মহাকাশে প্রতিনিয়ত কত কিছুই না হয়ে চলেছে। পৃথিবীর এক কোণে বসে তার ১ শতাংশও মানুষের চোখে পড়ে না। টেলিস্কোপে চোখ রেখে, গবেষণাপত্রের পাতা উল্টে কিছু কিছু মহাজাগতিক ঘটনা মানুষ জানতে পারে বটে, কিন্তু সিংহভাগই থেকে যায় অজানা।
এক বিন্দু আলো পৌঁছাতে যেখানে ১৬০ বছর লেগে যায়, সেখান থেকেও বিপদ ধেয়ে আসতে পারে পৃথিবীর মত গ্রহে। সম্প্রতি নাসার চন্দ্র মান মন্দির এমনই পর্যবেক্ষণ এর কথা জানাল।
চন্দ্রর মহাকাশ গবেষকদের দাবি, মহাকাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নক্ষত্রই রয়েছে এইসব বিপদের মুলে। গবেষণায় জানা গিয়েছে, এই সব নক্ষত্র যখন ধ্বংস হয়ে সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটায়, তখন সেই বিস্ফোরণের অভিঘাতে ছিটকে বেরোয় তীব্র এক্স রশ্মি। সেই একশ রশ্মি এতটাই জোরালো আর শক্তিশালী যে, তাতে ক্ষতি হতে পারে ১৬০ আলোক বর্ষ দূরে থাকা পৃথিবীর মত গ্রহের।
যার জেরে ধ্বংস হতে পারে পৃথিবীর প্রাণীকুলের একাংশ। যে ওজন গ্যাসের স্তর পৃথিবীর মতো গ্রহের আবহাওয়াকে রক্ষা করে তাকে ভেঙে চুরমার করে দিতে পারে এই এক্স রশ্মি। ক্ষতি করতে পারে জলবায়ুর। অন্তত এমনই দাবি করেছে নাসা, ইসা – সহ আরও বেশ কয়েকটি দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
মহাকাশে প্রতিনিয়ত কত কিছুই না হয়ে চলেছে। পৃথিবীর এক কোণে বসে তার ১ শতাংশও মানুষের চোখে পড়ে না। টেলিস্কোপে চোখ রেখে, গবেষণাপত্রের পাতা উল্টে কিছু কিছু মহাজাগতিক ঘটনা মানুষ জানতে পারে বটে, কিন্তু সিংহভাগই থেকে যায় অজানা।
সম্প্রতি মহাকাশ সংক্রান্ত এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে মহাকাশ গবেষণা বিষয়ক পত্রিকা দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিকাল জার্নালে। তারা জানিয়েছে, মহাকাশে হওয়া বেশ কয়েকটি সুপারনোভা বিস্ফোরণের প্রভাব বিশ্লেষণ করেই তারা এই গবেষণাটি প্রকাশ করেছেন। ওই সমস্ত মহাজাগতিক ঘটনায় দেখা গিয়েছে বিস্ফোরণ হওয়া নক্ষত্র থেকে ১৬০ আলোকবর্ষ দূরে ওই ক্ষতিকারক এক্স বিকিরণ স্থায়ী হয়ে থেকে গিয়েছে। পরে তাতে ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে পৃথিবীর মতো বেশ কিছু গ্রহ।
বহির্বিশ্বে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনও গ্রহে যদি প্রাণের অস্তিত্ব থেকে থাকে তবে এই ধরনের এক্স বিকিরণে প্রথমেই ক্ষতি হতে পারে জলজ প্রাণীর। তাদের একটি বড় অংশ স্রেফ মুছে যেতে পারে সেই পৃথিবীর প্রাণী জগৎ থেকে। ধীরে ধীরে নষ্ট হতে পারে বাস্তুতন্ত্র।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মহাকাশে যে তারার মৃত্যু ঘটছে, তার কাছাকাছি অর্থাৎ ১৬০ আলোকবর্ষের মধ্যে থাকা অন্য যে কোনও গ্রহ বা উপগ্রহের উপর ওই বিস্ফোরণ এবং মৃত্যুর প্রভাব পড়তে পারে। এর প্রভাবে গ্রহের অভ্যন্তরীণ আবহাওয়া বদলে যেতে পারে। স্থায়ী প্রভাব পড়তে পারে গ্রহের বায়ুমণ্ডলে।
পৃথিবী থেকে ১৬০ আলোকবর্ষের মধ্যে অবস্থিত কোনও নক্ষত্র যদি মহাকাশে আচমকা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে, তবে তার প্রভাব পড়বে পৃথিবীর উপরেও। পৃথিবীর আবহাওয়া এর ফলে বদলে যেতে পারে।
কোনও নক্ষত্র প্রসারিত হতে হতে নিজের ভর বিকিরণ করতে থাকলে সেই পরিস্থিতিকে সুপারনোভা বলা হয়। এই সুপারনোভার ফলে নির্গত হয় এক্স রশ্মি। যা অন্য যে কোনও গ্রহের বায়ুমণ্ডল, পরিবেশ বদলে দিতে সক্ষম।
বিজ্ঞানীরা অবশ্য জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে পৃথিবীর কাছাকাছি এমন কোনও নক্ষত্র নেই, যা মৃত্যুর মুখে। নিরাপদ দূরত্বেই অবস্থান করছে পৃথিবী। তবে ভবিষ্যতে যদি তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তবে বিপদ হতে পারে। সুপারনোভা নিয়ে আরও তথ্য জানতে গবেষণা জারি রেখেছেন বিশেষজ্ঞেরা।
এসডব্লিউ/এসএস/১৭৫০
আপনার মতামত জানানঃ