ধনরত্ন নিরাপদ রাখার জন্য মাটির তলায় লুকিয়ে রাখার গল্প নতুন নয়। শুধু এশিয়ার দেশে নয় সুদূর নেদারল্যান্ডসেও এই ঘটনা ঘটে। সেক্ষেত্রে মাটি খুঁড়ে সোনার গয়না পাওয়া গেলে অবাক হওয়ারই কথা।
সম্প্রতি এক ইতিহাসবিদ মাটির তলা থেকে খুঁজে পেয়েছেন সোনা এবং রূপার গয়না, যার সম্মিলিত ওজন প্রায় কয়েক কেজি।
লরেঞ্জো রুইজটার নামে এই ইতিহাসবিদ বৃহস্পতিবার চারটি সোনার কানের দুল, দু্ইটি সোনার পাতা এবং ৩৯টি সোনার কয়েন উদ্ধার করে জমা দেন নেদারল্যান্ডসের জাতীয় জাদুঘরে।
২৭ বছর বয়সি লরেঞ্জো জানান যে তিনি ১০ বছর বয়স থেকেই গুপ্তধন খোঁজায় আগ্রহী। ২০২১ সালে, প্রথম তিনি এই মূল্যবান সম্পদ আবিষ্কার করেন নেদারল্যান্ডসের হুগউড শহরে।
লরেঞ্জোর কথায়, ‘একটি মাত্র মেটাল ডিটেক্টর দিয়েই এই সম্পদের খোঁজ পাই আমি।’ এই বিপুল সম্পদ উদ্ধার করে খুশি লরেঞ্জো। ঐতিহাসিক দিক থেকে এই সম্পদ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
এই বিপুল সম্পদ যে তার হাত দিয়েই আবিষ্কৃত হবে এমনটা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি তিনি। পাশাপাশি, সম্পূর্ণ উদ্ধারকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কাউকেই কিছু জানাতে পারেননি।
কিন্তু সমুদ্র উপকূলের এই শহরে মাটির তলায় এত সোনা রূপোর গয়না এলো কীভাবে? আনুমানিক ত্রয়োদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে পশ্চিম ফ্রাইসল্যান্ড এবং হল্যান্ডের মধ্যে ওলন্দাজ সাম্রাজ্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একটি যুদ্ধ হয়।
সম্ভবত, সেই যুদ্ধের সময়েই হুগউড শহরের মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছিল এই ধনরাশি; এমনটাই অনুমান ডাচ ইতিহাসবিদের।
আপাতত, নেদারল্যান্ডসের জাদুঘরে তার উদ্ধার করা সম্পদগুলো প্রদর্শনের জন্য দিলেও আসল মালিকানা তারই থাকবে এমনটাই সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন লরেঞ্জো।
সংবাদমাধ্যমকে লরেঞ্জো বলেন, ‘এমন মূল্যবান জিনিস আবিষ্কার করাটা আমার কাছে বিশেষ ঘটনা। আমি এটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমি কখনোই আশা করিনি, এমন কিছু খুঁজে পাব।’ প্রায় দুই বছর ধরে এ রকম একটি ঘটনা গোপন রাখা অনেক কঠিন ছিল বলেও জানান লরেঞ্জো।
লরেঞ্জোর আবিষ্কার করা নিদর্শনগুলো এত দিন ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে ডাচ্ ন্যাশনাল মিউজিয়াম অ্যান্টিকুইটিজ কর্তৃপক্ষ। এরপর জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাটি খুঁড়ে সন্ধান পাওয়া মুদ্রাগুলোর মধ্যে যেটি সবচেয়ে কম পুরোনো, সেটিও প্রায় ১ হাজার ২৫০ বছর আগের।
এসডব্লিউএসএস/২১৫০
আপনার মতামত জানানঃ