হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ চোরাই গাড়ি সিন্ডিকেটের দুই সদস্যকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (১৬মার্চ) গোয়েন্দা পুলিশের ঢাকার একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এ সময় তাদের নিকট থেকে তিনটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়। আটককৃতরা হচ্ছেন, মাধবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল পাঠান ও হবিগঞ্জ শহরের সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ফার্মেসি ব্যবসায়ী রুবেল।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাসুক আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চোরাই গাড়ি ক্রয় করে এখানে এনে বিক্রি করছিল। ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার ভোর সকালে শহরে অভিযান চালায়।
এ সময় সদর হাসপাতালের সামনে মা ফার্মেসীর সত্ত্বাধিকারী রুবেল আহমেদকে আটক করে। রুবেল অনন্তপুর এলাকার বাসিন্দা মহিউদ্দিনের ছেলে। তার নিকট থেকে একটি চোরাই প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়। পরে তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে তার অন্যতম সহযোগি শ্যামলী এলাকার বাসিন্দা রহমান আলীর ছেলে তারেকুল ইসলাম অলির বাসা থেকে আরও একটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়। অভিযানের খবর পেয়ে তারেক পালিয়ে যায়।
রুবেলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাধবপুরে অভিযান চালিয়ে তার আরেক সহযোগী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল পাঠানকে আটক করা হয়। তাকে কৃষ্ণনগরে তার বাসা থেকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে মাধবপুর থেকে আরও দুইটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের পাশাপাশি ভিন্নমতের ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া একশ্রেণীর নেতাকর্মীর চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অপহরণ, ধর্ষণ, প্রশ্নফাঁসসহ নানা কার্যকলাপের কারণে নিয়মিতই আলোচনায় থাকছে ছাত্রলীগ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক, শিক্ষাবিদ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা মনে করছেন, সম্পদ উপার্জনে অধিক মনোযোগী হওয়াই ছাত্রলীগের বেপরোয়া ও নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ার মূল কারণ। অর্থবিত্ত অর্জনের লক্ষ্য থেকেই বিভিন্ন সময় তারা বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। অন্যদিকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেয়া এবং ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে আইনানুযায়ী শাস্তি না হওয়ায় তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কমছে না। এছাড়া অনুপ্রবেশকারীরাও নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তারা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯০৭
আপনার মতামত জানানঃ