বিমানঘাঁটিতে জোড়া বিস্ফোরণের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের সন্দেহজনক দুই ড্রোন দেখা গেল ভারতশাসিত কাশ্মিরের জম্মুতে। এবার ভারতীয় বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে ড্রোন ব্যবহার করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনো ধরনের হামলা বা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটানোর আগেই সেগুলোর অবস্থান শনাক্ত করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। পরে অবশ্য ড্রোন ভূপাতিত করতে গুলিবর্ষণ করা হলেও সেগুলো পালিয়ে যায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, কাশ্মিরের জম্মু-পাঠানকোট জাতীয় সড়ক সংলগ্ন কালুচক পুরমণ্ডল রোডে অবস্থিত ভারতীয় সামরিক ঘাঁটির আকাশে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রথমে একটি ড্রোনকে চক্কর দিতে দেখা যায়। মারাত্মক কিছু ঘটে যাওয়ার আগেই বিষয়টি বুঝতে পেরে টহলরত সেনা সদস্যরা সতর্ক হয়ে যান। ড্রোনটিকে নিষ্ক্রিয় ও ভূপাতিত করতে গুলি চালান তারা। এরপরই অন্ধকারে মিশে যায় ড্রোনটি।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ড্রোন দু’টিকে লক্ষ্য করে ২০ থেকে ২৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করা হয়। কিন্তু সোমবার সকাল পর্যন্ত দু’টি ড্রোনের একটিরও কোনো হদিশ পায়নি সেনাবাহিনী। এরপর সামরিক এলাকা থেকে শুরু করে আশেপাশের এলাকায় শুরু হয়েছে তল্লাশি।
এর আগে শনিবার মাঝরাতে জোড়া আইইডি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পাকিস্তান সীমান্ত থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জম্মু বিমানবন্দর। হামলায় ২ সেনা আহত হন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশটির বিমান বাহিনীর প্রযুক্তি বিভাগ সংলগ্ন একটি ভবন। একে জঙ্গি হামলাই বলছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এর দায় না-নিলেও, জাতীয় তদন্তকারী দলের একটির সূত্রের দাবি, এই কোয়াড-হেক্সাকপ্টার চিনা ড্রোন দিয়ে হামলা হয়েছে পাকিস্তানের দিক থেকেই।
আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া
এদিকে নতুন একটি আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্লেসেতস্ক উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সোমবার (২৮ জুন) এক প্রতিবেদনে একথা জানিয়েছে দেশটির বার্তাসংস্থা তাস। চলতি জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে নতুন এই আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয় বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।
সর্বশেষ উৎক্ষেপণ করা এই ব্যালিস্টিক মিসাইলটি তৈরি করেছে মস্কো ইনস্টিটিউট অব থার্মাল টেকনোলজি। অবশ্য এখনও পর্যন্ত তাসের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি প্রতিষ্ঠানটির কোনো কর্মকর্তা।
ইতোপূর্বে রাশিয়ার তপল, তপল-এম, ইয়ারস এবং বুলাভা নামক আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রগুলোও তৈরি করেছিল মস্কো ইনস্টিটিউট অব থার্মাল টেকনোলজি। চলতি বছরের ১৩ মে সংস্থাটি তার ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করে।
আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা আইসিবিএম হলো রকেট চালিত ক্ষেপণাস্ত্র। নামেই বোঝা যায়- এই ক্ষেপণাস্ত্রটি এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে গিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
নির্দিষ্ট লঞ্চারের মাধ্যমে নিক্ষেপের পর ভূপৃষ্ঠ থেকে তা উঠে যায় মহাকাশে। এরপর ক্ষেপণাস্ত্রটি আবার বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে লক্ষ্যবস্তুর দিকে নেমে আসে। এতে পারমাণবিক বা রাসায়নিক ওয়ারহেড যুক্ত করা হয়ে থাকে।
নিক্ষেপ করার পর ক্ষেপণাস্ত্রটি সোজা ওপরের দিকে উঠতে শুরু করে। দুই থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যায় মহাশূন্যে। এতে একাধিক রকেট যুক্ত করা যায়। প্রথম রকেটের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে তা মূল ক্ষেপণাস্ত্র থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং দ্বিতীয় রকেটটি জ্বলতে শুরু করে। এভাবে একটি আইসিবএমে সর্বোচ্চ তিনটি রকেট যুক্ত করা যায়।
মহাশূন্যে পৌঁছে মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অল্প সময়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ক্ষেপণাস্ত্রটি। এরপর আবার তা বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে এবং লক্ষ্যবস্তুতে বা টার্গেটের ওপর নেমে আসতে শুরু করে। আর এভাবেই নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত করে আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৬২৯
আপনার মতামত জানানঃ