ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত করোনায় হয়েছেন ২ লাখ ৫৯ হাজার ১৭০ জন। মৃত্যু হয়েছেন ১ হাজার ৭৬১ জনের এবং সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৬১ জন।
ভারতে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে বিপদজনক গতিতে। ধ্বসে পড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের এই দেশটি। এর উপর দেশটিতে করোনার ডাবল মিউটেন্ট স্ট্রেইন শনাক্ত হওয়ায় নতুন করে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে পুরো দেশ জুড়ে। দেশটির ১০টি রাজ্যে করোনার ডাবল মিউটেন্ট স্ট্রেইন শনাক্ত হয়েছ। এই ধরনটি এখন ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশেও শনাক্ত করা হয়েছে। ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যে আশংকাজনক হারে বেড়ে গেছে, তার পেছনে এই নতুন ধরনটি দায়ী কি না, তা নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। পাশাপাশি এটি করোনা ভাইরাসের অন্য ধরনগুলোর চেয়ে অনেক বেশি হারে ছড়াচ্ছে কি না এবং এটি প্রতিরোধে টিকা আদৌ কাজ করছে কি না তা বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখছেন।
ডাবল মিউটেন্ট করোনা ভাইরাস কী?
একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে সহজে সংক্রমিত হতেই করোনা ভাইরাসও খুব অল্প অল্প করে বদলাতে থাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই মিউটেশনের কোন প্রভাব পড়ে না! ভাইরাসটির আচরণে। কিন্তু কিছু মিউটেশনের কারণে ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিনে পরিবর্তন ঘটে। স্পাইক প্রোটিন মানবদেহের কোষের সঙ্গে ভাইরাসটি আটকে থাকতে এবং ভেতরে ঢুকতে ব্যবহার করে। ভাইরাসের মধ্যে যখন স্পাইক প্রোটিনে মিউটেশন ঘটে, তখন এর সংক্রমণ ঘটানোর ক্ষমতা সম্ভবত বেড়ে যায়। এ ধরনের ভাইরাসে মানুষ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং এটি প্রতিরোধে টিকা আর কাজ করে না।
ভারতে শনাক্ত যে প্রজাতির ডাবল মিউটেন্ট করোনা ভাইরাস রয়েছে, তাতে দুটি প্রজাতির করোনা ভাইরাসের মিশ্রণ আছে। একদিকে ই৪৮৪কিউ ও এল৪২৪আর ভাইরাস এর মিশ্রণে তৈরি হয়েছে এই তৃতীয় প্রজাতিটি।
ভাইরোলজিস্ট শহিদ জামিল ব্যাখ্যা করে বলছেন, ডাবল মিউটেশন মানে হলো, কোন একটা ভাইরাসে একই সঙ্গে দুইটি মিউটেশন বা পরিবর্তন করার ক্ষমতা রয়েছে।
”ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে দুইটি মিউটেশন থাকার মানে হলো, সেটি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয় এবং ভাইরাসকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। ফলে এটি আরও বেশি সংক্রামক হয়ে ওঠে,” বলছেন তিনি।
ড. শহিদ জামিল ধারণা করেন, ভারতে হয়তো দুইটি ভাইরাসের আলাদা ধরনের একটি যোগসূত্র তৈরি হয়েছে।
কোন কোন রাজ্যে ছড়াচ্ছে এই স্ট্রেইন?
ভারতে ডাবল মিউটেন্ট স্ট্রেইট সংক্রমিত হয়েছে ১০টি রাজ্যে। যার মধ্যে বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে।। এ ছাড়া তালিকায় রয়েছে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাত, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলি।
পাঞ্জাবে করোনার নতুন ঢেউয়ে যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ৮০ শতাংশের শরীরে পাওয়া গিয়েছে ব্রিটেনের করোনা স্ট্রেইন। কিন্তু মহারাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণে নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। হিসাব অনুসারে, ৬০ শতাংশ আক্রান্তই দুই ভাইরাসের প্রজাতি থেকে তৈরি তৃতীয় ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন।
দেশের ১৮টি রাজ্যের ৭০ থেকে ৮০ জেলায় ব্রিটেনের করোনা প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সেই তুলনায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের প্রজাতি অপেক্ষাকৃত কম দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, কোথাও নতুন প্রজাতির করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে, সেই তথ্য সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হচ্ছে। সেই অনুসারে রাজ্য সরকারগুলি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
এ বছর মার্চের শেষের দিকে, ভারতের জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (এনসিডিসি) নতুন ‘ডাবল মিউটেন্ট’ সম্পর্কে তথ্য দেয়। যা মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং পাঞ্জাব থেকে নেওয়া নমুনাগুলিতে এই রূপটি চিহ্নিত করা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক বলছে যে এই নতুন ডাবল মিউটেন্ট বিশাল পরিমাণে বেড়ে চলেছে। যার ফলে সারা দেশে সংক্রমণের ঘটনা বাড়ছে। লকডাউনের পর বিবাহ, সিনেমা হল এবং জিমের পাশাপাশি যেসব রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলছে সেখানে লোকজন জড়ো হওয়ার কারণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় রাজনৈতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর ফলে সংক্রামিত হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে।
ছড়িয়ে পড়ছে ইউরোপেও
সম্প্রতি ডেনমার্ক ও নরওয়ের রোগীদের দেহে এ ধরনের ভাইরাসের উপস্থিতি গবেষকদের দৃষ্টিগোচর হয় এবং তাঁরা নড়েচড়ে বসেন। নতুন এই ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল এবং সংক্রমণের বিস্তারভেদে এর নাম দেওয়া হয় ‘দি ইন্ডিয়ান ডাবল মিউটেশন’। এ পর্যন্ত ডেনমার্কে ১১ জন, নরওয়েতে একজন, যুক্তরাজ্যে ৭৩ জন এবং স্কটল্যান্ডে চারজন রোগীর ব্যাপারে পাওয়া সুনির্দিষ্ট তথ্য থেকে জানা গেছে, এদের দেহে ইন্ডিয়ান ডাবল মিউটেশন কভিড-১৯-এর অস্তিত্ব রয়েছে।
যাদের দেহে ‘দি ইন্ডিয়ান ডাবল মিউটেশন’-এর অস্তিত্ব ধরা পড়েছে, তারা প্রত্যেকেই পরস্পরের কোনো না কোনোভাবে পরিচিত এবং যে দেশে (ভারতে) ভাইরাসটি সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হচ্ছে, সে দেশের সঙ্গেও তাদের যোগসূত্র ছিল। ভাইরাসটি তাদের মধ্যেও সংক্রমিত হতে সক্ষম বলে মনে করা হচ্ছে, যাদের এরই মধ্যে কভিড-১৯-এর টিকা দেওয়া হয়েছে বা এরই মধ্যে যাদের একবার কভিড-১৯ হয়েছে।
ডাবল মিউটেন্ট কি খুবই বিরল ঘটনা?
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসের সাতটি ধরনের ওপর তিনি গবেষণা করা ডঃ কামিলের মতে, ডাবল মিউটেশন বিরল কোন ব্যাপার নয়।
তিনি বলেন, একবারে একাধিক মিউটেশনের ঘটনা এখন বেশ ঘটছে, যদি আমরা কেবল স্পাইক জিনের বিষয়েও এটা সীমিত রাখি। গত বছর মহামারির শুরুতে বেশিরভাগ স্পাইক জিনে একটি মিউটেশনই চোখে পড়তো- ডি৬১৪জি। কিন্তু এই মিউটেশন এখন সব জায়গায় ছড়িয়ে গেছে, তার ওপর এখন যুক্ত হয়েছে অন্য মিউটেশন।
একটি ওপেন শেয়ারিং ডাটাবেজে ৪৩টি ভাইরাসের তালিকা আছে, যেগুলোর সবকটার মধ্যেই ভারতের ই৪৮৪কিউ এবং এল৪৫২আর মিউটেশন পাওয়া গেছে।
ডঃ কামিল জানান, মার্চ মাসে যুক্তরাজ্য থেকে সংগ্রহ করা একটি ভাইরাসের স্পাইকে নয়টি মিউটেশন দেখা গেছে। মিউটেশনের এই সংখ্যা অনেক বেশি।
কতটা বিপদজনক এই ডাবল মিউটেন্ট স্ট্রেইন?
ভারতের জিনোম বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসের তথাকথিত যে ‘ডাবল মিউটেন্ট ভেরিয়েন্ট’ চিহ্নিত করেছেন, সেটি নিয়ে নানা ধরনের উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, এই ডাবল মিউটেশনের কারণে ভাইরাসটি মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে। টিকা তখন অকার্যকর হয়ে যায়। যদি একটি ভাইরাস পরিবারের মধ্যে অনেক বেশি মিউটেশন ঘটে, তখন এটি ভিন্ন রকমের আচরণ করতে পারে, তখন ভাইরাসের এই নতুন ধরনটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ভাইরাসের স্পাইক জিনে যখন মিউটেশন ঘটে, তখন সেটি কিন্তু ভাইরাসটির সংক্রমণের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় অথবা মানবদেহের যে অ্যান্টিবডি ভাইরাসকে থামাতে পারে, সেটিকে অকার্যকর করে দেয়। এর মানে হচ্ছে কোন ভাইরাসের মিউটেশন যদি সঠিক পথে আগায়, তখন কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা কোন মানুষের শরীরে এটি নতুন করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, পুনরায় সংক্রমণের ফলে অসুস্থতার মাত্রা হবে অনেক মৃদু। তবে যদি ভাইরাসটি এভাবে দ্বিতীয়বার সংক্রমণের ক্ষমতা রাখে, তখন আসলে এটি হার্ড ইমিউনিটি ভেদ করতে পারবে। হার্ড ইমিউনিটি তখনই তৈরি হয় যখন কোন ভাইরাস বা রোগ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর, বা এই রোগের টিকা দেয়ার পর, বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে এটি প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি হয়।
ভাইরাস যদি হার্ড ইমিউনিটি ভেদ করে ছড়িয়ে পড়তে পারে, সেটা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষগুলোতে বিপদের মুখে ঠেলে দেবে। কারণ তখন এসব মানুষ আর হার্ড ইমিউনিটি থেকে কোন সুরক্ষা পাবেন না, তাদের কাছে সহজেই ভাইরাস পৌঁছে যাবে।
ভারতের এই ডাবল মিউটেন্ট ভাইরাস অন্য ভেরিয়েন্টের তুলনায় বেশি প্রাণঘাতী বা অনেক সহজে সংক্রমিত হয় এমন সম্ভাবনা কম। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে এ বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও বেশি তথ্য দরকার।
আলাজজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্বেগটি হ’ল যদি মিউটেশন স্পাইক প্রোটিনের আকার পরিবর্তন করে তবে অ্যান্টিবডি তার পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হবে না এবং কার্যকরভাবে ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হবে। ভারতে পাওয়া নতুন প্রজাতিটির দ্রুত জিনোম সিকোয়েন্স করে সেটির বিরুদ্ধে ভারতীয় প্রতিষেধক কতটা কার্যকর, তা খতিয়ে দেখার উপরে জোর দিতে চাইছেন গবেষকেরা।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট কতটা দায়ী?
ভারতে সোমবারের সর্বশেষ হিসেবে, আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ২ লাখ ৭৩ হাজার মানুষের নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মারা গেছে ১ হাজার ৬শ জনের বেশি। এটি একটি নতুন রেকর্ড।
গত ১৫ই এপ্রিল থেকে ভারতে প্রতিদিনই দুই লাখের বেশি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছে। দিল্লিতে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ মোড় নিয়েছে যে সেখানে এক সপ্তাহের লকডাউন জারি করা হয়েছে।
অথচ মাত্র গত মাসের শুরুতেই ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন বেশ আত্মবিশ্বাসের সুরেই যেন বলেছিলেন, কোভিড মহামারির শেষ দেখতে পাচ্ছে ভারত। এজন্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এর কৃতিত্ব দিয়ে বলেছিলেন, তার নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটা নজির সৃষ্টি করেছে।
কিন্তু ভারতের এই পরিস্থিতি মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানেই নাটকীয়ভাবে পাল্টে গেছে। এত দ্রুত যে পরিস্থিতির এত অবনতি ঘটলো, এর পেছনে ভারতে শনাক্ত হওয়া ডাবল মিউটেন্ট ভাইরাসটির অবদান কতটা?
হায়দ্রাবাদের সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজির (সিসিএমবি) পরিচালক ডঃ রাকেশ মিশ্র জানান, মহারাষ্ট্রে ডাবল ভেরিয়েন্টটি পাওয়া গেছে ২০ শতাংশ সংক্রমণের বেলায়। ভারতে মহারাষ্ট্রেই সংক্রমণের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
তিনি বলেন, এরকম একটা সন্দেহ করা হয় যে ভারতে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য হয়তো এই ভেরিয়েন্টই দায়ী। কিন্তু আমি বলবো, না। আমাদের সংগ্রহ করা নমুনার ৮০ শতাংশে কিন্তু এই মিউটেশন নেই। মহারাষ্ট্রে আমরা যে কয়েক হাজার নমুনা বিশ্লেষণ করেছি, তার মাত্র ২৩০টিতে কিন্তু এই ডাবল মিউটেশন পাওয়া গেছে।
ভারতের জন্য অনেক বেশি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাজ্যের কেন্ট ভেরিয়েন্ট। ব্রিটেনে এই ভাইরাসটিই সবচেয়ে বেশি ধরা পড়ছে এবং এটি ৫০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে গেছে। ভারতে ১০ হাজার ৭৮৭টি নমুনার ৭৩৬টিতে এই ভেরিয়েন্টটি পাওয়া গেছে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৫০৭
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ