করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চীনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৫ মে) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষামূলক এ টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রাজধানীর চারটি সরকারি হাসপাতাল- ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ, মুগদা ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্টদের পরীক্ষামূলকভাবে এ টিকা প্রদান করা হবে। পরীক্ষামূলক টিকা প্রদানের পর টিকা গ্রহণকারীদের সাত থেকে ১০ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো.নাজমুল ইসলাম এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে চীনের উপহারের এ টিকা ১ হাজার জনকে দেয়া হবে। এ মুহূর্তে মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি’র শিক্ষার্থী এবং করোনা রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে জড়িতদের টিকা দেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পসহ বাংলাদেশে বিভিন্ন কাজে অবস্থানরত চীনা নাগরিক ও চীনে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের এ টিকার আওতায় আনা হবে। চীন সরকারের উপহারের পাঁচ লাখ ডোজ টিকায় আড়াই লাখ মানুষকে টিকাদান করা সম্ভব হবে।’
সম্প্রতি চীন থেকে উপহার হিসেবে মোট পাঁচ লাখ ডোজ টিকা পায় বাংলাদেশ। শুরু থেকেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়ে আসছিলো, এসব টিকা পাবেন বাদ পড়া ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বাস্থ্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর সব কিছু ঠিক থাকলে ঢাকার ৪টি ও ঢাকার বাইরের ৩৩টি সরকারি মেডিকেল কলেজে একযোগে চলবে এই টিকা কর্মসূচী। চীনের টিকা ২৮ দিনের ব্যবধানে দুই ডোজ দিতে হবে। করোনার বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা অন্তত ৭৯ শতাংশ। একটি শিশিতে একজনকেই টিকা দেয়ার সুবিধা থাকায় এর অপচয়ের হারও শুণ্য।
তবে যারা অক্সফোর্ডের একটি টিকা নিয়েছেন তাদের চীনের এই টিকা নেয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিকে চীনের চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ বা সিনোফার্ম থেকে বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের দেড় কোটি টিকা কিনতে যাচ্ছে। বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় প্রথম চালানে সিনোফার্মের ৫০ লাখ টিকা জুনে বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। তিন মাসে সিনোফার্মের কাছ থেকে দেড় কোটি টিকা কিনতে দুই পক্ষ তিনটি চুক্তি সইয়ের জন্য চূড়ান্ত করে ফেলেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গতকাল সোমবার গণমাধ্যমেকে এ তথ্য জানান।
করোনাভাইরাসের প্রথম ধাক্কা সামাল দেওয়ার সময় গত বছরের নভেম্বরে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে বেক্সিমকো ফার্মাকে যুক্ত করে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে বাংলাদেশ। দুই দফায় সেরাম ৭০ লাখ ডোজ টিকা পাঠানোর পর সেরাম রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশ বেকায়দায় পড়ে যায়। ভারতে করোনা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটায় টিকা রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
এতে করে ফেব্রুয়ারিতে চালু হওয়া বাংলাদেশের গণটিকাদান কর্মসূচি মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের লক্ষ্যে এপ্রিলের শেষে এবং মে মাসের শুরুতে যথাক্রমে রাশিয়ার স্পুতনিক-ভি এবং চীনের সিনোফার্মের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৩৪৮
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ