বিশেষ প্রতিবেদক: সময়ের সাথে সাথে এখন সবকিছুই জুড়ে গেছে প্রযুক্তির সাথে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, অফিসের কার্যক্রমসহ সবই চলছে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে। ব্যতিক্রম নয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাও। ব্যস্ততম নগরীর জীবনকে প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে কাজ করছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশেষ করে করোনাকালে লকডাউনের সময়ে ঘরবন্দি মানুষের দ্বারে দ্বারে খাবার, ওষুধ, খাদ্যসামগ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিয়ে আস্থা অর্জন করেছে এই খাত। বিগত অর্ধযুগ ধরে ই-কমার্স যতটা প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল, করোনায় ছাড়িয়ে গেছে সেটাকেও। এছাড়া মানুষকে অভ্যস্ত করে তুলেছে অনলাইন কেনাকাটায়। এর সুফল পাচ্ছে ই-কমার্স খাত। গ্রাহক বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন নতুন প্রতিষ্ঠানও যুক্ত হচ্ছে অনলাইন ব্যবসায়।
ই-কমার্স বলতে আমরা কি বুঝি?
সহজ ভাষায় ই-কমার্স অর্থ হচ্ছে ইলেকট্রনিক কমার্স। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যখন ব্যবসা করা হয় তখন সেটা ই-কমার্স নামে পরিচিত হয়। আমাদের দেশে ই-কমার্সের সূচনা নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে, যখন ইন্টারনেট জনসাধারণের হাতে পৌঁছে। এটা বিভিন্ন ভাবে গড়ে উঠতে পারে, যেমন- দু’টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে (বি-টু-বি), বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে (বি-টু-জি), বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং ক্রেতার মাঝে (বি-টু-সি), এমনকি ক্রেতা এবং ক্রেতার মাঝেও (সি-টু-সি) এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক হতে পারে।
বাংলাদেশে বি-টু-বি এর প্রচলন সবচেয়ে বেশি। এর কারণ হচ্ছে আমাদের গার্মেন্টস সেক্টর। তৈরি পোশাক শিল্পের ক্রেতাগণ সাধারণত ইন্টারনেটের মাধ্যমেই বিক্রেতার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে এবং কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করে থাকে।
মানুষ কেন ই-কমার্স এ ঝুঁকছে
বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসাটি নতুন। সম্ভবত ২০১০ সালের দিকে বাংলাদেশে চালু হয় ই-কমার্স এর ধারনা। এরপর থেকে বাংলাদেশে ই-কমার্স দিনের পর দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তবে বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় ই-কমার্সে বেশ পিছিয়ে। যেখানে উন্নত দেশগুলোর মানুষ অনলাইন শপিং-এর উপরেই বেশী নির্ভরশীল আর সেখানে আমরা সবেমাত্র অনলাইনে শপিং করা শুরু করেছি। তবে আশার কথা হল বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে বেশ কিছু ই-কমার্স সাইট এবং তরুণ উদ্যোক্তারা। আশা করা যায় আর কয়েক বছরের মাঝেই এসব তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে ই-কমার্স খাতে এক নতুন কোঠায়। পাশাপাশি এই খাতকে আরও উন্নত করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন ই-কমার্স এক অপার সম্ভাবনাময় খাত। যা আমাদের কেনাকাটাকে করবে আরও গতিশীল, সাশ্রয়ী এবং সহজ।
লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই মার্কেট প্লেসে তরুণ উদ্যোগতাই বেশি। তরুণ উদ্যোক্তা বেশি হওয়ার কারণ যদি ধরি তাহলে প্রথমেই বলতে হবে এই ব্যবসায় ইনভেস্টমেন্ট কম এবং কম সময়ে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব।।অন্যদিকে একটা ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে খুব বেশি অর্থও লাগে না। কারণ বর্তমানে অনেক কম খরচে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব। বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা অনেক কম খরচে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকে। তাই খরচ ও সময় কম ব্যয় হওয়ায় এই ব্যবসার জন্য অনেকই এখন প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
বিশ্ব প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশ
জার্মান ওয়েব পোর্টাল স্ট্যাটিস্টার হিসেবে বলছে, ২০২০ সালে বৈশ্বিক ই-কমার্স ব্যবসার বাজারের আকার দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই লাখ কোটি ডলার। সবচেয়ে বড় বাজার হয়েছে চীনের। এরপর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। ২০২০ সালে প্রতিবেশী দেশ ভারত প্রায় ৪৩৮৯, পাকিস্তান ৩৬০, মিয়ানমার ও নেপাল ৩১ কোটি ডলারের ই-কমার্সের বাজার গড়ে তুলেছে।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আঙ্কটাড জানায়, ২০১৮ সালে বিশ্বের ১৪০ কোটির বেশি মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করেছে, যা বিশ্বের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ। এ কেনাকাটা আগের বছরের চেয়ে ৯ শতাংশ বেশি। সবচেয়ে বেশি অনলাইন কেনাকাটা করেছে চীনের মানুষ। যে সংখ্যা ৬১ কোটি। বিদেশি পণ্য কিনেছে বা আন্তঃসীমান্ত কেনাকাটা করছে বিশ্বের ৩৩ কোটি মানুষ, যা ২০১৮ সালের কেনাকাটার ২৩ শতাংশ।
এদিক থেকে পিছিয়ে নেই দক্ষিণ এশিয়ার ধাবমান অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। এরই মাঝে বাংলাদেশেও ই-কমার্স জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে ই-কমার্স মূলত ২০১০ সালে শুরু হলেও ২০১৬ সালে এর ব্যপক প্রসার ঘটে। শুরুতে ২০১০-১১ সালে বাংলাদেশে ই-কমার্সে মোট ব্যবসার পরিমাণ ছিল ৮০ কোটি টাকা। এর পরের বছর ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি হয়ে থাকে। বর্তমান প্রবৃদ্ধিও শতভাগের ওপর।
বাংলাদেশ ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের নিবন্ধিত সদস্য রয়েছে ১৩০০ জন। বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ৭ থেকে ১০ হাজার ফ্রিল্যান্সার সফটওয়্যার ডেভেলপার কর্তৃক প্রায় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছে।
বাংলাদেশে প্রায় ৪০০টি সফটওয়্যার ফার্ম, আইসিটি কোম্পানি তাদের উৎপাদিত সফটওয়্যার এবং আইসিটি সার্ভিসেস যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, জাপান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ৬০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশে ই-কমার্স গ্রাহকদের সিংহভাগ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ই-কমার্স সেবা গ্রহণ করে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিওয়াইএমএনটিএস বলছে, ২০২০ সালে অনলাইন কেনাকাটার ৭২ শতাংশ হচ্ছে মোবাইল ফোনে। ২০১৯ সালে এ হার ছিল ৪৯.৬ শতাংশ।
ফ্রান্সের এক জরিপে দেখা যায় যে, ই-কমার্সের ব্যবসা পরিচালনার প্রকৃতির কারণে একটি চাকুরী হারালে ২.৪ টি নতুন চাকুরী প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি হয়।
এক জরিপে দেখা গেছে, আগামী ২৫ বছরে বাংলাদেশেও আনুপাতিক হারে তরুণদের সংখ্যা সর্বাধিক বৃদ্ধি পাবে। এ প্রেক্ষিতে ই-কমার্স খাত বিকাশের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা গেলে বাংলাদেশের জন্য একটি অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। এড়ষফসধহ ঝধপযং ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, বাংলাদেশ “Next Eleven” গ্রুপের অন্যতম সদস্য হিসেবে সামর্থ্য ও সম্ভাবনার কারণে ২১-শতকের অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির ৬৫% মানুষের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। সংখ্যার দিক থেকে তাই বাংলাদেশ শুধুমাত্র বৃহৎ (জনসংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীতে ৮ম) নয়; বরং যুব সম্প্রদায়ের সংখ্যার দিক থেকে বৃহৎ একটি দেশ। প্রতি বছর গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭% এবং বর্ধিষ্ণু নগরায়ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আয় বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশের এ মধ্যবিত্ত শ্রেণীই ই-কমার্স কর্মকান্ডের মূল চালিকাশক্তি হবে।
বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতের বর্তমান অবস্থা
ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর সদস্যদের বাইরেও প্রায় ৫ লাখেরও বেশি ক্ষুদ্র ই-কমার্স ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ব্যবসা করছে বলে জানিয়েছেন ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ তমাল।
ছোট-বড় এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের পণ্য সারাদেশে ডেলিভারির সঙ্গে কুরিয়ার সার্ভিসের প্রায় ৫০ হাজার কর্মী সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছে কুরিয়ার সার্ভিসেস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হাফিজুর রহমান পুলক।
ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে ই-কমার্স মার্কেটের আকার ছিল ৫৬০ কোটি টাকা, পরের বছর সেটি দাঁড়ায় ৮ হাজার ৬৩২ কোটি, ২০১৮ সালে ১০ হাজার ৫০৪ কোটি, ২০১৯ সালের ১৩ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা। আর করোনাকালে গত বছরে এটি দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা।
UNCTAD ১৩০টি দেশের ই-কমার্স খাতসমূহ নিরীক্ষান্তে B2C E-commerce Index প্রস্তুত করেছে। দেখা যায় যে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা একটি দেশের ই-কমার্স খাতের অবস্থান নির্ণয়ের প্রধান সূচক হিসেবে কাজ করে। ২০১৫ সালে ITU কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বৃদ্ধির হার ১৪%; শুধুমাত্র এই একটি প্রতিবেদনের তথ্যের সাথে বিটিআরসি’র সংখ্যার (৩৯%) গরমিল পরিলক্ষিত হয়। উল্লেখ্য, ITU-এর প্রতিবেদন বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে।
দেশে ই-কমার্স কর্মকান্ড দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি মাসে নতুন নতুন সাইটের আগমন ঘটছে। যদিও এ খাতের বর্তমান অবস্থা এবং ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে খুব একটা গবেষণা পরিচালিত হয়নি; তবে Kaymu.com.bd সম্প্রতি প্রকাশিত ‘A Report on e-commerce Trends in Bangladesh’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ই-কমার্স খাত ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। Kaymu-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, ই-কমার্স খাতে লেনদেন প্রতিবছর কমপক্ষে ১০% বৃদ্ধি পাবে।
ই-কমার্সের ক্রেতারা মূলত শহরকেন্দ্রিক; তন্মধ্যে ৮০% ক্রেতার ঢাকা, গাজীপুর ও চট্টগ্রামের। এদের মধ্যে ৩৫% ঢাকার, ৩৯% চট্টগ্রামের এবং ১৫% গাজীপুরের অধিবাসী। অন্য দু’টি শহর হল ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জ এবং আরেকটি মেট্রোপলিটান শহর সিলেট। ৭৫% ই-কমার্স ব্যবহারকারীর বয়স ১৮-৩৪-এর মধ্যে।
বাংলাদেশে ই-কমার্স খাত বিকাশে চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের সুনির্দিষ্ট কতিপয় চ্যালেঞ্জ হল:
- ই-কমার্স সহায়ক উপযুক্ত জাতীয় নীতিমালা।
- ই-কমার্স উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ।
- আর্থিক লেনদেনের নিরাপত্তা।
- ধীরগতিসম্পন্ন ও ব্যয়বহুল ইন্টারনেট।
- ডেলিভারি চ্যানেল।
- ইন্টার-অপারেবল অবকাঠামো।
- দক্ষ ই-কমার্স প্রযুক্তি সহায়ক প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও মানবসম্পদের অভাব।
- আস্থাশীল ই-কমার্স পরিবেশের অভাব।
- অনলাইনে কেনাকাটায় জনসাধারণের অভ্যস্ততার অভাব ও ভীতি।
- ভোক্তা অসন্তোষ নিরসনের সুনির্দিষ্ট মেকানিজমের অভাব।
- ই-কমার্স খাতে ব্যাংকিং সুবিধা প্রদানে অনীহা।
- ই-কমার্স খাতের বিকাশে কোনো প্রণোদনা প্যাকেজ না থাকা।
- পর্যাপ্ত প্রচারণার অভাব ইত্যাদি।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধি
২০১৬ সাল থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই ব্যবসার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ২০১৬ সালের পরে থেকে দেশে ই-কর্মাস ব্যবসার প্রবৃদ্ধি হতে শুরু করেছে। ২০১৭ সালে ই-কর্মাস বাজারের আকার ছিল ৮৬ দশমিক ৩২ বিলিয়ন টাকা। ২০১৮ সালের শেষে গিয়ে দাঁড়ায় ১০৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন টাকা, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ই-কর্মাসের আকার ছিল ১৩১ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন টাকা। ২০২০ সালের আগস্ট মাসের শেষে দেশে ই-কর্মাস বাণিজ্যের বাজার ছিল ১৬৬ দশমিক ১৬ বিলিয়ন টাকা।
২০১৬ সালে বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতে ৭২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে যা বাংলাদেশে ই-কমার্সের ইতিহাসে অত্যন্ত আশাপ্রদ অগ্রগতি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর ২০১৬-তে মোট ৩.৫৯ বিলিয়ন টাকা (৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ই-কমার্সের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে যা ২০১৫ সালে রেকর্ড মতে ২.১৬ বিলিয়ন টাকা (৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ছিলো। দেশে ডেবিট কার্ড অপেক্ষা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা অধিক এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬০ মিলিয়নের অধিক যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।
এ নতুন ব্যবসা পদ্ধতিতে কোনরূপ মধ্যস্বত্বভোগীর সাহায্য ছাড়া শুধুমাত্র আইসিটি এবং ই-কমার্স সম্পর্কিত মৌলিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে সম্পৃক্ত হওয়া যাবে।
এ প্রেক্ষিতে, সরকারের ভিশন-২০২১: ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অধিকতর বেগবান হবে এবং সারা দেশে রপ্তানীযোগ্য বহুমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠা, পণ্য বহুমুখীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণ, পণ্যের প্রাধিকার নির্ধারণসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড গতিশীল হবে।
ই-ক্যাব সূত্র জানায়, বাংলাদেশে ই-কমার্স বাড়ছে খুবই দ্রুত গতিতে। গত তিন বছর ধরে এই খাতের প্রবৃদ্ধি প্রায় ১০০ ভাগ। অর্থাৎ প্রতি বছর প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে এই খাত। বাংলাদেশে ই-কমার্সের এক নম্বর জায়গাটি চীনের আলিবাবার দখলে। বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আমাজনও। আর সম্প্রতি এই বাজারে ঢুকেছে পূর্ব ইউরোপের আরেকটি বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউভি। বড় বড় বিদেশি কোম্পানিগুলো হঠাৎ আগ্রহী হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ নিয়ে। কারণ এই খাতে মাসে এখন প্রায় ৭০০ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। অর্থাৎ বার্ষিক লেনদেন এখন ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। পাশাপাশি বাংলাদেশে এই মুহূর্তে প্রায় ৭ হাজার ৫০০ প্রতিষ্ঠান ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত।
ই-কমার্সের ভবিষ্যৎ
ধীরে ধীরে ব্যাংকিং, লজিস্টিক কমিউনিকেশন এবং পেমেন্ট মেথডের উন্নতির হাত ধরে ই-কমার্স সেক্টরটির উন্নয়নের অনেক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্র বিশেষ করে ব্যাংকিং ক্ষেত্রটি ইন্টারনেট পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করছে। গ্রাহকদের কাছে এখন ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড সেবা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট আরও বেশি সহজলভ্য হওয়ায় ক্যাশ অন ডেলিভারির (সিওডি) পরিসরও বাড়ছে।
ই-কমার্সের গ্রোথ সম্পর্কে চালডালের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) জিয়া আশরাফ বলেন, গত কয়েক মাসে ই-কমার্সে প্রায় শতভাগ গ্রোথ হয়েছে। এটা এই শিল্পের জন্য ইতিবাচক। আশাকরি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও এই গ্রোথটা থাকবে। কারণ, মানুষের এখন অভ্যাসের পরিবর্তন হচ্ছে। ঘরে বসেই সব পাচ্ছেন। তাহলে কষ্ট করে কেন আর বাইরে যাবেন।
জানা যায়, মহামারী করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের পরিসর কমিয়েছে, ছাঁটাই হয়েছে কর্মী, কমানো হয়েছে বেতন। আর্থিক সঙ্কটের কারণে হাহাকার করেছে প্রতিষ্ঠিত অনেক প্রতিষ্ঠানই। তবে এই করোনায় বিপরীত চিত্র দেখেছে ই-কমার্স খাত। করোনাকালে একদিকে যেমন এই ব্যবসার প্রবৃদ্ধি বেড়েছে অন্যদিকে সংক্রমণের মধ্যেই যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন ই-কর্মাস কোম্পানি। এর মধ্যে রয়েছে- সেরাবাংলা ৬৪ ডট কম, সেলেক্সট্রা ডট কম ডট বিডি, বি৭১বিডি ডট কম, ধামাকা শপিং, আলিশামার্ট ডট কম ইত্যাদি। এখনো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান অনলাইন মার্কেটে যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলেও জানা গেছে।
ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, করোনাকালে ই-কমার্সে দ্বিগুণ গ্রোথ হয়েছে। যারা আগে কখনো ভাবেনি ই-কমার্স ব্যবসা করছে ট্রেন্ডের কারণে তারাও এখন এই দিকে ঝুঁকছে। লাখ লাখ উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে এই খাতে। মার্কেট অনেক পরিবর্তন হচ্ছে, মার্কেটের আকার বড় হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিদিন ই-কমার্সে অর্ডার পড়ছে এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৫০ হাজারের মতো। তবে এটি এখনো বড় শহরগুলোতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। গ্রাম পর্যায়ে এটির পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতের সমস্যা এবং সমাধানে করনীয়
বাংলাদেশে ই-কমার্সের যথেষ্ট চাহিদা আছে এবং তার বহিঃপ্রকাশও আমরা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু ই-কমার্স ব্যবসায় সকলের হাতের নাগালে নিয়ে যেতে বিদ্যমান রয়েছে অনেক সমস্যা। তা সমাধানেও চেষ্টা করছে সরকার। সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) তাদের ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৬ কোটি ৫৫ লাখ ৭২ হাজার। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রেকর্ডসংখ্যক বেড়ে বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৬৪ লাখ ১০ হাজার। যা ই-কমার্স সিস্টেম জনপ্রিয় করে তোলার জন্য অনেক ভূমিকা রাখবে। মানুষ এখন হাতের মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমেই ই-কমার্সের মাধ্যমে অনলাইন কেনাকাটা সাড়তে পারবে।
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ই-কমার্সের মাধ্যমে শপিং করতে পারলেও এখনও মার্কেটে গিয়ে শপিং করার প্রবণতা থাকার কারণে ই-কমার্স ব্যবসায় প্রভাবিত হচ্ছে। তাই এজন্য সকলকে ই-কমার্সের সুবিধা জানাতে হবে। সেই প্রচেষ্টায় অবদান রাখতেও এগিয়ে এসেছে আমারসাজ ডটকম। বাংলাদেশে অনলাইন শপিং সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে তারা শুরু করেছেন ব্লগিং প্রতিযোগিতা। এছাড়াও অনলাইনে কেনাকাটা করতে সকলকে উৎসাহী করতে দেশের সবচেয়ে সেরা ই-কমার্স সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে আমারসাজ ডটকম । তাই ই-কমার্স খাত সচল করতে এগিয়ে আসতে হবে আমাদের সকলকে।
অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা এখন প্রতারণা। ক্রেতাদের ঠকাচ্ছেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করছেন না। সে ক্ষেত্রে যারা ক্রেতাদের ভালো সেবা দিচ্ছে, তারাই ভালো করবে বলে মনে করেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল।
এদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ই-কমার্সে প্রতারণা বন্ধ করা এবং ক্রেতাদের আস্থা তৈরি করে এ খাতের বিকাশের জন্য ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১’ শিরোনামে তৈরি করা খসড়ার ওপর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আগামী ২১ মার্চ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে একটি বৈঠকের পর বাড়তি কোন মতামত পাওয়া গেলে তা সংযোজন-বিয়োজন করে আগামী মাসেই এটি জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান মো. হাফিজুর রহমান।
এতে বলা হয়েছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনসহ দেশে প্রচলিত সংশ্লিষ্ট সব আইন এই নির্দেশিকার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রয়াদেশ গ্রহণের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ডেলিভারি ম্যানের কাছে পণ্য পৌঁছাবে এবং সর্বোচ্চ পাঁচ দিনের মধ্যে একই শহরে এবং ১০ দিনের মধ্যে ভিন্ন শহরে বা গ্রামে পণ্য ডেলিভারি করবে। নির্ধারিত সময়ে এবং সঠিক পণ্য ডেলিভারি না করলে ক্রেতা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বা অন্য যে কোন আদালতে মামলা করতে পারবেন।
এই নির্দেশিকার বিধান প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে কর্তৃপক্ষ বিক্রেতা বা মার্কেটপ্লেস এর ট্রেড লাইসেন্স বা কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন, ভ্যাট নিবন্ধন বাতিল করা এবং সংশ্লিষ্ট মার্কেটপ্লেস নিষিদ্ধ করাসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব, এমন বিধান যুক্ত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
ফেসবুক এবং এফ কমার্স
ফেসবুকের পেজ খুলে ই-কমার্স বিজনেস করলে সেটিকে, এফ-কমার্স বলে। টাকা খরচ করে ওয়েবসাইট তৈরির প্রয়োজন নেই এক্ষেত্রে। শুধুমাত্র ফেসবুকে একটি পেজ খুলেই ব্যবসা শুরু করা যাবে। ইতোমধ্যে দেশে অনেকেই করছেন এরকম কিছু।
শুধুমাত্র ঢাকাতেই প্রায় 2 কোটি 20 লক্ষ সচল ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছেন। বাংলাদেশ ফেইসবুক এ দেশীয় ব্যবসায়িক বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৩১২ কোটি টাকা। এফ-কমার্স সুবিধা গ্রহণকারীর মধ্যে ৭২ পার্সেন্ট পুরুষ। ৫০ পার্সেন্ট ফেসবুক পেইজের উদ্যোক্তা নারী জনগোষ্ঠী।
বাংলাদেশের প্রায় ৩ লক্ষাধিক ফেসবুক পেইজ আছে। গড়ে ফেসবুক পেইজ থেকে উদ্যোক্তাদের মাসিক আয় ১০ হাজার টাকা থেকে এক লক্ষাধিক টাকা। বেশিরভাগ ফেসবুক পেজ ব্যবহারকারীর বয়স ১৮ থেকে ২৪ এর মধ্যে। এফ-কমার্স এ একটি নতুন চাকরির সুযোগ ডিজিটাল মার্কেটিং এর উদ্ভাবন হয়েছে।
বর্তমানে করোনা মহামারির কারণে অনেক ব্যবসা অনলাইনে চলে গেছে। গত মে মাসে ফেসবুক ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা ব্যবসায়ীদের ফেসবুকে শপ খুলতে দেবে, যা ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে দেখা যাবে। সম্প্রতি ইনস্টাগ্রাম নতুন নকশায় শপ অংশটিকে সাজিয়েছে। এতে ব্যবহারকারী তার প্রিয় ব্র্যান্ডের পণ্য দেখতে পারেন সহজে। ফেসবুক এখন এ ফিচার ফেসবুক অ্যাপে যুক্ত করবে। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন ফিচারটি পরীক্ষা শুরু করেছে তারা। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফেসবুক শপ’। এ শপে ই-কমার্স সাইটের মতো বিভিন্ন ব্যবসায়ীর পণ্য প্রদর্শন করবে ফেসবুক।
ফেসবুকের পণ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান জর্জ লি বলেন, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে ফেসবুক অ্যাপে ও ফেসবুক কমিউনিটির জন্য নতুন কিছু যুক্ত করা, যা আগে ছিল না। ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করতে ফেসবুক কাজ করবে।
ফেসবুকে যারা শপ পরিচালনা করতে চান, তাদের সুবিধার জন্য নতুন নকশা, পণ্য সহজে সাজানোর সুযোগ ও স্বয়ংক্রিয় শপ তৈরির সুযোগ রাখছে ফেসবুক। এতে নতুন মেসেজিং অপশন থাকবে, যাতে গ্রাহকেরা মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ বা ইনস্টাগ্রাম ডিরেক্ট ব্যবহার করে বিক্রেতাকে বার্তা পাঠাতে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্রে ইনস্টাগ্রামে চেকআউট বা অর্থ পরিশোধের সুবিধাও যুক্ত হচ্ছে। পণ্য বিক্রির পর সেখান থেকে নির্দিষ্ট ফি কেটে রাখবে ফেসবুক। এর বাইরে ইনস্টাগ্রামে লাইভ শো চালু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।
বাংলাদেশে এফ কমার্স এর জনপ্রিয়তা
বাংলাদেশের ৯৩% সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী ফেসবুক ব্যবহার করেন। তার মানে বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠীর একটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে যা এফ-কমার্স পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক ব্যবহার করা বেশ সহজ।
নতুন উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রচারের জন্য ফেসবুক একটি আদর্শ মাধ্যম যাতে প্রায় বিনা খরচ এই পণ্যের প্রসার করা যায়। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা যাদের ব্যবসায়িক পুঁজি কম তাদের জন্য ফেসবুক একটি উৎকৃষ্ট মাধ্যম। স্বল্প সময়ে ইন্টারনেট পরিসেবা বৃদ্ধি হওয়াতে ফেসবুকের প্রচার অনেক বেড়েছে।
দেশের বেশিরভাগ মহিলা উদ্যোক্তাদের প্রচার এর প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক অথবা এফ-কমার্স। ফেসবুকের মাধ্যমে একটি আদর্শ গ্রাহক সমাবেশ করানো যায়। যার কাছ থেকে আপনি সঠিক সেবাটি পেয়েছেন, আপনি তাঁর পণ্যকে গ্রহণ করেন এবং তার পণ্যের প্রচারে সহায়তা করেন।
বাংলাদেশ এফ-কমার্স প্রবৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ
ফেসবুকের বেশিরভাগ ব্যবসায়িক উদ্যোক্তা নিজস্ব কোন ট্রেড লাইসেন্স নেই। যে কারণে ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া তাদের জন্য দুষ্কর। যদিও ফেসবুকসহ অন্যান্য ডিজিটাল প্লাটফর্মের প্রায় কয়েক লাখ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার জন্য ট্রেড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি খসড়া নীতিমালা করেছে।
এছাড়া ব্যবসার জন্য উদ্যোক্তাদের যে কাঁচা মালের প্রয়োজন হয় সেই কাঁচামাল বেশিরভাগই ঢাকার বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়। যে কারণে তাদের জন্য ব্যবসায় লাভের মুখ দেখা কষ্টকর। যেহেতু গ্রাহক পণ্য না দেখে অর্ডার করছেন তাই ফেসবুকে ব্যবসা পরিচালনা করতে হয় সততার মাধ্যমে। এর বিপরীতে গেলে ব্যবসা পরিচালনা করা খুবই কঠিন। একই ধরনের পণ্যের অনেক পেজ দেখা যায় ফেসবুকে যাতে প্রতিযোগিতা অনেক বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ই-কমার্স অনেক বড় একটি জায়গা। এখানে নতুন কিছু নিয়ে এসে কেউ তাড়াতাড়ি সফলতা পেতে পারে, কিন্তু সবার সফলতা কিন্তু একবারে আসবে না। সেক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে ব্যবসায় টিকে থাকতে হবে। গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা গেলে একসময় সফলতা আসবে। বাংলাদেশের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ই-কমার্স খাতে সফল হতে সময় লেগেছে। কিন্তু গ্রাহকদের আস্থা অর্জনের পর তাদের সফলতা বহুগুণ বেড়েছে।
এসডব্লিউ/এসএস/২২৩৪
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ