জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সফরে আসবেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান। তাদের মধ্যে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে সফরকে সামনে রেখে যারা মোদিবিরোধী মিছিল-মিটিং করছে কিংবা করবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ শক্তভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান (ভারপ্রাপ্ত ডিএমপি কমিশনার) মো. মনিরুল ইসলাম। রোববার (১৪ মার্চ) বাংলাদেশে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানের আগমন উপলক্ষে আয়োজিত নিরাপত্তা ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা এসব মিছিল-মিটিং করছে তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে শক্তভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান চলাকালে কোনো ধরণের রাজনৈতিক কর্মসূচি না দিতে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, অনুষ্ঠান চলাকালীন ১৭ থেকে ২৬ মার্চ রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে কিছুটা ট্রাফিক সমস্যা হতে পারে। এ কারণে অফিস-আদালত কিংবা পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময়ের আগেই বের হওয়ার অনুরোধ করছি। রাষ্ট্রের সম্মানের কথা ভেবে জনগণের এইটুকু স্যাক্রিফাইস করতে হবে।
এদিকে শুক্রবার (১২ মার্চ) বিকেলে প্রেসক্লাবের ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে আসার প্রতিবাদে রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে যুব অধিকার পরিষদ। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয় ‘ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী’ স্লোগান দিয়ে। সেখান থেকে সাম্প্রদায়িক মোদির আগমন বন্ধে তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সাম্প্রদায়িক মোদিকে এনে বঙ্গবন্ধুকে, দেশের মানুষকে অপমান করবেন না। জাতীয় স্বার্থে তার সফরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন। মোদি বাংলাদেশের বন্ধু নয় উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, তিনি ভারতে হিন্দুত্ববাদ উস্কে দিয়ে মুসলমানদের শেষ করছে। নিজ ধর্মের লোকজনকেও প্রতিবন্ধকতায় ফেলছেন তিনি।
সমাবেশে নুরুল হক নুর বলেন, ‘আপনারা ভারতের লেজুড়বৃত্তি করতে গিয়ে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ-অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করছেন। দেশের প্রশাসন থেকে রাজনীতি আজকে সব জায়গায় ভারত বিভিন্নভাবে হস্তক্ষেপ করছে। এর ফলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা দরকার হলে জীবন দিবে তবুও বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ভূলুণ্ঠিত হতে দিবে না।’
নুর আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সাথে সু-সম্পর্ক দরকার। সে সম্পর্ক হবে জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে, জনগণের ন্যায্যতার বিরুদ্ধে। সীমান্তে যারা প্রতিনিয়ত আমাদের নিরীহ ভাই-বোনদের রক্ত ঝরাচ্ছে, যারা ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ায় উগ্র হিন্দুত্ববাদের পৃষ্ঠপোষক সেই নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের মানুষ স্বাগত জানাবে না।’
বিক্ষোভ মিছিল থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলে ছাত্র অধিকার পরিষদ ও যুব অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৪৫৫
আপনার মতামত জানানঃ