সৌদি আরবের প্রথম নারী নভোচারী হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) মিশনে যোগ দিতে যাচ্ছেন রায়ানাহ বার্নাবি। সঙ্গে আছেন আরেক সৌদি পুরুষ নভোচারী আলি আল-কারনির। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাক্সিওম মিশন-২-এর জন্য মার্কিন কমান্ডার পেগি হুইটসন এবং পাইলট জন শফনারের সঙ্গে যোগ দেবেন রায়ানাহ ও আলি। বেশ কয়েকবার বিলম্বিত হওয়ার পর আগামী ২১ মে এই অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে। এই অভিযানের মাধ্যমে নতুন ইতিহাস গড়বেন দুই সৌদি নভোচারী।
৩৩ বছর বয়সী সৌদি নাগরিক বার্নাবি বায়োমেডিকেল সায়েন্সে দুটি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে স্নাতক এবং আলফাইসাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
এ ছাড়া গবেষণাগার বিশেষজ্ঞ হিসেবে বেশ খ্যাতি রয়েছে তার। ক্যান্সার স্টেম সেল গবেষণায় প্রায় এক দশকের মতো কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন রায়ানাহ।
প্রথম নারী মহাকাশচারী আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পাঠিয়ে নতুন ইতিহাস গড়ছে সৌদি আরবও। দেশটির স্তন ক্যান্সার বিষয়ের গবেষক রায়ানা বারনাবি স্পেস স্টেশনে সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন।
তার সঙ্গে ফাইটার পাইলট হিসেবে যোগ দিচ্ছেন সাউদি আলি আল কারনি। ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৫টা ৩৭ মিনিটে তাকে বহন করে মহাকাশ যানের পাড়ি দেয়ার কথা আকাশে। এর আয়োজন করেছে অ্যাক্সিওম স্পেস।
দ্য অ্যাক্সিওম মিশন ২ (এএক্স-২)-এর ক্রুরা স্পেসএক্স ফলকন ৯ রকেটের সাহায্যে কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে আকাশে উড়বেন। এ জন্য ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরালে আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। অভিযাত্রীদের এই টিমে আরও থাকছেন নাসার সাবেক নভোচারী পেগি হোয়াইটসন।
তিনি চতুর্থবারের মতো আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাচ্ছেন। পাইলট হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন টিনেসির ব্যবসায়ী জন শোফনার। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে তাদের অবস্থান করার কথা ১০ দিন।
এই স্টেশনে তাদের পৌঁছার কথা সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে। সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে বারনাবি বলেছেন, প্রথম নারী সৌদি আরবের নভোচারী হতে পেরে, ওই অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে খুব আনন্দ হচ্ছে। খুব সম্মানিত বোধ করছি।
মহাকাশ স্টেশনে যাওয়া তার কাছে শুধু গবেষণার জন্য আনন্দের এমন না। একই সঙ্গে সেখানে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবেন তা তিনি শিশুদের মধ্যে শেয়ার করতে চান।
অন্যদিকে আল কারনি একজন ফাইটার ক্যারিয়ার পাইলট। বলেছেন, সব সময়ই তার মধ্যে অজানাকে জানার কৌতুহল কাজ করে। বিশেষ করে আকাশ এবং গ্রহ নক্ষত্র। এই শখ পূরণ তার কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ বলে জানিয়েছেন। এটা হতে যাচ্ছে সৌদি আরবের প্রথম মহাকাশ অভিযান।
প্রিন্স সুলতান বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ বিমান বাহিনীর একজন পাইলট হিসেবে ১৯৮৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত এক মহাকাশ অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু মহাকাশ অভিযানে প্রথম একজন সৌদি নারীর অংশ নেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।
‘মহাকাশের সুলতান’ হিসেবে পরিচিত ৪১ বছর বয়সী সুলতান আল-নেয়াদি প্রথম আরব নভোচারী, যিনি মহাকাশে ৬ মাস কাটাবেন। স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেটে চড়ে তিনি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাবেন।
মহাকাশ অভিযান সংক্রান্ত এ ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে নিজেদের জ্বালানি-নির্ভর অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করার চেষ্টা করছে উপসাগরীয় রাজতন্ত্র শাসিত দেশগুলো।
সৌদি ডি ফ্যাক্টো নেতা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানও সংস্কারের জন্য চাপ দিয়ে দেশের কঠোর রক্ষণশীল ভাবমূর্তি ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছেন।
এসডব্লিউ/এসএস/১৯৪৫
আপনার মতামত জানানঃ