উভয়পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে উত্তেজনা বিরাজ করে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক রাহাত রূপান্তর পিকেটারদের হামলার শিকার হয়। এ সময় সাংবাদিক রাহাতের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে পড়ে যায়।
মাথায় হেলমেট থাকার ফলে বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায় ওই সংবাদিক। তবে মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর তাকে পা দিয়ে বুকে পেটে লাথি মেরেছে, পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়াও ইটপাটকেলের আঘাতে সাকিল আহমেদ এবং ববিন রহমান নামে আরও দুই সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অপরদিকে, ভোর থেকেই বগুড়ার ওপর দিয়ে যাওয়া মহাসড়কে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। গোকুল এলাকায় সারাদিন থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে। এলাকাবাসী দাবি করছে পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই গুলি ছুড়েছে। গুলিবিদ্ধ শিশুটিকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদিকে সকাল থেকেই হরতালের বিপক্ষে শহরের টেম্পল রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে।
একপর্যায়ে তারা শহরের নবাববাড়ী এলাকায় বিএনপি কার্যালয়ের দিকে এগুতে থাকলে দুই দলের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশকে গুলি করতে দেখা যায়। পুলিশের রাবার বুলেটে বিএনপি’র ৬-৭ জন কর্মী আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শহরের পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও দফায় দফায় দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দিনব্যাপী বগুড়া শহরজুড়েই থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে। শহরের আভ্যন্তরে রিকশা, অটোরিকশা সীমিত আকারে চলাচল করেছে।
দোকানপাট অলিগলির ভেতরে খুললেও রাস্তা সংলগ্নগুলোর বেশির ভাগ বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে বগুড়ার ঠনঠনিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা ছিল তবে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম দেখা গেছে। বগুড়া জেলা বিএনপি’র সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা মানবজমিনকে জানান, জনগণ স্বস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করেছে। আমাদের প্রোগ্রাম চলাকালীন ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুণ্ডারা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হামলা চালায়।
আমরা তাদের প্রতিহত করেছি। এ সময় পুলিশের রাবার বুলেটে আমাদের ৬/৭ জন কর্মী আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত দুই-তিন দিন ধরে বগুড়ার প্রায় দুই শত নেতাকর্মীকে পুলিশ বিনা কারণে গ্রেপ্তার করেছে।
হরতালের সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বগুড়ার অতিরক্তি পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ মানবজমিনকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। পুলিশ দুই দলকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। তিনি গোকুল এলাকায় গুলিতে শিশু আহতের খবর জানেন না বলেও জানিয়েছেন।
আপনার মতামত জানানঃ