অপহরণ ও হত্যার পর মামুনের লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়ার অভিযোগে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা হয়। মামলার ৬ বছর পর সেই মামুন বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালত হাজির হন। এতে আদালতপাড়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। মামুন ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে।
অথচ পুলিশ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই অপহৃতকে হত্যার পর লাশ গুম করে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়া হয়। আর সিআইডি চার্জশিটে মামুনকে অপহরণের কথা বলা হয়েছে। এসব কারণে ৪ বছর ধরে মামলার আসামি হয়ে বিভিন্ন সময়ে কারাভোগ ও রিমান্ডের শিকার হয়েছেন খালাতো বোনসহ ৬ জন। মামলাটির বিচারকাজও সম্পন্নের পথে ছিল। তবে মামুন দ্রুত আদালতপাড়া ত্যাগ করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১০ মে মামুন অপহরণ হয়েছে অভিযোগ এনে ২০১৬ সালের ৯ মে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন তার বাবা আবুল কালাম। মামলায় ৬ জনকে আসামি করা হয়। তারা হল- তাসলিমা, রকমত, রফিক, সাগর, সাত্তার ও সোহেল। মামলার পর পুলিশ অভিযুক্ত ৬ জনকেই গ্রেফতার করে।
ওই মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে পুলিশ। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান। তিনি আদালতে আসামিদের রিমান্ড চাওয়ার সময়ে আর্জিতে উল্লেখ করেন, ‘খালাতো বোন তাসলিমা ২০১৪ সালের ১০ মে মামুনকে ডেকে নিয়ে কৌশলে অপহরণ করে বিষাক্ত শরবত পান করিয়ে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দিয়ে গুম করেছে।’ পরে মামলাটি তদন্ত করে সিআইডি। নারায়ণগঞ্জ সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, ২০১৪ সালের ১০ মে খালাতো বোন তাসলিমাকে দিয়ে কৌশলে মামুনকে বাড়ি ডেকে আনা হয়। পরবর্তীতে মামুনকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তাসলিমা। কিন্তু বিয়েতে রাজি না হওয়ায় আসামিরা মিলে মামুনকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে অটোরিকশায় অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন সোহেল জানান, ফতুল্লা থানায় তাদের রিমান্ডে নেয়া হয়। ফৌজদারি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়। তৎকালীন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করে রক্তাক্ত করেন। কিন্তু জবানবন্দি আদায় করতে পারেননি। পরে তারা জামিন পান।
আপনার মতামত জানানঃ