পরমাণু ইস্যুতে আলোচনায় বসলে ধীরে ধীরে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে শনিবার দেশটির সরকারের ওই অবস্থান জানানো হয়।
ইরানের বক্তব্য
মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ইরান বলেছে, আলোচনায় বসতে চাইলে আগেই যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা একসঙ্গে প্রত্যাহার করতে হবে।
শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান আলী আকবর সালেহি বলেছেন, তার দেশের পরমাণু সমঝোতা নিয়ে পাশ্চাত্যের সঙ্গে সৃষ্ট অচলাবস্থা কেটে যেতে শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন, পরমাণু সমঝোতা নিয়ে আলোচনা টেকনিক্যাল পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এর অর্থ হচ্ছে— প্রাথমিক অচলাবস্থা কেটে গেছে, যা ‘আশার আলো’ দেখাচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে ভিয়েনায় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএর সদর দপ্তরে টেকনিক্যাল আলোচনা শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালে সম্পাদিত পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসবে কিনা, তা নিয়ে এই কমিশনের একটি ভার্চুয়াল বৈঠক শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ইরানের সঙ্গে চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানির প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। আর এতে সভাপতিত্ব করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ।
ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি সরকারের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠকে বলেছেন, আমেরিকা যেমন কোনো রকমের আলোচনা ছাড়াই ২০১৮ সালে তেহরানের বিরুদ্ধে অবৈধ ও একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তেমনি এখন আলোচনা ছাড়াই তা প্রত্যাহার করতে হবে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা ছাড়া আমেরিকার সঙ্গে তেহরানের কোনো রকমের আলোচনা হবে না।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পরমাণু সমঝোতা বিষয়ক যৌথ কমিশনের বিবৃতির ব্যাপারে ইরানের প্রতিক্রিয়া থেকে দুটি বিষয় উঠে এসেছে যা কিনা পরমাণু সমঝোতাকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত, পরমাণু সমঝোতার গঠন কাঠামো অনুযায়ী ইরান তার অধিকারের ব্যাপারে কোনো ছাড় দেবে না। কেননা এটি একটি বহুপক্ষীয় আন্তর্জাতিক চুক্তি যার প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, বর্তমান অচলাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ইরান যৌক্তিক সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
আমেরিকার অবস্থান
২০১৮ সালের মে মাসে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকা বের করে হয়ে আসে এবং তেহরানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
এদিকে, নতুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন পরমাণু সমঝোতা নিয়ে ইরানকে শর্ত দিয়েছেন। দাবি করেছেন, ইরানের পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে তেহরান যদি নিজের সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে, তা হলে আমেরিকাও এ সমঝোতায় ফিরে আসবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একই মনোভাব পোষণ করেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরান পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি মেনে চললে আমেরিকা তার মিত্রদের নিয়ে তেহরানের সঙ্গে আরও দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে পৌঁছার চেষ্টা করবে, যেখানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিসহ আরও কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ