করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের মধ্যেও থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনা। গত এপ্রিলের প্রায় পুরোটা সময় লকডাউন থাকলেও এ মাসে ৪৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫০৭ জন।
একই সময়ে রেল পথে ৮টি দুর্ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি নৌ-পথে ১৪টি দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন দুই জন।
দেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের তৈরিকৃত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। রবিবার (২ মে) সকালে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
কী আছে প্রতিবেদনে?
সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিল মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮২ জন পথচারী, ১৩৪ জন চালক, ১১০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩৩ জন শিক্ষার্থী, ৬ জন শিক্ষক, ২৮ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৫২ জন নারী, ৪৭ জন শিশু এবং ৪ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১১২ জন চালক, ৮২ জন পথচারী, ৩৮ জন নারী, ২৬ জন ছাত্র-ছাত্রী, ৩৬ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪২ জন শিশু, ২ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ৭ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও ৪ জন শিক্ষক ।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সর্বোচ্চ ২২১টি দুর্ঘটনায় ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ১৪৪টি দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল, ৫৫টিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৬৪টিতে নসিমন ও করিমন, ৫২টিতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৩০টিতে প্রাইভেট কার ও ২০টি দুর্ঘটনায় বাস জড়িত ছিল।
এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ৮ এপ্রিল। এ দিন ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও ৩৩ জন আহত হন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৪ এপ্রিল। এদিন ৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৬ জন আহত হন।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ পর্যালোচনা
সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো। সত্য এই যে, বেপরোয়া গাড়ি চালানো এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। আর তাই প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরছে। এছাড়া দেশে বিপুলসংখ্যক গাড়ির ফিটনেস নেই। লাইসেন্স নেই অথচ গাড়ি চালাচ্ছেন এমন ব্যক্তির সংখ্যাও কম নয়। চালকের পরিবর্তে তার সহকারী গাড়ি চালাচ্ছেন এমন তথ্যও জানা যায় দুর্ঘটনার পর।
পাশাপাশি সংস্কারহীন ত্রুটিপূর্ণ রাস্তা, যত্রতত্র পার্কিং, রাস্তার দু’ধারে হাটবাজার বসানো- এগুলোও সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়ে।
তবে সড়ক দুর্ঘটনার সবচেয়ে বড় কারণ হলো সড়ক আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়া। তাই সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ও তাদের সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে যত বাধাই আসুক না কেন, দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি কার্যকর করতে হবে অবশ্যই।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৬৫০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ