করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ইতালিতে আগামী সোমবার (১৫ মার্চ) থেকে স্কুল, দোকানপাট ও রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি করোনার নতুন ঢেউ সম্পর্কে সতর্ক করার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে- রোম ও মিলানসহ দেশটির অর্ধেকের বেশি অঞ্চলে স্কুল, দোকানপাট ও রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে। কর্মক্ষেত্রে যাওয়া, স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে, খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব ইস্টার সানডের ছুটিতে করোনার সংক্রমণ রোধে আগামী ৩ এপ্রিল থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশটিতে সবকিছুই বন্ধ থাকবে।
এ দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মারা গিয়েছেন কমপক্ষে এক লাখ মানুষ। বৃটেনের পরে ইউরোপের মধ্যে এ দেশটিতেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ মারা গিয়েছেন। এখানে টিকাদান কর্মসূচি ব্যাহত হচ্ছে বিলম্বের কারণে। একই অবস্থা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্য স্থানেও। গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাঠানো অক্সফোর্ড/এস্ট্রাজেনেকার আড়াই লাখ ডোজ টিকা রপ্তানি ব্লক করে দিয়েছে ইতালি। স্থানীয় পর্যায়ে টিকা স্বল্পতার সমাধান করার জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওদিকে অক্সফোর্ড/এস্ট্রাজেনেকার টিকা নেয়ার পর রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার ভয়ে এই টিকা নেয়া স্থগিত করেছে বুলগেরিয়া, ডেনমার্ক ও নরওয়ে। তবে রক্ত জমাট বাঁধার বিষয়টি সত্য নয় বলে শুক্রবার জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা বলেছে, কোন দেশেরই উচিত হবে না টিকা বন্ধ করা।
যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইচআরএ) বলেছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সমস্যা তৈরি করেছে বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। লোকজনের এই টিকা নেওয়া উচিত। যুক্তরাজ্যে ১ কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছে বলে জানিয়েছে এমএইচআরএ। ইউরোপীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, রক্ত জমাট বাঁধার সঙ্গে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার যোগসূত্র থাকার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
এদিকে ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি বলেন, ‘আমি জানি, বিধিনিষেধের ফলে আপনার সন্তানদের পড়াশোনা, অর্থনীতি ও প্রত্যেকের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়বে। কিন্তু, পরিস্থিতির আরও অবনতি এড়ানোর জন্য এগুলো প্রয়োজনীয়।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এই বিধিনিষেধের ফলে আমাদের সন্তানদের পড়াশোনা, অর্থনীতি এবং প্রত্যেকের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে এটা আমি জানি। তবে একটি অবনতিশীল পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য এসব পদক্ষেপ অত্যাবশ্যক।
গত ছয় সপ্তাহে দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন ২৫ হাজারের বেশি মানুষ। সেখানে বিভিন্ন অঞ্চলে হাসপাতাল এবং আইসিইউগুলোতে রোগী উপচে পড়ছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৪৩০
আপনার মতামত জানানঃ