ইসরাইলি হামলায় গাজার ধ্বংস হওয়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে এক হাজারেরও বেশি মানুষ আটকা পড়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রতিরক্ষা দল।
এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, আটকাপড়াদের অনেকে আহত অবস্থায় আছে আবার কেউ কেউ মারা গেছে। অনেককে আবার উদ্ধারও করা সম্ভব হয়েছে।
গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭৫০ জনের মতো ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরো অন্তত ৯ হাজার ৬০০ জন।
জাতিসঙ্ঘ জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলার কারণে অবরুদ্ধ গাজার ৫০ হাজারের মতো অন্তঃসত্ত্বা নারী মাতৃত্বকালীন ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। এদের মধ্যে ৫ হাজার ৫২২ জন আগামী মাসে সন্তান জন্ম দেয়ার কথা।
ফিলিস্তিনের জন্য জাতিসঙ্ঘের জনসংখ্যা তহবিলের প্রতিনিধি ডমিনিক অ্যালেন সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছে।
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানি অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এ ধ্বংসযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
জিলানি বলেন, ‘এটা একটি মানবাধিকার সঙ্কট। এটি এমন পরিস্থিতি যা গণহত্যার সমান। এটি মূলত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের একটি গণহত্যাই।‘
তিনি আরো বলেন, ফিলিস্তিনিদের নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান বছরের পর বছর ধরে একই রয়ে গেছে। এসময় তিনি ফিলিস্তিনিদের নিয়ে জাতিসঙ্ঘের রেজুলেশনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইন মানতে ইসরাইলিদের প্রতি আহ্বান জানান। জাতিসঙ্ঘের ওই রেজুলেশনে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের সাথে আগ্রাসী ইসরাইলকে সমান করে দেখার যেকোনো প্রচেষ্টা আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য।’
পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নি। এবং ঐতিহাসিকভাবে তারা বলে আসছে যে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডগুলোকে অবশ্যই দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাবের সাথে সঙ্গতি রেখে খালি করতে হবে।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরাইলের হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে। চলমান এ হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এদিকে, গাজা উপত্যকায় অন্তঃসত্ত্বা ৫০ হাজার নারী। মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিষয়ক তহবিল ইউএনএফপিএ বলেছে, এসব নারী মাতৃত্বকালীন তাদের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না। এর মধ্যে ৫৫২২ জন নারীর আগামী মাসে সন্তান প্রসবের সময়। ইউএনএফপিএ’র ফিলিস্তিনি বিষয়ক প্রতিনিধি ডোমিনিক অ্যালেন বলেন, নারীদের এই চূড়ান্ত সময়ে তাদের অবস্থা একবার কল্পনা করুন। তাদের নানা রকম জটিলতা হতে পারে। তাদের কাছে নেই কোনো অতিরিক্ত কাপড়চোপড়। নেই স্বাস্থ্যবিধি।
সামনের এক মিনিটে, এক ঘন্টায়, পরের দিনটি কিভাবে কাটবে তারা তা জানেন না। অ্যালেন আরও বলেন, হাসপাতালগুলো থেকে যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে অবরুদ্ধ গাজার তা আরও ভয়াবহ।
যেকোনো সময় ভয়ঙ্কর আক্রমণ চালাতে পারে ইসরাইল। ফলে পরিবেশ অনিরাপদ। এ জন্য মার্তৃত্ব বিষয়ক ওয়ার্ডে সেবা দিতে অনেক ধাত্রী যেতে পারছেন না। তাই হাসপাতালে প্রসব বেদনা নিয়ে যেসব নারী যাচ্ছেন, তাদেরকে আরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আপনার মতামত জানানঃ