প্রতি বছর করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে জানিয়েছেন মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলবার্ট বোরলা। সম্প্রতি সিএনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা জানান বলে বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারে বোরলা বলেন, পুরোপুরোরি টিকার আওতায় আসতে ফাইজারের তৃতীয় ডোজ গ্রহণ করতে হবে। এটি এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এছাড়া এখন থেকে প্রতি বছর করোনার টিকা নিতে হতে পারে।
আলবার্ট বোরলা বলেন, পরিস্থিতি কী ঘটে তা দেখতে হবে, কতদিন পর্যন্ত এমনটি প্রয়োজন হতে পারে সেটিও দেখার আছে। করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে আমাদের ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ফাইজারের সিইও বলেন, কোথাও সম্ভবত একটি পরিস্থিতি তৈরি হলো সেখানে তৃতীয় ডোজ প্রয়োজন হলো, কোথাও ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে এটি হতে পারে। এরপর আবার সেখান থেকে টিকা দেয়া শুরু হলো। এমনও হতে পারে দীর্ঘদিন পর্যন্ত প্রতি বছর টিকা কার্যক্রম চালানোর প্রয়োজন হবে। তবে এসব ব্যাপারে ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া দরকার।
প্রাথমিক গবেষণা বলছে, মডার্না, ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকার কার্যকারিতা কমপক্ষে ছয় মাস পর্যন্ত থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা ছয় মাসের বেশি সময় পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে পারলেও করোনার নতুন নতুন ধরনের কারণে নিয়মিত বুস্টার ডোজ নেওয়া প্রয়োজন হতে পারে।
এদিকে রয়টার্সের খবরে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করছে। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার এমন তথ্য জানিয়েছেন। কংগ্রেস কমিটির বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কোভিড-১৯ রেসপন্স টাস্কফোর্সের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডেভিড কেসলার বলেছেন, টিকা নেওয়ার পর রোগ প্রতিরোধক্ষমতার স্থায়িত্ব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, টিকার বুস্টার ডোজ প্রয়োজন হতে পারে। তিনি বলেন, যাঁরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, তাঁদের প্রথমে টিকার এই বুস্টার ডোজ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস অব ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ট প্রিভেনশনের পরিচালক রোসে ওয়ালেনস্কি হাউস সাবকমিটিতে বলেন, টিকা নেওয়ার পরও যাঁরা করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে টিকাদান কার্যক্রম। প্রথম ডোজ শেষ হয়ে কোথাও কোথাও চলছে দ্বিতীয় ডোজের প্রয়োগ। দুই ডোজ নেয়ার পরও টিকাগ্রহণকারী কতদিন সুরক্ষিত থাকবেন তা নিয়ে অবশ্য এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি গবেষকরা। গবেষকরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষেণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অপেক্ষায় আছেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে টিকার সুরক্ষা নিয়ে গবেষণার বরাত দিয়ে ফাইজার ও বায়োএনটেক জানায়, তাদের টিকার কার্যকারিতা ৯১ শতাংশের বেশি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এটি ৯৫ শতাংশের ওপরও সুরক্ষা দিতে পারে। দুই ডোজ টিকা গ্রহণের পর যে কেউ ছয় মাসের বেশি সুরক্ষিত থাকতে পারবেন। এরপর কী ঘটতে পারে গবেষকরা স্পষ্ট করে কিছু জানাচ্ছেন না এখনও।
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ