ভারতে `জয় শ্রী রাম’ বলে খাবার গ্রহণ করতে বলায় এক মুসলিম মহিলা খাবার খেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন! ডকুমেন্টিং অপরেসন এগেনেস্ট মুসলিমস (ডোয়াম) সাইটে এক এক্স বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, একজন হিন্দু ব্যক্তি মুম্বাইয়ের টাটা হাসপাতালের বাইরে খাবার বিতরণ করছিলেন। তখন একজন মুসলিম মহিলাকে তিনি খাবার দিতে অস্বীকার করেন। কারণ, তিনি “জয় শ্রী রাম” বলতে অস্বীকার করেছিলেন।
ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, হিজাব পরা এক মুসলিম মহিলা খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। যখন তার খাবার নেয়ার পালা এলো তখন হিন্দু লোকটি তার প্রতি একটি বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করে বলেন, “জয় শ্রী রাম বললেই তুমি খাবার পাবে।” তখন মহিলাটিও তার ধর্ম ত্যাগ করে জয় শ্রী রাম বলবে না বলে জানান।
ডোয়ামের এক্স বার্তায় উল্লেখ করা হয়, ইসলামোফোবিয়া ভারতে এতটাই প্রবল যে, এমনকি সাহায্যপ্রার্থী দরিদ্র মুসলমানদের প্রতিও এভাবে বৈষম্য করা হয়!
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর থেকে, ভারতের ২০ কোটি মুসলমানদের জীবনযাপন অশান্ত হয়ে পড়েছে।
সন্দেহভাজন গরু ব্যবসায়ীদের গণধোলাই দিয়ে মেরেছে কিছু উগ্র হিন্দু গোষ্ঠী এবং মুসলমান মালিকানাধীন ছোট ব্যবসাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে তারা।
মসজিদের বিরুদ্ধে পিটিশন ফাইল করা হয়েছে। মুসলিম নারীদের অনলাইন “নিলাম” করা নিয়ে ইন্টারনেটে ট্রল করা হয়েছে।
ডানপন্থী গোষ্ঠী এবং মূলধারার কিছু গণমাধ্যম “জিহাদ” – “লাভ জিহাদ” এর অভিযোগ দিয়ে ইসলামোফোবিয়াকে উস্কে দিয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, মুসলিম পুরুষদেরকে বিয়ের মাধ্যমে হিন্দু নারীদের ধর্মান্তরিত করার মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এবং মুসলিম বিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তব্য বেড়েছে- তার তিন চতুর্থাংশ বিজেপি শাসিত অঞ্চলগুলোতে ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
“ভারতের মুসলমান জনগোষ্ঠী যেন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে পড়েছেন, তারা নিজের দেশেই অদৃশ্য সংখ্যালঘু,” এ কথা বলেছেন জিয়া উস সালাম, যিনি ‘বিয়িং মুসলিম ইন হিন্দু ইন্ডিয়া’ বইয়ের লেখক। কিন্তু বিজেপি এবং মোদি ভারতে সংখ্যালঘুদের সাথে দুর্ব্যবহারের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
প্রধানমন্ত্রী নিউজউইক ম্যাগাজিনকে বলেছেন, “এগুলি কিছু লোকের বক্রোক্তি যারা তাদের বিভ্রমে বাইরে গিয়ে মানুষের সাথে মেশার প্রয়োজন বোধ করে না। এমনকি ভারতের সংখ্যালঘুদের কাছেও এসব ব্যাখ্যা অচল।”
আপনার মতামত জানানঃ