রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক নানাভাবে সরকারের দিক থেকে সুবিধা পেলেও ডিজিটাল দুর্নীতিতে মজে আছে সেই শুরু থেকেই। অবস্থা এমন পর্যায়ে গেছে, ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ১৭ বছরে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত সেলফোন অপারেটর টেলিটক এখন পর্যন্ত এক হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি লোকসান গুনেছে। আর গত চার বছরেই টেলিটক লোকসান করেছে ৯৯৩ কোটি টাকা।
কেনাকাটা থেকে শুরু করে নিয়োগ, পছন্দের কোম্পানিকে কাজ দেওয়া, পুরনো পদ্ধতির এসব লুটপাট তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে নির্দিষ্ট কোম্পানির কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার যন্ত্রপাতি আমদানি কমিশন ও বিটিএস স্থাপনে বাড়ি ভাড়ার অনিয়ম। কাগজে-কলমে কেনা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে নেই; স্ক্র্যাচ কার্ড এবং ক্যাশ কার্ডের হিসাবে এমন কোটি কোটি গরমিলের প্রমাণ মিলেছে। নির্দিষ্ট কিছু সিমের মাধ্যমে বৈধ কায়দায় অবৈধ আয়ের সুযোগ করে দেওয়ার বিষয়টি দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে রীতিমতো আলোড়ন তুলেছে।
অবৈধ ভিওআইপি
টেলিটকের হাজার হাজার সিম দিয়ে অবৈধ ভিওআইপি করা হচ্ছে। সিম বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের পরও অবৈধ ভিওআইপিতে হাজার হাজার টেলিটকের সিম ধরা পড়ছে।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বিটিআরসির অভিযানে জব্দ করা হয় ৯০০ টেলিটক সিম। এসব সিম দিয়ে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ লাখ ৩০ হাজার মিনিট হারে অবৈধ ভিওআইপি কল করা হতো।
দেড় বছর ধরে চক্রটি এই অবৈধ ভিওআইপি করে আসছিলো। এই হিসাবে এখানেই প্রায় ৭ কোটি টাকার রাজস্ব হারায় সরকার। এই ফেব্রয়ারিতে শুধু টেলিটকের ৩৪০০ সিম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভিওআইপি চালানো এক চক্রকে ধরে বিটিআরসি ও র্যাব।
এরআগে অনেক অভিযানে অবৈধ ভিওআইপিতে উদ্ধার করা সিমের মধ্যে টেলিটকের সিমই বেশি পাওয়া যেতো। ২০১৮ সালের নভেম্বরে টেলিটকের ৭৭ হাজার ৫৯০টি সিম বন্ধ করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন। সিডিআর অ্যানালাইজার ও জিও-লোকেশন ডিটেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে ওই সিমগুলো বন্ধ করে দেয় বিটিআরসি।
সাম্প্রতিক এই অভিযান শেষে র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়ার জাকির হোসেন রোডের ই-ব্লকের জি-ফাইভ বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সরঞ্জামসহ শফিকুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে।
আটক শফিকুল ওই বাসার কেয়ারটেকার। উদ্ধার ভিওআইপি সরঞ্জামের মূল মালিক আলী নামের একজন সৌদি প্রবাসী। তিনি প্রবাসে থাকলেও তিনজন কর্মী রেখে ভিওআইপি ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনজনের মধ্যে দু’জন সার্ভার মেইনটেইন করতেন। তবে তারা এখন পলাতক রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, অভিযানে এক হাজারের বেশি টেলিটকের সিম উদ্ধার করা হয়েছে। এই সিম ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা ফোন কল অবৈধভাবে ট্রানজেকশন করতো। অভিযানে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ভিওআইপি সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এই সরঞ্জাম ব্যবহার করে একসঙ্গে ১৬০টি কল ট্রানজেকশন করা হতো।
এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, অবৈধ ভিওআইপি ফোন কলের মাধ্যমে সরকার প্রতি বছর ৫ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। চক্রটি গত দেড় বছর ধরে অবৈধ ভিওআইপির ব্যবসা করে আসছিল। সেই হিসেবে শুধুমাত্র তাদের মাধ্যমেই সরকারের ৭ থেকে ৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
নানা অভিযোগে মুখোর টেলিটক
বিল জেনারেট করে কোটি কোটি টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার মতো অভিনব ঘটনা বাংলাদেশে টেলিটকই প্রথম দেখিয়েছে। ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে বেশ কিছুদিন পর্যন্ত টেলিটকের কয়েকজন কর্মকর্তা মিলে কয়েক হাজার গ্রাহককে প্রতি মাসে তিনশ’ টাকা নিয়ে তাদের অবিরাম কথা বলার সুযোগ দেন। এতে টেলিটক কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমোদন ছিল না।
এর মাধ্যমে অন্তত ১৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এ সম্পর্কিত অডিট প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কাগজপত্রে থাকলেও বাস্তবে টেলিটকের ভাণ্ডারে কোটি কোটি টাকার সিম কার্ড এবং স্ক্যাচ কার্ডের হদিস নেই। টেলিটকের লেজার এবং অন্যান্য হিসাবে মজুদ দুই ধাপে ৩১ কোটি টাকার বিভিন্ন মূল্যমানের স্ক্র্যাচ কার্ড এবং ক্যাশ কার্ড ঘাটতি রয়েছে। একইভাবে ৪৩ হাজার ২৭১টি সিম কার্ডে মজুদ ঘাটতির ফলে কোম্পানি ক্ষতির পরিমাণ আরও ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৯ টাকা। এ বিষয়ে টেলিটকের সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই।
সূত্র মতে, থ্রিজি প্রকল্প নিয়ে টেলিটক সবচেয়ে বেশি অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে। চায়নার এক্সিম ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়া এবং নির্দিষ্ট দুটি কোম্পানির কাছ থেকে কেবল পণ্য কেনার ক্ষেত্রে বেশি অনিয়ম হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব বিষয়ে টেলিটকের ভেতর থেকেই মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ রয়েছে।
‘টেলিটক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন থ্রিজি প্রকল্পের দুর্নীতির শ্বেতপত্র’ শিরোনামের ওই অভিযোগেরই উত্তর চাইলেও ফিরতি উত্তর টেলিটক মন্ত্রণালয়ে দেয়নি বলেও জানা গেছে।
তাছাড়া এক্ষেত্রে গ্রাহকদের সঙ্গেও নানাভাবে প্রতারণা করা হয়েছে। থ্রিজির কারণে খরচ অনেক বেড়ে গেছে। থ্রিজির সুবিধা ভোগ না করেও তাদের বাড়তি বিল গুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেকে।
এছাড়া বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রেও সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সে সময় কোনো স্থান নির্ধারণ না করেই যত্রতত্র নির্বিচারে সাইনবোর্ড-বিলবোর্ড দিয়ে বিপণন বিভাগের কর্মকর্তারা ১০ কোটি টাকা এবং বিজ্ঞাপন প্রচার খাতের প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্রদানের ক্ষেত্রে সীমাহীন পক্ষপাতিত্বের আশ্রয় নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
অনানুষ্ঠানিকভাবে কোনো কোনো দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা স্বীকারও করেন টেলিটকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান। তবে তিনি এর দায় চাপান বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ওপর। তিনি দাবি করেন, কর্তৃপক্ষ যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরেছে সেগুলোই তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ২০১৩ সালে সামনে আসা সরকারি অডিটে অন্তত ৬০০ কোটি টাকা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন মুজিবুর রহমান।
সে প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, অডিটে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার অনিয়মের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু এমন একটি অঙ্ক মেনে নেওয়া যায় না। এটি তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলেও মনে করেন তিনি। মুজিবুর বলেন, টেলিটকের ভেতর থেকেই ষড়যন্ত্রমূলক নানা অভিযোগ করা হচ্ছে। অডিট দলকে খুশি করতে না পারার কারণেও অভিযোগের তালিকা লম্বা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
রাষ্ট্রায়ত্ত এ অপারেটরটির বিরুদ্ধে অবৈধ পন্থায় বৈদেশিক টেলিফোন কল টার্মিনেশনের (ভিওআইপি) অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। প্রমাণও মিলেছে। বিদেশ থেকে যত কল আসছে, তার প্রায় অর্ধেকটার মাধ্যম এ টেলিটক। ওই সময় গ্রামীণফোন আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে সরকার এবং বিটিআরসিসহ নানা পর্যায়ে এ অভিযোগও করে যে টেলিটকের অবৈধ কার্যক্রমের জন্য তাদের আয়ের সুযোগ নষ্ট হচ্ছে।
বিটিআরসিও নানা অভিযোগ করে। সরকারি কোম্পানি হওয়ায় তারাও টেলিটকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। জাতীয় সংসদের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির অবৈধ ভিওআইপি বিষয়ক একটি উপ-কমিটিও এ বিষয়ে টেলিটককে দোষারোপ করে। ওই উপ-কমিটির আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, টেলিটকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও তারা এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য বা প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। এতে প্রমাণ হয় তাদের মধ্যে গাফিলতি আছে।
সংসদীয় কমিটির অপর এক সদস্য বলেন, সরকারের অপর কোম্পানি বিটিসিএলের অনেক কর্মকর্তা এমনকি এমডির বিরুদ্ধে ভিওআইপি-সংক্রান্ত মামলা হলেও টেলিটকের ক্ষেত্রে তা হয়নি। অথচ দুই কোম্পানির বিরুদ্ধেই সমান অভিযোগ।
লোকসান সত্ত্বেও সরকারের বিশাল বিনিয়োগ
এদিকে সম্প্রতি লোকসানের বৃত্তে আটকে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের নেটওয়ার্কের আধুনিকায়নে দুই হাজার ২০৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চায় সরকার।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে ‘গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও ৫জি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্কের আধুনিকায়ন প্রকল্পের অনুমোদন করা হয়েছে।
অথচ ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির আয়-ব্যয়ের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে শুধুমাত্র দুই অর্থবছরেই প্রতিষ্ঠানটি লাভের মুখ দেখেছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে ১১ কোটি ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৪৬ কোটি টাকা মুনাফা করে টেলিটক।
লোকসানে থাকার পরেও টেলিটকের নতুন প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘একটা প্রসঙ্গ আসছে প্রায়ই টেলিটকে লোকসান হয় তারপরে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে কেন? কল্যাণমুখী সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার স্টেটের দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের নীতি প্রণীত হয়। ব্যক্তিখাতকে আমরা সহায়তা করবো, সুযোগ দেব। কিন্তু সরকার একদম সব কিছু ছেড়ে দেবে না।’
টেলিটকে বড় বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘টেলিটকে এবার যেটা নেয়া হয়েছে সেটা একটু বেশি। এবার যখন প্রজেক্টটা আসল, থার্ড পার্টি দিয়ে এটাকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। টেলিটকে লোকসানের কারণটা হলো- বাকি সব কয়টার রেট কিন্তু ডাবল তবে টেলিটকে কম। সোশ্যাল ওয়েলফেয়ারকে মাথায় রেখে অনেক লোকসানি প্রতিষ্ঠানও আমাদের চালিয়ে যেতে হয়।’
ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মো. মামুন-আল-রশীদ বলেন, এই প্রকল্প দেখার পরে কারও কারও কাছে মনে হত পারে, প্রকল্প শেষে আমরা ফাইভজি পেয়ে যাব। আসলে তা নয়, আমাদের বিদ্যমান যে অবকাঠামো আছে সেই টুজি, থ্রিজির উন্নয়নে কিছু কাজ করা হবে।
আর সামনে যেহেতু ফাইভজিতে যাওয়ার টার্গেট আছে, ফাইভজির প্রস্তুতি হিসেবে আমরা কিছু ইকুইপমেন্ট বসাবো। ঢাকার ২০০ জায়গায় ফাইভজি চালু করার জন্য ভিন্ন প্রকল্প প্রস্তাব পেয়েছে। সেটা প্রসেস করছি। সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আমরা ফাইভজি পাব।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির উদ্যোগ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ নিলেও বাস্তবায়ন করবে টেলিটক বাংলাদেশ। যা বাস্তবায়নে প্রায় পুরো অর্থই জোগান দেয়া হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। মাত্র ৬০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা দেবে টেলিটক। চলতি বছরে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এর বাস্তবায়ন কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় নতুন তিন হাজার বিটিএস সাইট তৈরি, রুম, টাওয়ার, লক ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও টেলিটকের নিজস্ব ৫০০ টাওয়ার ও দুই হাজার ৫০০ টাওয়ার শেয়ারিং সাইট প্রস্তুত করা হবে। আর সেবা সক্ষমতা বাড়াতে থ্রিজি ও ফোরজির বিদ্যমান দুই হাজার সাইটের যন্ত্রপাতির ধারণক্ষমতা বাড়ানো হবে। ফিক্সড ওয়্যারলেস এক্সেস (এফডব্লিউএ) প্রযুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে ঢাকার বাইরে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিস-আদালতে ইন্টারনেট সেবা বাড়াতে পাঁচ হাজার এফডব্লিউএ ডিভাইস স্থাপন করা হবে
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৯৩৭
আপনার মতামত জানানঃ