বিএনপিপন্থি আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও মারধর করে বের করে দেয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ দুপুর পৌনে ১টার দিকে আওয়ামী লীগ পন্থী আইজীবীদের গঠন করা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান আসাদ বলেন, ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে উত্তেজনা তৈরি হয়। দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও হট্টগোল হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয় পুলিশ।
বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বাধার মুখে সকাল ১০টায় ভোটগ্রহণ শুরু করতে পারেনি। বেলা পৌনে ১২টার দিকে ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পিটিয়ে বের করে দেয় পুলিশ। এসময় বিএনপিপন্থি প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে লাঞ্ছিত করা হয়।
মারধর করা হয় সাংবাদিকদেরও। আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার এসএম নূর মোহাম্মদ, এনটিএন নিউজের সাংবাদিক জাবেদ আক্তার, জাগো নিউজের ফজলুল হক মৃধা, মানবজমিনের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার মারুফ হাসান, এটিএন বাংলার ক্যামেরাপার্সন হুমায়ুন কবির, সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন সোলাইমান স্বপন, ডিবিসির ক্যামেরাপার্সন মেহেদী হাসান মিম, বৈশাখী টিভির ক্যামেরাপারসন ইব্রাহিমকে মারধর করে পুলিশ।
সাংবাদিকদের কিল-ঘুষি মারে, ছিঁড়ে ফেলে জামা কাপড়। এছাড়া মানবজমিনের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার মারুফ হাসান মারুফ হাসানের হাতের বুম কেড়ে নিয়ে যায়।এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে কর্তব্যরত সাংবাদিকরা।
জানা গেছে, সোমবার রাতে হঠাৎ করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক বিচারপতি মুনসুরুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন। দেখা দেয় নতুন জটিলতা। যথাসময়ে ভোটগ্রহণ শুরু করতে বিএনপি-আওয়ামী লীগ দু’পক্ষই নতুন দুজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করেন।
আওয়ামী লীগপন্থিদের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানকে এবং বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট এ এস এম মোক্তার কবিরকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করেন।
আজ সকালে আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীরা তাদের গঠন করা প্রধান নির্বাচন কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানের অধীনে ভোটগ্রহণ শুরু চেষ্টা করেন। এসময় বাধা দেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তারা দাবি জানান, সুষ্ঠু পদ্ধতির মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু করতে হবে। এতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও হট্টগোল শুরু হয়। দুপক্ষই পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এদিকে আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা অভিযোগ করছেন, ব্যারিস্টার খোকন ও কাজলের নেতৃত্বে ব্যালট পেপার ছিনতাই করা হয়েছে। বিএনপির আইনজীবীদের অভিযোগ করছেন, রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়েছে।
এবারের নির্বাচনে সাদা প্যানেল থেকে সভাপতি পদে এডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির এবং সম্পাদক পদে আব্দুন নূর দুলাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দু’জনই সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক।
অন্যদিকে নীল প্যানেল থেকে সভাপতি পদে ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এর আগে তিনি সমিতির বেশ কয়েকবারের সম্পাদক ছিলেন। এ প্যানেল থেকে সম্পাদক পদে সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল নির্বাচনে লড়ছেন।
এসডব্লিউএসএস/১৫০০
আপনার মতামত জানানঃ