ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার হবিরড়বাড়ি রেঞ্জের অধীনে বনাঞ্চলের ভিতর করাতকল বসিয়ে অবৈধভাবে গাছ কেটে বনাঞ্চল উজাড় করা হচ্ছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি এবং ভিডিও করে ফেরার পথে অতর্কিত হামলার শিকার হন সংবাদকর্মীরা। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের হামিদের মোড় এলাকায় আবুল কাশেমের ‘স’ মিলে এ ঘটনা ঘটে। তারা হলেন- দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার ভালুকা উপজেলা প্রতিনিধি মো. বিল্লাল হোসেন ও স্থানীয় একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের নারী সাংবাদিক লিমা আক্তার।
জানাযায়, ইউনিয়নের খন্দকারপাড়া হামিদের মোড় এলাকায় বনের ভেতরে আবুল কাশেমের অবৈধ করাতকলের মাধ্যমে বনাঞ্চল থেকে মনোহরপূর মৌজায় বনের গেজেটভুক্ত ১৮৭ দাগে আজিম উদ্দিনের চালা এবং ১৬৭ দাগে সোলায়মানের চালা থেকে প্রায় ৭-৮শত গাছ কেটে এনে দেদারসে চেড়াই করছে ।
সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন বিএমএসএফকে জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি প্রায় ৭০০/৮০০ গজারি ও আকাশি গাছ কেটে করাতকলের সামনে স্তূপ করে রাখা হয়েছে এবং সেগুলো একটা একটা করে চেড়াই করছে। এসবের ছবি এবং ভিডিও করে ওখান থেকে রওনা হওয়ার সময় মিল মালিক কাশেমের ছেলে সোহাগসহ কয়েকজন হঠাৎ করে আমার উপর হামলা করে। আমাকে গাছের সাথে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমার সাথে থাকা নারী সাংবাদিকের হাত থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে তথ্যচিত্রের সকল ভিডিও ফুটেজ ডিলেট করা হয়েছে। পরে আমাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এসে আমাদের উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ করলে উল্টে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করবে বলে হুমকি প্রদান করে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিল মালিকের ছেলে সোহাগের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই সাংবাদিকদের অসম্পন্ন সংবাদের কাজটি সকল সাংবাদিক/গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীলতার সাথে সম্পন্নের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মফস্বলের প্রত্যেকটা সাংবাদিক পরিচিত। সবাই সবাইকে চেনে। ওখানে কোন সংবাদ হলে তাকে টার্গেট করা সহজ। ঢাকায় সেটা সম্ভব না। মফস্বলের সাংবাদিক প্রতি মুহুর্তে, প্রতিদিনই ঝুঁকির মধ্যে থাকে।মফস্বল সাংবাদিকদের কোনো ধরনেরই নিরাপত্তা নাই৷ আর্থিক বা শারীরিক কেনোটাই না৷ অধিকাংশ সাংবাদিক বেতন পান না আবার প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও দুর্বৃত্তদের চাপের মুখে থাকতে হয়। শীঘ্রই পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হবে – এমন আশাও করেছন না বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২১২৫
আপনার মতামত জানানঃ