সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুললে জামা-জুতা কেনার টাকা পাবে শিক্ষার্থীরা। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘নগদ’ এর মাধ্যমে এ অর্থ অভিভাবকদের মোবাইল নম্বরে পাঠানো হবে। কিডস অ্যালাউন্স হিসেবে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে ১ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ ভাতা ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের জামা-জুতা কেনার জন্য কিডস অ্যালাউন্স বাবদ এক হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। আমরা সব শিক্ষার্থীদের তথ্য যুক্ত করেছি। বিদ্যালয় খুললে নগদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে এ অর্থ পৌঁছে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এখন থেকে নগদের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির অর্থ দেওয়া হবে। আজ ৮ উপজেলার ৮৬ হাজার ৫২ জনের গত তিন মাসের উপবৃত্তি দেওয়ার মাধ্যমে এ কার্যক্রম উদ্বোধন হল। পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলায় নগদের মাধ্যমে উপবৃত্তির অর্থ পাঠানো হবে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, গত তিন মাস ধরে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৪৫০ টাকা করে দেওয়া হবে। আট উপজেলার জন্য তিন কোটি ৬৪ লাখের বেশি অর্থ বিতরণ করা হবে। আগে শিওর ক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তির অর্থ দেওয়া হলেও সেখানে শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধন, অভিভাবকদের জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল না বলে নানা জটিলতা তৈরি হতো। বর্তমানে অনেক স্বল্প ব্যয়ে নগদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে এ অর্থ পৌঁছে দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি কর্মসূচি প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারে একটি মাইলফলক। শিশুরাই জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজের আগামীর সৈনিক। প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে ভবিষ্যৎ জাতি গঠনের সোপান। আজকের শিশুরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। ওদের হাত ধরেই বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে। এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, ডাক বিভাগের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন এবং ‘নগদ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে সরকারি ছুটির সঙ্গে মিল রেখে স্কুল খোলার প্রস্তুতি নিতে স্কুল-কলেজগুলোতে আরও সময় দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্কুল খোলার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। স্কুল খোলার জন্য স্কুলগুলো কী ধরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে তা দেখার জন্য একাধিক কমিটিও কাজ করছে।
কয়েক দফায় বাড়িয়ে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকার সিদ্ধান্ত রয়েছে। আর আগে এ সময় ছিল ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু স্কুলগুলোতে ছুটি বাড়ায় স্কুলগুলোর প্রস্তুতিতেও ভাটা পড়ে। স্কুলগুলোর প্রস্তুতি দেখতে সম্প্রতি ঢাকার বাইরের কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেছেন মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।
তিনি বলেন, সব প্রতিষ্ঠানকে খোলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে যাতে সরকারি নির্দেশনা পাবার সঙ্গে সঙ্গে খোলা যায়। যেসব প্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনে খুলতে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/২১২০
আপনার মতামত জানানঃ