হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছেন হরতাল-সমর্থকরা। এ সময় স্থানীয় প্রেসক্লাবে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাণ্ডবের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামগামী ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দক্ষিণ পৈরতলা এলাকায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা ও ভাঙচুর করেছে হেফাজতে ইসলামের কর্মী সমর্থকরা। ইটপাটকেলের আঘাতে ট্রেনের ভেতরে থাকা অন্তত ১০ যাত্রী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
হরতালকে কেন্দ্র করে সেখানে বন্ধ রয়েছে দোকান পাটসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও আঞ্চলিক ও মহাসড়কে ছোট-বড় এবং দূর-পাল্লার সকল যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল ৯টা ২০ মিনিট থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা ও ঢাকা-সিলেট রেলপথ বন্ধ রয়েছে। ঢাকা-সিলেট, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের কমপক্ষে ৪০টি জায়গায় টায়ারে আগুন দিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দেয়া হয়। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি, কাঠের গুঁড়ি ও ইট ফেলে সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়েছে।
এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব ভাঙচুর, কালীবাড়ি মন্দিরের প্রতিমা, ব্যাংক এশিয়ার ফটকে ভাঙচুর, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন ভাঙচুর করেছেন হামলাকারীরা। হরতাল সমর্থকরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামির ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
রেল সুত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামমুখী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে আছে নরসিংদীর আমিরগঞ্জে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পথে যাওয়া তিতাস কমিউটার ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে নরসিংদীর ঝিনারদিতে। নোয়াখালী থেকে ঢাকার পথে আসা উপকূল এক্সপ্রেস আটকে রয়েছে আখাউড়ায়। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বসে আছে। সিলেট থেকে ঢাকামুখী কালনী এক্সপ্রেস বসে আছে হবিগঞ্জের আজমপুরে। চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহের পথে চলাচলকারী বিজয় এক্সপ্রেস কুমিল্লায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া মেইল ট্রেন কর্ণফুলী এক্সপ্রেস আটকে রয়েছে নরসিংদী স্টেশনে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ড. সৌকত হোসেন বিবিসিকে বলেন, আজ হরতাল চলাকালে যে সংঘর্ষ হয়েছে সেখান থেকে দুজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই তারা মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিজিবি, পুলিশ, এবিপিএনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল দিচ্ছে।
বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতা করে ধারাবাহিক বিক্ষোভের পর আজ হরতাল পালন করছে হেফাজতে ইসলাম। হরতালে নানা জায়গায় অবরোধ ও সংঘাতের ঘটনা ঘটলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই সহিংসতার ঘটনা ঘটছে সবচেয়ে বেশি।
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ