গত বছর ভাইরাল হয়েছিল এর বিজ্ঞানীর দাবি। জিম গ্রিন নামের বিজ্ঞানী প্রায় ৪০ বছর ধরে যুক্ত ছিলেন নাসার সঙ্গে। তিনি সম্প্রতি তুলে ধরেছেন এক ভয়াবহ তথ্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে তার সেই দাবি। তিনি জানিয়েছেন যে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এলিয়েনদের আওতায় চলে আসতে পারে পৃথিবী। শুধু তাই নয়, মানুষদের সঙ্গে শুরু হয়ে যেতে পারে তাদের লড়াই।
তিনি জানিয়েছেন যে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এলিয়েনদের হাতে এনকাউন্টার হতে হবে মানুষদের। নাসা অনেকদিন ধরেই এলিয়েনদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে চলেছে। সম্প্রতি আবার ভাইরাল হয়েছে এলিয়েনদের সম্পর্কে এক নতুন ভয়াবহ তথ্য।
কিছুদিন আগেই একটি খবর ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইংল্যান্ডের লিভারপুলের বাসিন্দা একজন মহিলা জানিয়েছিলেন তিনি ভিনগ্রহীদের দেখা পেয়েছেন। ৫১ বছর বয়সী সাচা ক্রিস্টি জানিয়েছিলেন যে, তিনি যখন ৭ বছর বয়সী ছিলেন তখন তিনি মোট ৯টি ভিনগ্রহী দেখতে পেয়েছিলেন। এর জন্য তিনি রীতিমতো আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল।
শুধু তিনিই কেন বারবার ভিনগ্রহীদের দেখতে পাচ্ছেন সেই নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিলেন সাচা ক্রিস্টি। এছাড়াও তাকে কেন ভিনগ্রহীরা বারবার বিরক্ত করছে সেই বিষয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরতে থাকে। এই পুরো খবরটি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম Daily Star। এরপরই সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, গত প্রায় ১৫০ বছর ধরে অন্য কোনও গ্রহের বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাইছে নাসা। জানা গিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই ভিনগ্রহীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে তারা। যার নাম, ‘Beacon in the Galaxy’ (BITG)।
এবার বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, ২০২৯ সালের প্রথম দিকে আমরা বহির্জাগতিক জীবন থেকে একটি বার্তা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর কারণ হল কিছু শক্তিশালী রেডিও সংকেত যা আমরা প্রেরণ করেছি তা দূরবর্তী নক্ষত্রে পৌঁছেছে এবং যদি এই নক্ষত্রগুলির মধ্যে যেকোনো একটি এলিয়েন হোস্ট করে তাহলে আমাদের সংকেত সাড়া দিতে পারে।
তবে এমনটি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। আমাদের সংকেতগুলি দুর্বল এবং বিরল, এবং আমাদের ছায়াপথে বিদ্যমান অন্য সভ্যতা থাকার সম্ভাবনা এখনও বেশ ক্ষীণ মনে হচ্ছে। তবে সম্ভাবনা কম হলেও, কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে এটি নিয়ে এখনও গবেষণা করা যায়।
ভিনগ্রহের সভ্যতার প্রমাণ খোঁজার জন্য, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি দল গভীর-মহাকাশের রেডিও সংকেত অনুসরণ করেছিল ও তাদের মধ্যে কেউ আমাদের বার্তা পেয়েছে কিনা সেটাও দেখা হচ্ছে।
এলিয়েনের সাথে যোগাযোগ করার সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য অধ্যয়নের পিছনের দলটি দেখতে চেয়েছিল যে, নাসার ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক (DSN) থেকে সংকেতগুলি এখন পর্যন্ত এমন কোনও এক্সোপ্ল্যানেটে গেছে কিনা যা এলিয়েন হোস্ট করতে পারে। ডিএসএন একটি শক্তিশালী রেডিও অ্যারে যা গভীর মহাকাশ মিশনের যোগাযোগ করতে ব্যবহৃত হয়।
দলটি DSN দ্বারা প্রেরিত সংকেতগুলি ট্র্যাক করছে। নিকটতম নক্ষত্র ২৭ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি সাদা বামন নক্ষত্র। যদি সেই নক্ষত্রের চারপাশে এমন কোনো গ্রহ থাকে যা আমাদের বার্তায় সাড়া দেয়, তাহলে দ্রুত রেসপন্স করা সম্ভব হবে৷ অন্যান্য বার্তা ২০৩০ এর দশকে বিভিন্ন সম্ভাব্য তারকা সিস্টেম থেকে আমাদের কাছে ফেরত আসতে পারে।
এদিকে, স্পেস ডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিতেই এলিয়েন বা ভিনগ্রহবাসীর অস্তিত্বের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। নাসার কেপলার স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আমাদের এই ছায়াপথে পৃথিবী ও মঙ্গলের মতো পাথুরে গ্রহ বেশি। সেই তুলনায় বৃহস্পতি বা শনির মতো গ্যাসীয় গ্রহের সংখ্যা কম। তাই অধিকাংশ তত্ত্বই বলে, পাথুরে গ্রহগুলো জীবনধারণের উপযোগী হতে পারে।
নাসার অ্যাস্ট্রোফিজিকস বিভাগের পরিচালক পল হার্জ মিল্কি ওয়ে ছায়াপথকে ‘আর্দ্র স্থান’ বলে উল্লেখ করেছেন। এখানে মহাকাশীয় মেঘের পানির অস্তিত্ব দেখা যায় বলেই তাঁর মত।
এলিয়েন বা ভিনগ্রহবাসীর খোঁজে নাসার বর্তমান পরিকল্পনা হচ্ছে, মঙ্গল গ্রহের বরফাচ্ছাদিত চাঁদ ইউরোপাতে আরও বেশি রোভার পাঠানো। এ ছাড়াও হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা দাবি করেছেন, তাঁরা জটিল গাণিতিক নকশার রেডিও সংকেত ধরতে পেরেছেন যা কোনো বুদ্ধিমান ভিনগ্রহবাসীর পাঠানো সংকেত হতে পারে।
তবে কী সত্যিই দেখা মিলবে এলিয়েনদের? যেভাবে গবেষক, বিজ্ঞানী ও উদ্যোক্তারা উঠেপড়ে লেগেছেন ১০ বছরের মধ্যে লক্ষ্য অর্জন করে ফেলা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে কী?
এসডব্লিউএসএস/১৫৪৫
আপনার মতামত জানানঃ