চট্টগ্রাম শহরের কেন্দ্রে, প্রেসক্লাবের সামনে এক নারীর ওপর প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন আকাশ চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি, যিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী হিসেবে পরিচিত। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, আকাশ এক নারীকে সজোরে লাথি মারেন, ঘটনাস্থল ছিল চট্টগ্রাম ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির সামনের রাস্তায়। উপস্থিত পুলিশ সদস্যের সামনেই এই ঘটনা ঘটে, কিন্তু এখনো তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঘটনার সূত্রপাত গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ থেকে, যেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাসের প্রতিবাদ জানানো হচ্ছিল। অভিযোগ উঠেছে, ‘অ্যান্টি শাহবাগ মুভমেন্ট’ ব্যানারে একদল হামলাকারী হঠাৎ আক্রমণ চালায়। এতে গুরুতর আহত হন ছাত্র ফ্রন্ট ও ছাত্র কাউন্সিলের বেশ কয়েকজন নেতা, যার মধ্যে রয়েছেন রীপা মজুমদার, শ্রীকান্ত বিশ্বাস সিকু ও সুদীপ্ত গুহ।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আকাশ চৌধুরী হামলার সময় প্রেসক্লাবের পাশেই উপস্থিত ছিলেন এবং সুযোগ বুঝে পেছন থেকে আঘাত করেন। পুলিশ সদস্য কাছেই দাঁড়িয়ে থাকলেও তিনি আকাশকে থামাননি, যা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
আকাশের অতীত নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। এর আগেও তিনি এক ধর্মীয় সমাবেশে লাঠিপেটার ঘটনার মাধ্যমে আলোচনায় এসেছিলেন। স্থানীয়রা জানান, তিনি সাতকানিয়ার বাসিন্দা এবং জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সামাজিক মাধ্যমে তাদের একসঙ্গে তোলা একাধিক ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ঘটনার পর ছাত্রজোটের পক্ষ থেকে হামলার নিন্দা জানিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, পুলিশের সামনেই হামলা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চুপচাপ দেখেছে। গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সহসভাপতি এ্যানি চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, তাকে লক্ষ্য করেই আকাশ লাথি মেরেছেন এবং শিবিরপন্থী একটি দল পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার শিবিরের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক দাবি করেছেন, আকাশ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে তাদের সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন এবং তার আচরণের দায় সংগঠন নেবে না। তারা নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।
এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম। দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে, তবে আকাশ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ছাত্র জোটের পক্ষ থেকে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে। তারা বলছে, এই ধরনের সহিংসতা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ওপর সরাসরি আঘাত।
এই ঘটনা ফের প্রশ্ন তোলে, একটি ব্যক্তির বিরুদ্ধে এতগুলো অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে তিনি বারবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে পারেন? আর কতবার নির্যাতনের শিকার হতে হবে নাগরিকদের—এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সচেতন মহলে।
আপনি চাইলে আমি এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে একটি মতামতধর্মী কলাম বা সামাজিক প্রভাব নিয়ে বিশ্লেষণধর্মী লেখাও তৈরি করে দিতে পারি। বলুন, কীভাবে সাহায্য করতে পারি আরও?
আপনার মতামত জানানঃ