চার মাস ধরে পাওনা ইস্যুতে চুক্তির অর্ধেক বিদ্যুৎ দেয়ার পর এবার বাংলাদেশকে পুরোদমে বিদ্যুৎ সরবরাহ দিচ্ছে ভারতের বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানির বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বৃহস্পতিবার বলেছেন, আদানিকে আমরা নিয়মিত পাওনা পরিশোধ করছি এবং আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি। তবে কি পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে এবং অতীতের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।
বিপিডিবি’র ডাটা অনুযায়ী, দুই সপ্তাহ আগের চেয়ে আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি করেছে। উল্লেখ্য, ঢাকা কয়েক দফা পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় নভেম্বরে ভারতের ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত ১৬০০ মেগাওয়াট শক্তিসম্পন্ন কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ অর্ধেক করে দেয় আদানি পাওয়ার লিমিটেড। ওই সময়ে বাংলাদেশে শাসকগোষ্ঠীর পরিবর্তনে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মোকাবিলা করছিল বাংলাদেশ। তবে নতুন করে সরবরাহ বৃদ্ধি করায় ঘামঝরানো গ্রীষ্মের কয়েক মাস বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে সহায়ক হবে বাংলাদেশের জন্য। এই গ্রীষ্মে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও উপরে উঠে যায়।
এ খবর প্রকাশের পর কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। মুম্বইতে এর শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পায় শতকরা ২ ভাগ। এ বছরে এর দাম পড়েছে শতকরা প্রায় ৫ ভাগ। উল্লেখ্য, এক পর্যায়ে আদানির কাছে বাংলাদেশের বকেয়ার পরিমাণ ৮৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানে তা ৮০০ মিলিয়ন ডলার। এ বিষয়ে জানেন এমন সূত্র বলেছেন, বাকি এই অর্থ আগামী ৬ মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তারা আদানির বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রতি মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে আসছে। তাই তারা এখন দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বলেছে।
গত ডিসেম্বরে আদানির একটি সূত্র বলে, আদানিকে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। তবে সেই সময় বিপিডিবি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, প্রকৃত পরিশোধযোগ্য অর্থের পরিমাণ প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলার।
বিদ্যুতের দাম কীভাবে নির্ধারণ করা হবে, তা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যেই বিরোধ ছিল। ২০১৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী, বিদ্যুতের মূল্য দুটি সূচকের গড় থেকে নির্ধারিত হয়েছিল। রয়টার্স বলছে, আদানির বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহ করা ভারতের অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুতের মূল্য থেকে ৫৫ শতাংশ বেশি।
আপনার মতামত জানানঃ