ভারতের বিহার রাজ্যে চলমান বিধানসভার নির্বাচনেও অন্যতম প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই ‘বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী’। নির্বাচনী প্রচারণায় ইস্যুটিকে হাতিয়ার করেই ভোট চাইছেন বিজেপি তথা এনডিএ জোটের নেতারা।
রাজ্যে ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে ছুড়ে ফেলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত বুধবার ভোট চেয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। অবশ্য এর কিছুক্ষণ পরেই এনডিএ জোটের অন্যতম শরিক দল জনতা দল ইউনাইটেড দলের প্রধান ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার তোপ দেগে বলেন, ‘ফালতু কথা, কোনো ভারতীয় নাগরিককে ছুড়ে ফেলার ক্ষমতা কারো নেই।’ শীর্ষ নিউজ।
আগামীকাল ৭ নভেম্বর রাজ্যটির তৃতীয় দফায় ৭৮ বিধানসভা আসনে ভোট নেয়া হবে। ভোট গণনা হবে আগামী ১০ নভেম্বর। তার আগে বুধবার রাজ্যটির পূর্ণিয়া, কাটিয়ার, কিষানগঞ্জ ও আরিয়া জেলায় নির্বাচনী প্রচারণায় এসে বিজেপি এবং এনডিএ জোটের শরিক দলের নেতাদেরও জেতানোর আহ্বান জানান যোগী।
কাটিয়ারে বিজেপির তিনবারের এমএলএ তার কিশোর প্রসাদের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় উপস্থিত হয়ে যোগী বলেন, ‘‘আমি শুনেছি কাটিয়ার ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ‘বাংলা অনুপ্রবেশকারী’ সমস্যা প্রচুর। মানুষ এই বিষয়টি নিয়ে খুবই ক্ষুব্ধ। অনুপ্রবেশকারী সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজার জন্য কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার একটি নীতি গ্রহণ করেছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) আওতায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। কিন্তু কোনো অবৈধ অনুপ্রবেশকারী যদি দেশের নিরাপত্তা বিঘিœত করার চেষ্টা করে তবে তাদের দেশ থেকে ছুড়ে ফেলা হবে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিয়ে যারা বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করবে তাদের কোনো মতেই রেয়াত করা হবে না।’’
যোগীর ওই মন্তব্যের পরেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেছেন এনডিএ জোটের অন্যতম শরিক দল জেডিইউ প্রধান ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। যোগীর বক্তব্যকে ‘ফালতু কথা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। যোগীর সভার পরই কিষানগঞ্জে এক নির্বাচনী প্রচারণা থেকে নীতিশ কুমার বলেন ‘কিছু মানুষ অপপ্রচার চালাচ্ছে। কে কাকে দেশছাড়া করবে? ভারতে বসবাসকারী কোনো নাগরিককেই ছুড়ে ফেলার কোনো ক্ষমতা কারো নেই। আমরা সবসময়ই সম্প্রীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছি, যাতে প্রত্যেকে একসাথে বসবাস করতে পারে।’
অন্য দিকে, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনেও অনুপ্রবেশ ও সিএএ ইস্যু যে প্রভাব ফেলতে চলেছে তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। তার অভিমত, বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারÑ উভয়েরই লক্ষ্য রাজ্যে উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধান করা। আর তাই নির্বাচনের আগে নতুন নাগরিকত্ব আইন বাস্তবায়ন করাটাই তাদের প্রথম অগ্রাধিকার। গত বুধবারই তিনি বলেন ‘আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার একটা মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সিএএ পাস করেছেÑ তা হলো প্রতিবেশী দেশগুলোতে নির্যাতনের শিকার হওয়া সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেয়া। কিন্তু এই আইনের বিরুদ্ধে আদালতে কয়েকটি মামলা করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী যে, করোনা প্যানডেমিক পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক হয়ে আসবে, তখন এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বাংলায় বিধানসভার নির্বাচনের আগেই সিএএ বাস্তবায়নের ব্যাপারে আমরা বেশি জোর দেয়ার চেষ্টা করব।’
Available for everyone, funded by readers. Every contribution, however big or small, makes a real difference for our future. Support to State Watch a little amount. Thank you.
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ