ইসরায়েলি বিভিন্ন বাহিনীর হাতে গত চলতি বছরে অন্তত ৮৮০ ফিলিস্তিনি শিশু আটক হয়েছে। গতকাল সোমবার (২০ নভেম্বর) ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটি নামের একটি বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। খবর আনাদোলু।
জরিপকৃত তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে প্রিজনার্স সোসাইটি।
সেখানে বলা হয়, কোনো প্রকার আইনের তোয়াক্কা না করেই আটক হয়েছে ২৬ শিশু। বিনা বিচারে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে আরো ২০০ শিশু।
সংস্থাটির তথ্য মতে, হামাস-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর থেকে অন্তত ১৪৫ শিশুকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর ইসরায়েল পাল্টা হামলা শুরু করে। ইসরায়েলের এই হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে বেসামরিক নিরীহ মানুষ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ৪৫ দিনে অন্তত ১৩ হাজার সাধারণ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যারমধ্যে ৯ হাজারের বেশি নারী ও শিশু।
এছাড়া ৩০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে, মাইক্রো ব্লগিং প্লাটফর্ম এক্সে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, যুদ্ধের সময় প্রতি ১০ মিনিটে গড়ে এক শিশু নিহত হয় ও দুজন আহত হচ্ছে।
আরো বলা হয়, সংঘাতের সময়ে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা মানবতার প্রতি বাধ্যবাধকতা ও অঙ্গীকার।
গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘের প্রাথমিক কাজগুলো সম্বন্বয় করে ইউএনআরডব্লিউএ। বর্তমানে বিদ্যালয়গুলোতে তারা ছয় লাখ ৭০ হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দিয়েছে। হামলা শুরুর পর থেকে সাহায্য সংস্থাটি অন্তত ৭০ জন কর্মীকে হারিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের আন্তঃসীমান্ত হামলার পর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে। ওই হামলায় এক হাজার ৪০০ জনের বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন।
এদিকে গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ১০ হাজার ২২ জনকে হত্যা করেছে। নিহতের মধ্যে চার হাজার ১০৪ শিশু ও দুই হাজার ৬৪১ জন নারী। এছাড়া আহত হয়েছে ২৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
আল-কুদরা আরো বলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় এক হাজার ৩০০ শিশুসহ প্রায় দুই হাজার ৩৫০ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক ঘণ্টায় ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজা শহরের তিনটি হাসপাতালকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। যার মধ্যে রয়েছে চক্ষু হাসপাতাল, মানসিক হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতাল।
এ মুখপাত্র জানান, ইসরায়েলি হামলায় তিনটি হাসপাতালে আট জন নিহত ও ১২৫ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি হামলার মুখে গাজা উপত্যকায় ২৩ লাখ মানুষ সব ধরনের মৌলিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তীব্র খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা সংকটে ভুগছেন তারা। ধ্বংস হয়ে গেছে বাড়িঘর। এছাড়া ইসরায়েলি স্থল হামলার পর থেকে কয়েক দফা ইন্টারনেটসহ সব ধরনের যোগাযোগ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়।
আপনার মতামত জানানঃ