বিশ্বের বিস্ময়কর কিছু ফুল দেখলে সত্যিই তাজ্জব হতে হয়। এরকমই একটি ফুল হল বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত এবং একই সাথে ভয়ংকরতম অর্কিড ফুল। এটি ২০২০ সালে মাদাগাস্কারের জঙ্গলে পাওয়া গিয়েছিল। বিজ্ঞানীদের মতে এটি একটি নতুন ধরনের অর্কিড। বিজ্ঞানীরা গ্যাস্ট্রোডিয়া অ্যাগনিসেলাসকে বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত দেখতে অর্কিড ফুল হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ইউরোপ ও আমেরিকায় এই ফুলগুলো দেখা যায়। এই প্রজাতির ফুলগুলো পশ্চিমা বিশ্বে বেশ যত্নের সাথেই বাগানে চাষ করা হয়। এই ফুল স্ন্যাপড্রাগন নামেও বেশ পরিচিত, তবে বেশির ভাগ লোকই চেনে ড্রাগন ফুল নামেই। আর এই নামের পিছের রহস্য সম্পর্কে আশা করি খুব বেশি বুঝিয়ে বলতে হবে না, মূলত এই ফুলের আকৃতি অনেকটাই ড্রাগনের খুলির মত আর সেই কারনেই এর এই নামকরণ।
এই ড্রাগন ফুলের গাছ এক রকমের ক্যাকটাস লতানো গাছ। গাছে কোনো পাতা নেই। গাছ ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার লম্বা হয়। সবুজ রঙের এই গাছে খুব সুন্দর সাদা ও সবুজাভ সাদা রঙের ফুল ফোটে। ফুল দেখতে অনেকটা ‘নাইট কুইন’-এর মতো। ফুল সুগন্ধযুক্ত ও স্বপরাগায়িত। ফুল বেশ বড়। ড্রাগন ফুলকে বলা হয় ‘মুন ফ্লাওয়ার’ বা ‘কুইন অব দ্য নাইট’।
ফুল থেকে ডিম্বাকার ফল গঠিত হয়। ফলের খোসা নরম। একটি ফলের ওজন ১৫০ থেকে ৬০০ গ্রাম। কখনো কখনো ফলের ওজন এক কেজি পর্যন্ত হয়। পাকা ফলের শাঁস বেশ নরম, কালোজিরার মতো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কালো রঙের অসংখ্য বীজযুক্ত, হালকা মিষ্টি, ক্যালরি খুব কম।
এই ফুলটির বিশেষত্ব হলো, এরা যখন জীবিত ও সতেজ থাকে তখন এদের অত্যন্ত সুন্দর দেখায়। কাউকে উপহার হিসেবে দিতে বা ঘরে সাজিয়ে রাখার জন্য অত্যন্ত উপযোগী হয়।
কিন্তু এই ফুলগুলোই যখন মারা যায় তখন এদের দেখতে পুরোপুরি মানুষের মাথার খুলির মতো দেখায়।
উদ্ভট দেখতে এই ফুল নিয়ে কিন্তু অতীতে বিভিন্ন প্রকার লোককথা প্রচলিত ছিল। অতীতে অনেকেই এই ফুল গুলির মধ্যে অতিপ্রাকৃতিক কোন শক্তি আছে বলে মনে করা হত। বিশেষ করে ডাইনী বিদ্যায় এই ফুলের ব্যবহার ছিল বেশ প্রচলিত। অনেকেই এই ফুল বাগানে চাষ করতেন ডাইনীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য।
কেননা, তৎকালীন ধারনা ছিল ডাইনীরা এই ফুল ব্যবহার করত চির-যৌবন ধরে রাখতে। আর যে ফুল তাদের এত উপকারে আসে, আর সেই ফুল যে বাড়িতে চাষ করা হয়, সেই বাড়ির কি কোন অপকার কেউ করতে পারে।
আবার অনেক সময় মহিলারা নিজেদের ধন্যবাদ জানাতে, ফুল গুলি অন্য মহিলাদের পাঠাতেন। যাতে তারা এই ফুল ব্যবহার করে নিজেদের যৌবন ধরে রাখতে পারে। তবে এই ফুল গুলির যে কোন অতিপ্রাকৃতিক গুনাগুণ নেই তা বলার নিঃশ্চয়ই আর দরকার নেই।
এসডব্লিউএসএস/০৯১৬
আপনার মতামত জানানঃ