State Watch
    Facebook Twitter Instagram
    সর্বশেষ প্রকাশিত
    • যেভাবে সভ্যতার শুরুতেই নির্মম গণবিলুপ্তি ঘটিয়েছিল হোমো স্যাপিয়েন্সরা
    • আমেরিকায় রুশ উপনিবেশ: কেন ও কীভাবে ব্যর্থ হল?
    • বিবর্তিত হলে সাপের মতো বিষ তৈরি হতে পারে মানুষের শরীরেও: গবেষণা
    • ভারতে এই প্রথম এক হল বাম-কংগ্রেস: এবার কি থামবে মোদি?
    • তুরস্কের মতো ভূমিকম্পে ঢাকায় তিন লাখ প্রাণহানি হবে: বিশেষজ্ঞ
    • ফাঁস হল আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের গোপন চুক্তি: ওয়াশিংটন পোস্ট
    • ভূমিকম্পের সুযোগে কারাগার থেকে পালাল ভয়াবহ ২০ আইএস জঙ্গি
    • ভারতের যে সভ্যতা উপাসনা করত যোনির, প্রিয়জনের মৃতদেহ ছড়াত চিল শকুনের জন্য
    State Watch
    • প্রধান পাতা
    • আইনপ্রয়োগ
      1. গুম-অপহরণ
      2. গ্রেপ্তার-নিপীড়ন
      3. নিপীড়নমূলক আইন
      4. প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি
      5. বিচার বহির্ভূত হত্যা
      6. রাষ্ট্রীয় বাহিনী
      Featured
      জানুয়ারি ৩০, ২০২৩

      ১৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ: ওয়াসার এমডিসহ নয় জন আসামী

      Recent
      ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩

      ১১৬১ কোটি টাকার দুর্নীতি: বিমান বাংলাদেশের ২৩ জনের নামে মামলা

      জানুয়ারি ৩০, ২০২৩

      দুর্নীতি ও বাংলাদেশ: দুই দেহ এক প্রাণ

      জানুয়ারি ৩০, ২০২৩

      ১৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ: ওয়াসার এমডিসহ নয় জন আসামী

    • আক্রান্ত জনগোষ্ঠী
      1. আদিবাসী
      2. গণমাধ্যম
      3. ধর্মীয় সংখ্যালঘু
      4. নারী ও শিশু
      5. প্রাণ-প্রকৃতি-কৃষি
      6. ভিন্ন মতাবলম্বী
      7. রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ
      8. শ্রমজীবী
      Featured
      ডিসেম্বর ৬, ২০২২

      রিজভীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা: পুলিশের অভিযানে ঘরছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা

      Recent
      ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩

      ঠাকুরগাঁওয়ে ১২টি মন্দিরে হামলা, ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর

      জানুয়ারি ৩১, ২০২৩

      সাজানো মামলা ও নির্যাতনে প্রকৃত সাংবাদিক-শূন্য বাংলাদেশ

      জানুয়ারি ২৩, ২০২৩

      বাংলাদেশের বিরোধী দল ভয়াবহ দমন-পীড়নের শিকার: দ্য গার্ডিয়ান

    • বিশেষায়িত
      1. করোনাভাইরাস
      2. ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট
      3. নির্বাচন
      4. বিশ্ব
      5. মানবাধিকার
      6. রোহিঙ্গা জাতি
      7. সীমান্ত ইস্যু
      Featured
      ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩

      তুরস্ক ও সিরিয়ায় শতাব্দীর ভয়াবহতম ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬৪১

      Recent
      ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

      ভারতে এই প্রথম এক হল বাম-কংগ্রেস: এবার কি থামবে মোদি?

      ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩

      ভূমিকম্পের সুযোগে কারাগার থেকে পালাল ভয়াবহ ২০ আইএস জঙ্গি

      ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩

      এই প্রথম সন্তানের জন্ম দিতে চলেছে এক যুবক: কীভাবে সম্ভব হল?

    • রাজনীতি-প্রশাসন
      1. অর্থনীতি ও বাণিজ্য
      2. আইন-আদালত
      3. ক্ষমতাসীন দল
      4. জাতীয় সংসদ
      5. রাজনীতি
      6. রাষ্ট্র-সরকার
      Featured
      ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

      ফাঁস হল আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের গোপন চুক্তি: ওয়াশিংটন পোস্ট

      Recent
      ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

      ফাঁস হল আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের গোপন চুক্তি: ওয়াশিংটন পোস্ট

      ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩

      অতিমানবীয় ধনী: দেশে ২১ ব্যক্তির কাছে আছে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদ

      ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩

      গ্যাসের দাম এক লাফে ২৬৬ টাকা বাড়াল সরকার

    • মতামত
      • বিশ্লেষণ
      • সম্পাদকীয়
      • সাক্ষাৎকার
    • গবেষণা ও প্রতিবেদন
      1. বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন
      2. চলতি প্রবণতা
      3. নীতি নির্দেশনা
      Featured
      জানুয়ারি ৩১, ২০২৩

      আবারো অবনমন: সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২

      Recent
      ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩

      সড়ক দুর্ঘটনা: জানুয়ারিতে ঝরেছে নিরীহ ৬৪২ প্রাণ

      জানুয়ারি ৩১, ২০২৩

      দেশের ১৭ প্রজাতির মাছে মাইক্রোপ্লাস্টিক, বাড়ছে ক্যান্সার ঝুঁকি

      জানুয়ারি ৩১, ২০২৩

      আবারো অবনমন: সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২

    • আর্কাইভ
    State Watch
    বিশ্লেষণ

    সাম্প্রদায়িকতা ও অপরবিদ্বেষ: এপার-ওপার

    স্টেটওয়াচ ডেস্কBy স্টেটওয়াচ ডেস্কমার্চ ১৮, ২০২১Updated:মার্চ ২২, ২০২১No Comments7 Mins Read

    আনু মুহাম্মদ : কোনো দেশে বৈষম্য ও নিপীড়নমূলক ব্যবস্থাই যদি প্রধান থাকে, তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতি-ধর্ম-বর্ণের মানুষও শ্রেণিগত লিঙ্গীয় বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার হয়। যারা সংখ্যালঘু জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ, তারা এসব সমস্যার মধ্যে তো থাকেই; নিজেদের জাতিগত, বর্ণগত ও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে তারা আরও বাড়তি চাপের শিকার হয়। আবার একই ধর্মের মধ্যেও নানা ভাগ থাকে; সংখ্যায় গরিষ্ঠতা না থাকলেও ক্ষমতার জোরে ক্ষুদ্র গোষ্ঠী বৃহৎ জনসংখ্যার ওপর চড়াও হতে পারে। এর বড় দৃষ্টান্ত ভারত। যেখানে উচ্চবর্ণ সংখ্যায় কম হলেও তারাই ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় বাকিদের বহু রকম সামাজিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক পীড়ন ও বৈষম্যের শিকার হতে হয়। বিশেষত নিম্নবর্ণ ও দলিত সমাজের মানুষের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনা আছে। ভারতের গুজরাটে নৃশংস হত্যা ও নির্যাতন হয়েছিল মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর। সাম্প্রতিককালে গরুকে কেন্দ্র করে শুধু মুসলমান নয়; দলিত সমাজের ওপরেও হয়রানি ও নির্যাতন হচ্ছে। বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে নানা অজুহাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হিন্দু ও বৌদ্ধদের মন্দির, প্রতিমা ও ঘরবাড়িতে হামলা হয়েছে। সেগুলোতে এই ধর্মীয় পরিচয়কেই প্রধান করে হিংস্র উন্মাদনা তৈরি করেছে অপরবিদ্বেষী এবং দখল-লুণ্ঠনকারীরা। রামু থেকে শুরু করে গত কয়েক বছরের সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো নিয়ে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা, অপরাধীদের শনাক্ত করার ব্যাপারে দীর্ঘসূত্রতা প্রায় একই রকম।

    বিজ্ঞাপন

    ২.
    বাংলাদেশের হিন্দু জনগোষ্ঠী নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের পাশাপাশি ভারতের বর্তমান সরকারের ভূমিকাও বিশেষ মনোযোগের দাবি রাখে। মোদি সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ‘বাংলাদেশ থেকে কোনো হিন্দু যদি ভারতে আশ্রয় চান সঙ্গে সঙ্গে তাকে নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া হবে।’ বাংলাদেশে কোথাও সাম্প্রদায়িক হামলা হলে যেভাবে ভারতীয় প্রশাসন ও এ দেশে তাদের দূতাবাস প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে, তাতে কারও কাছে মনে হতে পারে, বাংলাদেশের নির্যাতিত হিন্দুদের পাশে দাঁড়াচ্ছে তারা। কিন্তু তাদের ভূমিকায় এ দেশের হিন্দু পরিচয়ের মানুষদের নিরাপত্তাহীনতা কমে না, বরং পরিস্থিতি আরও অপমানজনক হয়। এ দেশে যারা সারাক্ষণ দাবি করে, ‘হিন্দুরা ভারতের লোক’, তাদের গলার জোর বাড়ায়। ভারতের স্বাধীন বিশেষজ্ঞরাই বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন বিজেপি সরকারের রাজনৈতিক ফায়দা ওঠাতে সাহায্য করে বলেই এ নিয়ে তাদের এত উৎসাহ। তার মানে, বাংলাদেশে যারা বিভিন্ন অজুহাতে মন্দির বা হিন্দুবাড়িতে হামলা করছে, তারা প্রকারান্তরে একদিকে ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকে সহায়তা করছে, অন্যদিকে ভারতের মুসলমানদের অবস্থা আরও নাজুক করছে।

    আনু মুহাম্মদ

    শুধু ভারত-বাংলাদেশ নয়; বহু দেশেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা একটা রেওয়াজ। বাংলাদেশে হিন্দু জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগমূলক যেসব বক্তব্য আছে তার মধ্যে :’হিন্দুরা ভারতকে নিজেদের দেশ মনে করে; বাংলাদেশকে নয়’, ‘হিন্দুরা ভারতে সম্পদ পাচার করে’ ইত্যাদি। প্রশ্ন হলো, এ দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের মধ্যে যারা ক্ষমতাবান তারা কি বাংলাদেশকে নিজের দেশ মনে করে? তাদের লুট করা সম্পদ কোথায় থাকে? এই দেশে, না ভিনদেশে? একই রকম কথা ভারতের মুসলমানরাও শোনে। তাদেরও বলা হয়, তারা পাকিস্তানকে নিজের দেশ মনে করে। কাশ্মীরে দশকের পর দশক ফ্যাসিবাদী আগ্রাসনকে গ্রহণযোগ্যতা দিতে মুসলিমবিদ্বেষী এসব অপপ্রচার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পায়। বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি এই আগ্রাসন আরও বাড়াতে মরিয়া। আসামে মুসলমানরা এখন রাষ্ট্রহীন হওয়ার পথে।

    ৩.
    কলকাতার টিভিতে একবার ভারতে মুসলিম নির্যাতন নিয়ে বিজেপি ও বামপন্থি দুই নেতার বিতর্ক দেখেছিলাম। বিজেপি নেতা বাম নেতার উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আপনারা শুধু ভারতে মুসলমান নির্যাতন দেখেন; বাংলাদেশে যে হিন্দু নির্যাতন হচ্ছে, সেটা দেখেন না কেন?’ ভারতের বামপন্থি ও সেক্যুলারদের বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী বা বিজেপিপন্থিদের একটা প্রবলভাবে প্রচারিত অভিযোগ, তারা ভারতের মুসলমানদের নিয়েই বেশি চিৎকার করেন, ব্যস্ত থাকেন। হিন্দুদের স্বার্থ তারা দেখেন না। হিন্দুদের স্বার্থের কথা বলে, হিন্দু গৌরব ফিরিয়ে আনার কথা বলেই বিজেপির হিন্দুত্ববাদী কট্টর রাজনীতি দাঁড়িয়েছে। করপোরেট স্বার্থকে ধর্মীয় উন্মাদনার মোড়কে ঢেকে বিজয়যাত্রার কূটকৌশল যে খুবই কার্যকর- তার প্রমাণ সর্বশেষ নির্বাচনে তাদের বিপুল বিজয়।

    একই ঘটনা বাংলাদেশেও। এখানে যারা হিন্দুসহ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বা বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাদের উদ্দেশে ঠিক একই রকম অভিযোগ শোনা যায়। তখন বলা হয়, এরা সেক্যুলার বামপন্থি। এরা এ দেশে শুধু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন দেখে। ভারতে যে মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে, তা তাদের চোখে পড়ে না। জাতিগত সংখ্যালঘু নিয়েও একই ধরনের প্রচার। পার্বত্য চট্টগ্রাম কিংবা সমতলের অবাঙালি বিভিন্ন জাতির মানুষদের ওপর নির্যাতন নিয়ে কথা বললেও এই অভিযোগ ওঠে- ‘এরা বাঙালিদের স্বার্থ দেখছে না।’ অথচ দু’দেশেই সাম্প্রদায়িকতা-জাতিগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে তারাই যথাযথভাবে সোচ্চার হন, যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অন্যান্য, শ্রেণিগত-লিঙ্গীয়-আঞ্চলিক নিপীড়ন বৈষম্য নিয়েও সাধ্যমতো সোচ্চার থাকেন।

    উত্তর ভারতের হিন্দু গুরু ও মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ বলেছেন, ‘সেক্যুলারিজম বলে কিছু হতে পারে না।’ একই রকম কথা বাংলাদেশেও অনেক ধর্মীয় নেতা বা সাম্প্রদায়িক লোকজনের মুখে শোনা যায়। কিন্তু দিল্লির শাহি মসজিদের ইমাম বলেন, ‘আমরা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র বজায় রাখার দাবি জানাই।’ ইউরোপ-আমেরিকার কট্টর শ্বেতাঙ্গ খ্রিষ্টানদের বিভিন্ন গোষ্ঠী মুসলমান আর অশ্বেতাঙ্গদের তাড়িয়ে খ্রিষ্টান শ্বেতাঙ্গ শাসন প্রতিষ্ঠায় বিষের রাজনীতি ছড়াচ্ছে। ট্রাম্প এখন এদেরই মুখ। অন্যদিকে ইউরোপ-আমেরিকার মুসলিম বা অন্যান্য জাতি-ধর্মের মানুষরা রাষ্ট্রের ধর্ম ও বর্ণনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্য প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে দাঁড়াচ্ছেন। এ ছাড়া তাদের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়। ওইসব দেশের বামপন্থিরাই তাদের পাশে শক্তভাবে দাঁড়ান। তাদেরও ‘সেক্যুলার বামপন্থি’ বলে তিরস্কার করে বিদ্বেষীরা।

    বাংলাদেশে যারা মনে করেন, যেহেতু এই দেশে মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সুতরাং এই দেশ ইসলামপন্থি রাজনীতি দ্বারাই পরিচালিত হওয়া উচিত। তাদেরই হিন্দু সহচিন্তকরা মনে করেন, ভারতকে অবশ্যই হিন্দুরাষ্ট্র হতে হবে, যেহেতু সেখানে হিন্দুরা প্রধান জনগোষ্ঠী। ‘যে ধর্মের মানুষ কোনো দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ, সেই দেশ তাদের ধর্মীয় আইন-নীতি-মতাদর্শ দ্বারাই পরিচালিত হবে’- এ অবস্থান গ্রহণ করলে বাংলাদেশ হবে ইসলামী রাষ্ট্র এবং সে অনুযায়ী ভারত হবে হিন্দুরাষ্ট্র, ইউরোপ-আমেরিকা হতে হবে খ্রিষ্টান রাষ্ট্র। তাহলে বলতে হবে, হিন্দুত্ববাদী শাসনের দাবি যুক্তিযুক্ত, ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্রে খ্রিষ্টান কট্টরপন্থিদের মুসলিম অভিবাসী নিধন বা বিতাড়ন কর্মসূচিও তাহলে সমর্থন করতে হবে! এসব কুযুক্তির গভীরে গেলে দেখা যায়, ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের কট্টরপন্থিদের আপাতদৃষ্টিতে পরস্পরের মহাশত্রু মনে হলেও এদের সারবস্তু অভিন্ন। এরা আসলে পরস্পরের সহযোগী, শক্তিদাতা।

    ৪.
    আনুষ্ঠানিক হামলা কম বা বেশি হলেও দু’দেশেই প্রতিনিয়ত বিদ্বেষী সংস্কৃতির চাষ হয়। কিছুদিন আগে ঢাকায় একজন শিক্ষক ও শিল্পী তার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন। রাস্তায় তিনি হেনস্তা হয়েছেন। তিনি নারী, কপালে টিপ দেন, সেটাই কারণ বলে তার ধারণা। কপালে টিপ কেন হেনস্তার কারণ হবে? যে কেউ এটা কপালে লাগাতে পারেন। ষাটের দশকে হিন্দু, মুসলিম নির্বিশেষে নারীরা পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে কপালে টিপ দিতেন। এখন শুনি, কপালের টিপকে ‘হিন্দুয়ানি’ বলে বর্জনের কথা। হিন্দুয়ানি বলতে কী বোঝায়? যা হিন্দুরা করে, তাই? হিন্দি সিরিয়াল বা বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে হিন্দু নারীদের যে পোশাক ও সজ্জা প্রদর্শনী হয়, সেগুলোও কি তবে হিন্দুয়ানি? কিন্তু সেগুলো তো প্রত্যাখ্যান করার কথা শোনা যায় না। বরং সেগুলোর চাহিদা বা বাজারদর এ দেশে অনেক বেশি।

    হিন্দু বা মুসলমান বলে কি আসলে সমরূপ কোনো গোষ্ঠী আছে? ধর্মীয় পরিচয় এক হলেই কি সবার পোশাক, খাদ্য, সংস্কৃতি, জীবনযাপন এক হয়? এক ভারতের মধ্যেই উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিমে খাবার, পোশাক, উৎসবে মেলা তফাত। কোনটিকে হিন্দুয়ানি বলব? সারা দুনিয়ার মুসলমানদের ইসলাম ধর্মের অবশ্যপালনীয় ইবাদতে মিল আছে। কিন্তু খাদ্য, পোশাক, উৎসব? বহু তফাত। বাংলাদেশের বাঙালি ও অন্যান্য জাতি পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষের উৎসব করে। কেউ কেউ এ উৎসবকেও হিন্দুয়ানি বলেন। আসলে এদের কাছে মানুষের আনন্দ-উৎসবই অসহ্য! ইরানে নতুন বছর শুরুর ‘নওরোজ উৎসব’ ইসলামপূর্ব কালের। তাই বলে সেখানকার ধর্মীয় নেতাদের তা বর্জনের কোনো ডাক দিতে দেখা যায় না। বরং এ উৎসব সেখানে সবচেয়ে গুরুত্ব নিয়ে পালিত হয়।

    আসলে একেকটি অঞ্চলের ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য, সাংস্কৃতিক ধারাবাহিকতা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া যায় না। বাঙালি মুসলমান যখন খেতে বসেন, তখন যা যা তার পছন্দ- মাছ শাক-সবজি, ভাত, খিচুড়ি, ভর্তা, ভাজি, দই, মিষ্টি, পিঠা কি বাঙালি হিন্দুদেরও পছন্দের খাবার নয়? তাহলে এগুলো কি মুসলমানি না হিন্দুয়ানি? এসব খাবার হিন্দুয়ানি বলে বাদ দিয়ে আরব বা অন্য কোনো দেশের খাবার দিলে বাঙালি মুসলমানের ক’দিন তা ভালো লাগবে? তাহলে হিন্দুয়ানি কী? কপালে টিপ? ক’জন হিন্দু কপালে টিপ দেয়? বাঙালি ছাড়া আর খুব কম অঞ্চলেই হিন্দু নারীর কপালে টিপ দেখা যায়। দক্ষিণ ভারতের নারীরা সব সময় চুলে ফুল লাগিয়ে রাখেন। চুলে ফুল দেওয়া কি তবে হিন্দুয়ানি? জল বলা? দাদা, মাসি, পিসি, দিদি বলা? শাড়ি? উত্তর ভারতে কামিজ-পায়জামা নারীর সাধারণ পোশাক। সেটা কি হিন্দুয়ানি? জল বলে কেবল ভারতের বাঙালিরা। ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের হিন্দু সমাজে পানি, আপা, আম্মা, ভাবি, খালা, ভাইয়া বলা হয়। তাহলে?

    ৫.
    প্রকৃতির মতোই বৈচিত্র্যের মধ্যে মানুষের সৌন্দর্য ও শক্তি। একদিকে পুঁজির বিশ্বায়ন হচ্ছে, সর্বশেষ প্রযুক্তি নিয়ে উন্নয়নের জয়গান; অন্যদিকে যেন নিজেকে ছোট করতে করতে ক্ষুুদ্রাতিক্ষুদ্র হয়ে যাওয়ার পথে মানুষের যাত্রা। অন্যের প্রতি বিদ্বেষের বিষ শুধু যে অন্যকে বিষাক্ত করে, তা নয়। তা নিজেকেও বিষে জর্জরিত করে। অজান্তেই অনেক পরিবারে অন্য ধর্ম, জাতি, ভাষা, অঞ্চল, সংস্কৃতির মানুষ সম্পর্কে অশ্রদ্ধা, বিদ্বেষ তৈরি করা হয়। যার কারণে শৈশবেই বিষ ঢুকে যায়। এগুলোই ডালপালা মেলে। সমাজের ভেতর এগুলো টিকে থাকলে এর ওপর ভর করেই প্রতিক্রিয়াশীল, ধর্ম-বর্ণান্ধ রাজনীতি, দখল-লুণ্ঠনের অর্থনীতি বেড়ে ওঠে। যারা এর সুবিধাভোগী, তারা তাই এই বিদ্বেষ চাষে থাকে তৎপর।

    (২৪ আগস্ট ২০১৯ তারিখে দৈনিক সমকালে প্রকাশিত)

    লেখক : আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়


    State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।

    [wpedon id=”374″ align=”center”]
    ছড়িয়ে দিনঃ

    আপনার মতামত জানানঃ

    State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
    Donate
    আনু মুহাম্মদ সাম্প্রদায়িকতা

    Related Posts

    ঠাকুরগাঁওয়ে ১২টি মন্দিরে হামলা, ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর

    দুর্গাপূজায় সাম্প্রদায়িক হামলার মামলা ঝুলে আছে, আদৌ কিছু কি হবে?

    দুর্গাপুজো: বাংলাদেশে কি নিরাপদ আনন্দমুখর উৎসব করতে পারবে হিন্দুরা?

    বিজ্ঞাপন

    সর্বশেষ প্রকাশিত
    ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

    যেভাবে সভ্যতার শুরুতেই নির্মম গণবিলুপ্তি ঘটিয়েছিল হোমো স্যাপিয়েন্সরা

    ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

    আমেরিকায় রুশ উপনিবেশ: কেন ও কীভাবে ব্যর্থ হল?

    ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

    বিবর্তিত হলে সাপের মতো বিষ তৈরি হতে পারে মানুষের শরীরেও: গবেষণা

    ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

    ভারতে এই প্রথম এক হল বাম-কংগ্রেস: এবার কি থামবে মোদি?

    ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

    তুরস্কের মতো ভূমিকম্পে ঢাকায় তিন লাখ প্রাণহানি হবে: বিশেষজ্ঞ

    বিজ্ঞাপন

    সর্বাধিক পঠিত
    • বৃহস্পতির কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান আরো ১২টি গ্রহ আবিষ্কার
      ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতি। এই গ্রহের কক্ষপথে ঘুরছে আরো ১২টি গ্রহ। সম্প্রতি সেগুলোর সন্ধান পেয়েছেন আমেরিকার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতি গ্রহ...
    • কেন গবেষণা বলছে কাক মানুষের থেকে উত্তম প্রাণী?
      ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      কাককে ভয় দেখাবার জন্য যে কাকতাড়ুয়া বা স্কেয়ারক্রো শস্যজমিনে স্থাপন করা হয়, তার প্রভাব অল্প সময় থাকে। কাক যখন বুঝে...
    • প্রাচীন পৃথিবী থেকে মুসলিম বিশ্বে পবিত্র পতিতার ইতিহাস
      ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      সমাজে নারীদের যৌনবৃত্তি আজ নতুন কিছু নয়। অর্থ, আশ্রয়ের বিনিময়ে যৌনতা বিক্রি বা বাধ্য করার ইতিহাস সুপ্রাচীন। ইতিহাসবিদ ভিন্টারনিৎসের মতে...
    • গাছেরাও ঘুমায়, ঘুম থেকে জেগেও ওঠে: বিজ্ঞানীদের চমকে দেওয়া গবেষণা
      ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      গাছেরও যে প্রাণ আছে, আজ থেকে ১০০ বছরেরও আগে তা প্রথম পরীক্ষা করে দেখিয়েছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু। প্রাণ থাকলেই যে তার...
    • দেবতাদের সন্তুষ্টিতে নীলনদে হস্তমৈথুন করত মিশরীয়রা, করত বীর্যদান
      ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩
      By ডেস্ক রিপোর্ট
      বিশ্বের সবচেয়ে সুদীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ইতিহাস মিশরের। সভ্যতার প্রাচীন যুগের ইতিহাস পড়তে গেলে যে দেশের নাম সবার আগে আসে তা...
    আজকের ভিডিও
    https://youtu.be/FQxdEl-lIsk
    আমাদের সম্পর্কে
    আমাদের সম্পর্কে

    স্টেট ওয়াচ, বাংলাদেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণামূলক একটি প্রয়াস।
    বিস্তারিত...

    ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

    Donate Us!
    statewatch.net (Karigor Media Network), Hamburg, Germany. Email: statewatch.sa@gmail.com © ২০২৩ State Watch. Designed by @.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.