গরিব দেশগুলোর জন্য বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার কাছে এক কোটি করোনা টিকা চেয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস। শুক্রবার (২৬ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে এই টিকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, জাতিসংঘের সহায়তায় কোভ্যাক্স প্রকল্পের মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলোতে টিকা কর্মসূচি চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, ‘চলতি বছরের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে সব দেশে যেন টিকা প্রদাণ শুরু হয় তা নিশ্চিত করতে সব দেশেকে একসঙ্গে কাজ করার জন্য শুরুতেই আমি আহ্বান জানিয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘এখন আর মাত্র ১৫ দিন আছে সেই সময়সীমার। কিন্তু ৩৬টি দেশ এখনো কাউকে টিকা দিতে পারেনি, এমনকি তাদের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকেও। এই ৩৬ দেশের মধ্যে ১৬ দেশে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে টিকা দেয়ার কথা রয়েছে। তবে ২০ দেশের জন্য কোনো টিকা বরাদ্দ নেই।’
তেদ্রোস বলেন, ‘এ অবস্থায় কোভ্যাক্স প্রকল্পের জন্য জরুরি ভিত্তিতে এক কোটি টিকা প্রয়োজন যেন ওইসব দেশ আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্কদের টিকা দিতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘টিকা সরবরাহের জন্য কোভ্যাক্স প্রস্তুত, কিন্তু আমাদের টিকা নেই। এক কোটি টিকাও বর্তমানে যথেষ্ট নয়, তবে এটি হলেও অন্তত শুরু করা যায়।’
করোনা টিকা ক্রয়ের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্স প্রকল্পে এর আগে তহবিল যোগানের ঘোষণা দেয় ইউরোপীয়ান কমিশন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইউরোপীয় কমিশন জানায়, তারা ডব্লিউএইচও’র টিকা প্রকল্পে ৪০০ মিলিয়ন ইউরো (৪৭৮ মিলিয়ন ডলার) তহবিল বরাদ্দ করবে।
তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস সেসময় বলেন, ‘কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিতে জার্মানি যোগ দিয়েছে এবং আমরা ইইউ সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। জোট হিসেবে ইইউ সদস্যদের যোগদানের সম্ভাবনাটিও যাচাই করছি আমরা।’
এদিকে আগামী জুন মাসের আগে কোভ্যাক্স থেকে ১ কোটি ৯ লাখ ৮ হাজার টিকা পাবে বাংলাদেশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, জুনের আগে সবচেয়ে বেশি টিকা যে দেশগুলো পাবে, তার মধ্যে বাংলাদেশ আছে ৪ নম্বরে। এ ছাড়া অন্যদেশগুলো হলো নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও ব্রাজিল। আর আগামী মে মাসের শেষ নাগাদ বিশ্বের ১৪২টি দেশে ২৩ কোটি ৮২ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করা হবে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এক পর্যায়ে উৎপত্তিস্থল চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে আশার কথা হচ্ছে, এরইমধ্যে করোনার একাধিক টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারস-এর তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা তিন কোটি আট লাখ ৫৩ হাজার ৩২। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৬১ হাজার ১৪২ জনের।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৪৩০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ