যুক্তরাজ্যের হিথরো বিমানবন্দর থেকে যাত্রী নিয়ে আবারো বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে যাত্রী নিয়ে বিমানটি অবতরণ করে। এ সময় বিমানে থাকা ৬০ যাত্রীর মধ্যে ৪৩ যাত্রী সিলেটে নামেন। বাকি ১৭ যাত্রী নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফ্লাইটটি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
যুক্তরাজ্য ফেরত এই ৪৩ যাত্রীকে বিমানবন্দরে নামার পর প্রশাসনের সহযোগিতায় তাদের নির্ধারিত দুটি হোটেলে নেয়া হয়েছে এবং তারা ১৪ দিন সেখানেই কোয়ারেন্টিনে থাকবেন বলে জানা গেছে।
এ জন্য সিলেটের জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বেশ কয়েকটি হোটেল নির্ধারণ করা হয়েছে। হোটেলগুলোয় অবস্থানকালে সব খরচ যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীরা বহন করবেন। এ ছাড়া নির্ধারিত হোটেলগুলোয় অবস্থান করতে না চাইলে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সিলেট শহরতলির খাদিম বিআরডিটিআইয়ে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) সংক্রমণের কারণে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ নিয়ে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধেরও দাবি উঠেছে। যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন ধরন (স্ট্রেইন) সংক্রমণ বৃদ্ধির পর বাংলাদেশ ভ্রমণ–নিষেধাজ্ঞা জারি না করলেও ১ জানুয়ারি থেকে যুক্তরাজ্যফেরত সব যাত্রীকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার এবং যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসা যাত্রীদের নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা রয়েছে। এজন্য সিলেটের জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বেশ কয়েকটি হোটেল নির্ধারণ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীদের জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত হোটেলগুলোয় ১৪ দিন থাকার নির্দেশনা আছে। এ ছাড়া নির্ধারিত হোটেলগুলোয় অবস্থান করতে না চাইলে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সিলেট শহরতলির খাদিম বিআরডিটিআইয়ে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। গেলো ২৮ ডিসেম্বর মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওসমানী বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট আসে। অন্যদিকে, সপ্তাহে একটি ফ্লাইট সিলেট থেকে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সর্বশেষ গেলো ৮ জানুয়ারিতে ২৮৫ জন, ৪ জানুয়ারিতে ৪১জন, ২৪ ডিসেম্বর ২০২ জন, ২৮ ডিসেম্বর ২০২ জন এবং ৩১ ডিসেম্বর ২৩৭ যাত্রী নিয়ে বিমানের তিনটি ফ্লাইট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে।
এর আগে দুই দফায় যুক্তরাজ্যফেরত ৬৯ যাত্রী সিলেটে এসে কোয়ারেন্টিনে আছেন। যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীদের করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে প্রশাসনের সহযোগিতায় বিমানবন্দর থেকে নির্দিষ্ট পরিবহনে করে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, যুক্তরাজ্য আসা এখনো অব্যাহত থাকায় দেশের করোনা পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে সিলেটে শাবিপ্রবির গবেষকরা করোনার ৩০ ধরন শনাক্ত করেছেন যার মধ্য ২৪ ধরনই মিলে যায় যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশের করোনার নতুন ধরনের সাথে। আর বাকি ৬ ধরন যা বিশ্বের কোথাও এখনো শনাক্ত হয়নি। এনিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একইসাথে বিমান বন্দরে যুক্তরাজ্য ফেরত যাত্রীদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থাপনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা। সরকারের যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাবে দেশে করোনা পরিস্থিতি বিপর্যয়ের গুরুতর অবস্থানে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
এসডাব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬০২
আপনার মতামত জানানঃ