পাচার করা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশকে পূর্ণ সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য। এছাড়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে সব দলের সমান অংশগ্রহণ আশা করে ইউরোপের দেশটি। সূত্র: বণিক বার্তা।
পাচার করা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশকে পূর্ণ সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য। এছাড়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে সব দলের সমান অংশগ্রহণ আশা করে ইউরোপের দেশটি।
ঢাকা সফররত যুক্তরাজ্যের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট এসব কথা বলেন। গতকাল তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে তার কার্যালয়ে আলাদা বৈঠক করেন।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, অলিগার্ক ও আমলাদের দ্বারা পাচার করা অর্থ ফেরত আনা অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’ সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বরাতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বছরে ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশে পাচার হয়েছে।’
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচন কমিশন ঠিক করতে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের বর্ণনা দেন।
এদিকে ক্যাথরিন ওয়েস্টের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া করে যেতে চায়। আমাদের কোনো রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। আওয়ামী লীগের বিষয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা কোনো পক্ষ থেকেই তোলা হয়নি। এ বিষয়ে কোনো আলাপ হয়নি।’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর ক্যাথরিন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে সব দলের সমান অংশগ্রহণ আশা করে যুক্তরাজ্য। পরবর্তী ধাপে যাওয়ার যাত্রায় যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের জনগণকে সহায়তা করতে চায়। অন্তর্বর্তী সরকার যেসব কাজ করছে, সব ক্ষেত্রে আমরা তাদের সহায়তা করতে চাই। এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার কী ধরনের সহায়তা চায় সেই অনুযায়ী পরবর্তী পর্যায়ে বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করার চেষ্টা করবে যুক্তরাজ্য।’
ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, জবাবদিহিতা নিশ্চিত ও জাতীয় আপসরফার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এসব উদ্দেশ্য সাধনে যুক্তরাজ্য সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আমরা জানি, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের জনগণের সঙ্গে জনগণের খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আমাদের খুবই জোরালো ও অবিচল সম্পর্ক রয়েছে, সে জায়গা থেকে আমরা ঘনিষ্ঠ অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা ও সেই সম্পর্কের ভিত্তিতে নতুন ক্ষেত্র তৈরি করতে চাই। আমরা জানি, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায় এবং জাতীয় পুনর্মিলনকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর এ বিষয়ে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’
ক্যাথরিন ওয়েস্ট শনিবার দুদিনের সফরে ঢাকায় আসেন। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর যুক্তরাজ্য সরকারের কোনো জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধির এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, শুভেচ্ছা সফর হলেও ক্যাথরিন ওয়েস্টের ঢাকায় অবস্থানের সময় আলোচ্যসূচিতে ভারত মহাসাগরীয় কৌশল গুরুত্ব পাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, রাজনীতি, অর্থনীতি, মৌলিক মানবাধিকারসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মৌলিক বিষয়বস্তু এবং সমসাময়িক বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক বিষয়গুলোও আলোচনায় আসার কথা রয়েছে।
আপনার মতামত জানানঃ