বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে বিএনপির কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, তিনি বলেন, গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে হেফাজতি তাণ্ডব। এ তাণ্ডবে বিএনপি ইন্ধন দিয়েছে, তাদের কর্মসূচি পালনে সমর্থন দিয়েছে বলে দাবি করছেন সরকারের মন্ত্রীসহ অনেকে।
আমি স্পষ্ট বলতে চাই, হেফাজত সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে অবৈধ সরকারের পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে গতকাল ও আজ আমরা কর্মসূচি পালন করেছি। আমাদের হিসেবে গত কয়েকদিনে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) বিকেল ৪টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ দাবি করেন তিনি।
হেফাজতের কর্মসূচিকে সমর্থন করে বিএনপি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেনি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই যে মানুষের উপর আঘাত এসেছে, আমরা তার প্রতিবাদ করেছি।
হেফাজত কোনও রাজনৈতিক সংগঠন নয়। তারা বায়তুল মোকাররমে সাধারণ একটি বিক্ষোভ করতে চেয়েছিলো। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও পুলিশ তাদের উপর দুই দিক থেকে হামলা চালিয়েছে। হেফাজতের কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের এক নেতা গুলি করছে, সেই ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশও হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়নের কোনও লক্ষণ দেখছি না। সরকারের উদ্যোগটা কোথায়? সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ থাকবে, সেটি কোথায়?
মির্জা ফখরুল বলেন, করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, আমাদের অনেক নেতাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। অল্পবয়সীরাও আক্রান্ত হচ্ছে। ঠিকমতো করোনার পরীক্ষা হচ্ছে না। আমার ধারণা ১০ শতাংশও করোনা টেস্ট হচ্ছে না। সরকার কখনই করোনার বিষয়টি সঠিকভাবে উপলব্ধি করেনি। সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসবের আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সতর্ক করা হয়েছিল, অবিলম্বে এসব অনুষ্ঠান বন্ধ করা দরকার। কিন্তু সরকার গত বছর মার্চেও উৎসব পালন বন্ধ করেনি, এবারও তারা উৎসব পালন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ।
এদিকে সোমবার (২৯ মার্চ) খুলনায় বিএনপির সমাবেশে পুলিশ লাঠিচার্জ চালিয়েছে। সমাবেশের আগেই ব্যাপক লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয় নেতা কর্মীদের। এতে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।
বিএনপি নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়ার সময় পুলিশ নেতা কর্মীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এতে জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন পর্যায়ের অর্ধ শতাধিক নেতা কর্মী আহত হন।
বিএনপি নেতারা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর ১২টার দিকে তারা নগরীর কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরু করেন। এরপরই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে তাদের অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মহান স্বাধীনতা দিবসে দেশের কয়েকটি স্থানে শান্তিপুর্ণ মিছিলে পুলিশ এবং সরকারি দলের তান্ডব ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার বেলা সকাল সোয়া ১১টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দলীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল ১১ টার দিকে নেতা কর্মীরা জড়ো হতে শুরু করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এসময় নেতা কর্মীরা বড়বাজার, ডাকবাংলোসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো সরে যান।
প্রেসব্রিফিংয়ে নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেছেন, বিনা উস্কানীতে পুলিশ অতর্কিতভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক লাঠিচার্জ করেছে। এতে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী রক্তাক্ত জখম হয়েছে। শান্তির শহর খুলনাতে গণতন্ত্রকামী নিরীহ নেতাকর্মীদের ওপর বিনা উস্কানীতে অতর্কিত লাঠিচার্জ গণতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। সরকার যে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে এবং পুলিশই সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে, তা আরো একবার প্রমাণ হলো।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জনতার আদালতে আওয়ামী লীগের বিচার হবে। আর এক মুহুর্ত এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২০১৩
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ