চাঁদে গবেষণার জন্য একসঙ্গে একটি লুনার স্টেশন তৈরি করবে রাশিয়া ও চীন। মহাকাশে উপস্থিতি বাড়ানোর লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর দেশ দুটি। এ নিয়ে একটি সমঝোতা পত্রে সই করেছে দুই দেশ।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশ মিলে চাঁদে একটি বৈজ্ঞানিক কেন্দ্র তৈরি করবে। সেখানে চাঁদের মাটিতে ও তার কক্ষে জটিল গবেষণা করার পরিকাঠামো থাকবে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশ একসঙ্গে মিলে পুরো পরিকল্পনা করেছে এবং তার রূপায়ণও একসঙ্গে হবে।
২০২০ সালের জুলাই মাসে রাশিয়ার মহাকাশ-গবেষণা সংস্থার প্রধান দিমিত্রি রগোজিন বলেছিলেন, তার দেশ ও চীন একসঙ্গে চাঁদে গবেষণা করতে চায়। সেজন্যই চাঁদে একটি মহাকাশকেন্দ্র তৈরি করতে চান তারা। তিনি জানিয়েছিলেন, মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে চীন সম্প্রতি খুবই উন্নতি করেছে। তাই তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চললে রাশিয়া লাভবান হবে।
২০১৪ থেকেই রাশিয়া ও চীন কাছাকাছি এসেছে। সেসময় রাশিয়ার ইউক্রেন দখল করে নেয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ হওয়া শুরু। চীনের সঙ্গেও নানা কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। তারপরই চীন ও রাশিয়া নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে।
ফ্রান্স এখন মহাকাশ নিয়ে সামরিক মহড়া শুরু করেছে। তাদের সাহায্য করছে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। এই পরিপ্রেক্ষিতে চাঁদে চীন ও রাশিয়ার যৌথ মহাকাশকেন্দ্র খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিকে মঙ্গলে পাঠানো নাসার রোভার পারসিভিয়ারেন্স সফলভাবে নিখুঁত স্পর্শের দুই সপ্তাহ পরে লাল গ্রহের বুকের ওপরে প্রথমবারের মতো ‘শর্ট ড্রাইভ’ নিয়েছে। এই মিশনের বিজ্ঞানীরা একথা জানিয়েছেন। এটি একটি মাইলফলক বলে তারা উল্লেখ করেছেন।
বিজ্ঞানীরা জানান, ছয় চাকাযুক্ত রোভারটি জেজোরো ক্রেটারের মধ্যে আধা ঘণ্টা ধরে মোট ৬ দশমিক ৫ মিটার (২১.৩ ফুট) দূরত্ব গিয়েছিল। একটি বহুপ্রাচীন ও শুষ্ক হ্রদের উপরিভাগ দিয়ে এই পথ অতিক্রম করে পারসিভিয়ারেন্স।
জানা গেছে, লস অ্যাঞ্জেলেসের নিকট নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে (জেপিএল) মিশন ম্যানেজারদের কাছ থেকে দিকনির্দেশনা পেয়ে রোভারটি ৪ মিটার (১৩.১ ফুট) সামনে ঘুরে, প্রায় দেড়শ ডিগ্রি বাম দিকে ঘুরে আরো ২ দশমিক ৫ মিটার (৮.২ ফুট) পিছনে যায়। বিজ্ঞানীরা তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এটি অবিশ্বাস্যরূপে ভালোই গেছে। রোভারের তোলা একটি ছবিতে প্রথম ড্রাইভের পরে লালচে, বালুকাময় মঙ্গলের মাটিতে চাকার চিহ্নগুলো দেখা যায়।
আশেপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্যের আরো একটি উজ্জ্বল চিত্র দেখা যায়। মিশনে যুক্ত বিজ্ঞানীরা জানান, রোভারটি প্রতিদিন ২০০ মিটার পথ অতিক্রম করতে সক্ষম। এখনো পর্যন্ত এই রোভারের হার্ডওয়্যার সঠিকভাবে কাজ করছে বলে জানা গেছে। কোনো রকম যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায়নি। পারসিভিয়ারেন্স মঙ্গল থেকে শিলা নমুনা নেবে মাটি ড্রিল করে। পৃথক মিশনে সেগুলো পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে। এরপর গবেষণা করে দেখা হবে সেখানে কখনো প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৯৪৭
আপনার মতামত জানানঃ