দেশে করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় সরকারের দেওয়া নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বইমেলা চলবে বলে জানিয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। রোববার (৪ এপ্রিল) সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন নাহার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অমর একুশে বইমেলা ২০২১ এর কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জারি করা বিধান এবং স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ ও জনসমাবেশের ঝুঁকিপূর্ণ যেকোনো কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়।
বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এই মেলাকে শিল্প-কারখানা খোলা রাখার সাথে তুলনা করছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউন ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের সরকার। এই সময় সকল প্রকার পরিবহন, জরুরি সেবা ছাড়া অফিস, শপিংমল ইত্যাদি বন্ধ থাকবে।
করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে সারা দেশ ‘লকডাউন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামীকাল সোমবার আপাতত সাত দিনের জন্য অবরুদ্ধ অবস্থা শুরু হবে। ৫ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১১টা পর্যন্ত চলাচল ও কাজে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আজ সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
বইমেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেছেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, লকডাউনের মধ্যেও দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে। সরকারের সিদ্ধান্ত, মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা সেটা কার্যকর করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই বইমেলা খোলা রাখার চেষ্টা করছি। যেভাবে সরকার গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি ও অন্য শিল্প-কারখানা খোলা রাখছেন, সেইভাবে বইমেলা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত সরকারই নিয়েছে। আমরা শুধু সেটা এক্সিকিউট করছি।’
কিন্তু যেখানে লকডাউন চলার সময় ভোর ৬টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত সবাইকে ঘরের ভেতর থাকার জন্য বলা হয়েছে, সেখানে বইমেলা খোলা থাকলেও বইমেলায় মানুষ কীভাবে আসবে জানতে চাইলে, বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক বলছেন, ‘সেটা তো আমার পক্ষে বলা মুশকিল। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবং মন্ত্রণালয় ও সরকারের সিদ্ধান্ত, ১২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে।’
প্রকাশনা জগতের বিক্রি-বেচার সবচেয়ে বড় অংশটি এই বইমেলাকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বইমেলা খোলা রাখার বিষয়ে প্রকাশকদের তরফ থেকে চাপ রয়েছে। এই কারণে লকডাউন থাকলেও বইমেলা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এরআগে, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ৩১ মার্চ বইমেলার সময়সূচিতে একবার পরিবর্তন আনা হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, ছুটির দিন ছাড়া অন্যান্য দিন বইমেলা শুরু হবে বেলা ৩টায়। শেষ হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে। আর ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে।
করোনার কারণে এবার বইমেলা পিছিয়ে ১৮ মার্চ থেকে শুরু হয়। আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত মেলা চলবে। এবারের মেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট ৫৪০টি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫৪টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৮০টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মেলা আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৭০০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ