংবাদিক কারাগারে রয়েছেন। এর আগে গত জাপানি রিপোর্টার ইউকি কিতাজুমিকে আটক করা হয়। তবে গত সপ্তাহে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মার্চে অল্প কিছু সময়ের জন্য বিবিসির এক সাংবাদিককে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে আটক করেছিল। পৃথক ঘটনায় পুলিশ ফটো সাংবাদিক রবার্ট বসিয়াগাকে বিক্ষোভের ছবি তোলার সময় গ্রেফতার করার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
২০২১ সালের রিপোর্টার্স উইদাউথ বর্ডার্সের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে মিয়ানমার ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪০তম অবস্থানে রয়েছে।
মিয়ানমারে গত বছরের নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল জয় পায়। নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা অভিমত দেয়। তবে এই নির্বাচনে কারচুপি-জালিয়াতির অভিযোগ আনে দেশটির সেনাবাহিনী। তৎকালীন নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর এ অভিযোগ নাকচ করেছিল।
নির্বাচনে কথিত জালিয়াতির অজুহাত তুলে দেশটির সেনাবাহিনী গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চির নির্বাচিত সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। একই সঙ্গে সু চিসহ দেশটির বেসামরিক নেতাদের গ্রেফতার করে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৬১১
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ