ভারতের আগ্রার তাজমহলে হঠাৎই বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) সকালে বোমা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিনগুলোর এদিনও সকাল থেকে পর্যটকদের ভিড় ছিলো। অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি ফোন করে পুলিশকে খবর দেয় যে, বোমা রাখা রয়েছে তাজমহলে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তে খালি করে দেওয়া হয় তাজমহল, বন্ধ করে দেওয়া হয় সব প্রবেশপথ।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে তাজমহলে পৌঁছে যান বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা। তার পর গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি শুরু হয়। সিআইএসএফ ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন স্থানে সন্ধান চালান। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে মনে করা হয়েছিল আলিগড় থেকে ফোন আসছে, পরে ফিরোজাবাদ থেকেও ফোন পাওয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশকর্মীরা। তাজমহলের ভেতরে বোমা থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে কর্তৃপক্ষ। তবে এমন কোনো কিছু না থাকায় স্থানীয় সময় বেলা ১১টার কিছু সময় পর থেকেই আবারও পর্যটকদের সেখানে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে তাজমহল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি উড়ো ফোন আসে। অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি জানান তাজমহলে বোম রয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ফোরণ হবে, এমনটাও জানিয়েছিলেন তিনি। এরপরেই সতর্কতা জারি করা হয় সৌধ চত্বরে। পর্যটকদের বাইরে বের করে আনা হয় দ্রুত। সমস্ত গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগ্রা পুলিশের একটি টিম এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা CISF-র আধিকারিকেরা এলাকা তল্লাশি চালান। আনা হয় পুলিশের স্নিফার ডগ। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বম্ব স্কোয়াড।
জানা গিয়েছে, এদিন তাজমহল চত্বর থেকে একটি ব্যাগ মেলে। ওই ব্যাগে বোমা রয়েছে আশঙ্কা করেছিলেন পুলিশ কর্তারা। কিন্তু ব্যাগ থেকে কোনও বোমা পাওয়া যায়নি। এরপরেই যে নম্বর থেকে ফোনটি করা হয়েছিল তাও ট্রেস করতে শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদ থেকে এদিন ফোনটি করা হয়েছিল। আগ্রার পুলিশ সুপার (প্রোটোকল) শিব রাম যাদব বলেন, যে ব্যক্তি ফোন করেছিল, সে মিলিটারির প্রতি রাগ থেকেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। সে মিলিটারিতে চাকরির বহু চেষ্টা করেও তা পায়নি।
পুলিশ কর্মকর্তা সতিশ গনেশ বলেন, তাজমহলের কোথাও বোমার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আমাদের ফিল্ড ইউনিট সেখানে বোমা থাকার কোনো খবর দেয়নি। আমি সবাইকে ৯৯ ভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, এই ফোনকলটি ছিল পুরোপুরিই ধাপ্পাবাজি। তবে আমরা পরিস্থিতি নজরে রাখছি।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়। অতীতেও তাজমহলে বোমা রয়েছে, এই ধরনের খবর জানিয়ে ফোন করা হয়েছিল। সেই সময়েও পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীরা তল্লাশি চালিয়ে দেখেছিলেন বিষয়টা ভুয়ো। সেইবারও ঘটনাস্থলে আনা হয়েছিল স্নিফার ডগ। তবে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কিন্তু কোনো বোমা মেলেনি। সেই জন্য সার্চ অপারেশন বন্ধ করা হয়েছিল।
করোনা মহামারির কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে পর্যটকদের জন্য বন্ধ ছিল তাজমহল। দীর্ঘ ৬ মাস বন্ধ থাকার পর গত সেপ্টেম্বরে তাজমহল পুনরায় খুলে দেয়া হয়। তবে দীর্ঘদিন পর এটি খুলে দেয়ার পর পর্যটকদের সেখানে নানা ধরনের বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হচ্ছে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৪১৫
আপনার মতামত জানানঃ