বিলের কিনারা জুড়ে সারি সারি হিজলগাছ। মাঝে মাঝে বাঁশঝাড়, অনেক বাঁশ ঝুঁকে আছে বিলের দিকে। ওরকমই একটা বাঁশ থেকে শুকনো কঞ্চি ভাঙার চেষ্টা করছে একটি পানকৌড়ি। ওর থেকে অল্প দূরে, বিলের কিনারে ডালপালা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটা বয়সী বরইগাছ।
ওই গাছে ডাকাডাকি করছে ছয়টি পানকৌড়ি, বাসা বাঁধার কাজে মহাব্যস্ত ওরা। এত যে ডাকাডাকি, তবু অন্য একখানা ডালের বাসায় বসে নির্বিকারভাবে ডিমে তা দিচ্ছে একটি ছোট্ট সবুজ বক। বরই গাছটার গোড়ার ঝোপে বাচ্চা-বুকে বসে আছে একটি নলঘোঙা পাখি। পুরুষ পাখিটিও রয়েছে কাছাকাছি, মাটিতে। এই এলাকায় তাই অনেক পাখি।
ওখানেই খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছে কয়েকটি ডাহুক ও ছানাসহ একটি বড় হালতি। ঝরা বাঁশপাতার ওপরে বসে ঘুমাচ্ছে ছটি দিনেকানা। এলাকাটা নির্জন। জনবসতি অনেক দূরে। ওই তো—বাঁ পাশটায় তিনটি জলডুবুরি পাখি আর একজোড়া কোড়া তাদের বড় বড় পাঁচটি বাচ্চা নিয়ে চরছে হোগলাবনের পাশে। শাপলাবনে চরছে দশটি বালিহাঁস।
কলমিদামের ওপরে দাঁড়িয়ে পালক ধোয়ামোছা করছে দুটি জলপিপি। অল্প দূরে দাঁড়িয়ে আছে কয়েক ঝাড় গোলপাতার গাছ। ওগুলো সুন্দরবন থেকে এনে ওখানে লাগিয়েছিল এক বাওয়ালি। ওরই একটার ওপর পাশাপাশি বসে রোদ পোহাচ্ছে একজোড়া পাখি। সাপের মতো সরু গলা ও মাথা রেখেছে টানটান করে। শরীর দেখা না গেলে ও দুটোকে অবিকল সাপ বলেই মনে হতো। একটু আগেও টুপটুপ ডুব দিয়ে মাছ খাচ্ছিল, এখন একে তো বিলের জল টলমল, তার ওপর সকাল।
শাপলা-কলমিদামের ফাঁকে ফাঁকে তো বটেই, ফাঁকা জায়গাগুলোর জলের তলার শেওলা ও মাটি পর্যন্ত পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। ওই দুটি পাখি যখন ডুব দিচ্ছিল, জলের তলায়ও ওদের পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল। টলটলে জলে আকাশ আর গাছগুলোর ছায়া মায়াময় একটা আবহ সৃষ্টি করে রেখেছে।
শুকনো কঞ্চি-মুখে জলের ওপরে ছবি আঁকতে আঁকতে সেই পানকৌড়িটি এল বরই গাছে। বউ ওর মুখ থেকে কঞ্চিখানা নিল, সাজাতে লাগল বাসা। বাসাটি ওরা শুরু করেছিল গতকাল দুপুরে। ডালপালা বেশি তাই জমেনি। অন্য বাসাগুলোর কোনোটা প্রায় শেষ, কোনোটার অর্ধেক হয়েছে।
গোলপাতায় বসা পাখি দুটি ঝট করে উড়ল, উঠে পড়ল অনেক ওপরে, ওদের বুক-পেটের কালো রং যেমন জ্বলে উঠল রোদে, তেমনি ডানার পালকের চকচকে রূপালি-সাদা রংটাও ঝলকাল। ওড়ার ভঙ্গিটাও চমৎকার। টানটান লম্বা গলাটি। পেছনের দিকে পা দুটি টানটান। ওরা কয়েক পাক ঘুরল বরইগাছটার মাথার ওপর দিয়ে, তারপর নিচে নেমে বরইগাছটার ওপরেই পাক খেতে লাগল, ডাক ছাড়তে লাগল, বারবার লম্বা গলাটি সাপের মতো বাড়িয়ে দিতে লাগল নিচের দিকে।
পানকৌড়িগুলো বুঝে ফেলল, মতলব ভালো নয় ওদের। তাই সবাই মিলে গলাটা ওপর দিকে বাড়িয়ে উড়ন্ত পাখি দুটিকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য চেঁচামেচি করতে লাগল। ডিমে বসা বকটি ব্যাপারটার দিকে সতর্ক নজর রাখছে।
উড়ন্ত পাখি দুটি সেই ডালের পাশেই বসল, যে ডালে একটু আগে শুকনো কঞ্চি নিয়ে এসেছে একটি পানকৌড়ি, বউটি তখনো বাসা সাজাচ্ছে। বসেই পাখি দুটি ভয়ঙ্কর-সুন্দর ভঙ্গিতে একেবারে সাপের মতো ফণা তুলল যেন, চাপাস্বরে ডাক ছেড়ে ফণা নাচাতে লাগল। সে এক আশ্চর্য দৃশ্য! পানকৌড়িরাও রুখে দাঁড়িয়েছে একযোগে, লাগিয়েছে বেজায় শোরগোল। কিন্তু ওই পাখি দুটিও নাছোড়বান্দা, ডানা মেলে সেগুলো ঝাঁকাতে লাগল—এ হচ্ছে ভয় দেখাবার কৌশল, সাপের ফণার মতো লম্বা সরু গলা-মাথা দোলাচ্ছে, এপাশ-ওপাশ করছে ছোবল দেওয়ার ভঙ্গিতে।
পানকৌড়িগুলোও ঠোঁট ফাঁক করে ভয় দেখাচ্ছে, ডানা ঝাঁপটাচ্ছে। এ সময়ে আচমকা একটি পাখি ঠিক সাপের মতো ছোবল মারল একটি পানকৌড়িকে। ভয়ার্ত ডাক ছেড়ে সে পিছিয়ে গেল। ও হচ্ছে পানকৌড়ির সেই বউটি, যে একটু আগে পুরুষ-পাখির মুখ থেকে শুকনো কঞ্চি নিয়েছিল। এবার পুরুষ পাখিটি রুখে দাঁড়াল, কয়েক সেকেন্ড ঠোঁটে ঠোঁটে ঠোকাঠুকি করে সরে গেল সেও। অন্য পানকৌড়িরা আর ঘাঁটাতে এল না পাখি দুটিকে। এবার পাখি দুটি চরম আক্রোশে তছনছ করল গতকাল শুরু করা পানকৌড়ির বাসাটি। ফেলে দিল সব খড়কুটো।
তারপর খুশি হয়ে দুজনে উড়ে গিয়ে বসল সেই গোলপাতা গাছে। শুকনো দুটি পাতা মুখে টেনে ছিঁড়ে নিয়ে ফিরল আবার বরইগাছে। দখল করা জায়গায় ওরা বাসার ভিত তৈরি করে ফেলল। উচ্ছেদ হওয়া পানকৌড়ি দুটি তাকিয়ে রইল অসহায়ভাবে। বাছতে লাগল অন্য ডাল, যেখানে তারা আবার শুরু করবে বাসা বাঁধার কাজ। অন্য পানকৌড়িগুলোও বিপদ কেটে গেছে ভেবে যার যার বাসার দিকে নজর দিল।
এই যে পাখি দুটি, পানকৌড়িদের আচার-আচরণের সঙ্গে এদের অনেক মিল আছে। এক জায়গাতেই চরে, ঝগড়াঝাঁটি লাগে না। একই গাছে পাশাপাশি বাসাও বানায়। মিলেমিশে থাকে। অথচ আজ কেন পাখি দুটি পানকৌড়ির বাসার জায়গা দখল করল? এ প্রশ্নের জবাব গভীর ও দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ ছাড়া দেওয়া সম্ভব নয়।
আমি এই পাখিদের আচার-আচরণ ভালোভাবে লক্ষ করার সুযোগ পেয়েছি। বাসাও দেখেছি বহুবার। বাসা বানাতেও দেখেছি। বাল্যকৈশোরে বাসা থেকে ডিম চুরি করে খেয়েছি। আবার মুরগি ও পোষা কবুতরের পেটের তলায় ডিম ফোটাতে চেষ্টা করেছি, ফোটেনি, নষ্ট হয়ে গেছে। বাচ্চা এনে পোষ মানাতে চেষ্টা করেছি। পোষ মানেনি, না-খেয়ে মারা গেছে।
আমি পানকৌড়ির ডিমের সঙ্গে ওদের ডিম বদল করে দেখেছি, ডিম ফোটে। কিন্তু উভয় ক্ষেত্রেই ওরা বুঝে ফেলে যে বাচ্চাটি তার নয়, খাওয়ায় না। পরিণামে বাচ্চা মারা যায়। পাশাপাশি, ওই বাচ্চা বদল করেও দেখেছি—খাওয়ায় না; অথচ যার ডিম, যার ডিমের বাচ্চা, তাকেই তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভেবেছে পরের বাচ্চা। অথচ পানকৌড়ি ও এই সাপ-গলা পাখিরা কিন্তু একে অন্যের বাচ্চাকেও খাওয়ায়।
সাপপাখি রংচঙা না হলেও দেখতে খুব সুন্দর। এরা চমৎকার ডাইভ মারতে পারে জলে, সাপের মতো ছোবল দিয়ে মাছ ধরতে পারে। দক্ষ ডুবুরি। উড়তেও পটু। গুলি খাওয়া আহত পাখিকে আমি খাড়া এত ওপরে উঠতে দেখেছি যে অবাক না হয়ে পারিনি। আহত পাখিকে অল্প জলে তাড়িয়ে ধরতে গিয়ে বুঝেছি, কতটা চালাক এরা।
বন্দুক হাতে বিল-ঝিল-জলাশয়ের কিনারের গাছে বসে আমি বহুবার টলটলে জলের তলায় এই সাপ-গলা পাখিদের গতিবিধি দেখেছি। জলের তলা দিয়ে ওরা যখন এগোয়, শরীর-গলা-মাথা একটা সরলরেখা হয়ে যায়, মনে হয় একটি সাপ সরলরেখা ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। সে এক মুগ্ধ হওয়ার মতো দৃশ্য। জলের তলায় এরা থাকতে পারে, এক নাগাড়ে তিন মিনিট। তবে ভয় না পেলে বা বন্দুকের গুলি খেয়ে ডুব না দিলে দেড় মিনিটের বেশি থাকে না। ওই দৃশ্য দেখে আমার নেশা ধরে গিয়েছিল ছেলেবেলায়। তাই শুধু দেখার জন্যই ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাছে বসে থেকেছি। দেখেছি পানকৌড়ির চলাফেরাও।
কয়েকটি সাপ-গলা পাখি যখন জলের তলায় ঘোরে, তখন বিস্মিত হতে হয়। মাছের দিকে যখন তেড়ে যায়, মনে হয় টর্পেডো বা তীরের ফলা ছুটছে। মাছ একটু বড় হলে ওরা মাছের শরীরে ধারালো ঠোঁটটি তীরের ফলার মতো ঢুকিয়ে দেয়, মাছটি হয়ে যায় এফোঁড়-ওফোঁড়, আর পাখিটি তখন ভেসে ওঠে জলের ওপর। বন্ধ ঠোঁট ফাঁক করে, তাতে মাছের শরীর কেটে যায় ছুরির টানের মতো। এক আশ্চর্য কৌশল এই পাখিদের। ঠোঁট আবার বন্ধ করে। তারপর অপূর্ব কৌশলে গলা-মাথা উঁচু করে মাছ ছুড়ে দেয় ওপর দিকে। আশ্চর্য! ঠোঁট ওই চিরে যাওয়া অংশের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে যায়, মাছটি চলে আসে ঠোঁটের গোড়ায়।
তখনো মাছটি না মরে থাকলে ঠোঁটটা ঘোরাতে থাকে, ঘুরতে থাকে মাছ। মারা যাওয়ার পর মাছটি আবার ঠোঁটের আগায় আনে, ছুড়ে দেয় শূন্যে, তারপর মুখে পোরে। মাছ ছোট হলে চেপে ধরে ঠোঁটের ফাঁকে। একই কায়দায় শূন্যে ছুড়ে দিয়ে টুকুস করে গিলে ফেলে। এসব ক্ষেত্রে অবশ্য ব্যর্থও হয় অনেক সময়। মাছটি মুখে না পড়ে জলে পড়ে যায়। আবার আমি দেখেছি, ভয় পেলে বা সন্দেহ হলে ওরা ডুব দেয়, যতক্ষণ পারে, থাকে জলের তলায়, তারপর কোনো জলজ উদ্ভিদ বা শাপলা-কলমির মাঝে সাবধানে শুধু নাকসহ ঠোঁটটি জাগিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে দেখলে সাপ বলেই ভ্রম হবে।
এই পাখির জাগানো মাথা দেখে সাপ ভেবে ভয় আমিও পেয়েছি। বাল্যকালে প্রথম যেবার পানকৌড়ির বাসা ভেবে হাত দিয়েছিলাম একটি সাপ-গলা পাখির বাসায়, আমার ডান হাতের পিঠের নরম চামড়ায় ঠোকর দিয়েছিল একটি ছানা, হাত টানতেই ওর গলাটিও নেমে এসেছিল। সেদিন আমি দাঁড়াস সাপ ভেবেছিলাম ওকে। ভেবেছিলাম, বাসার ডিম বা বাচ্চা খেয়ে সাপটি বাসাতেই ছিল। আমার হাত বাঁধা হয়েছিল। সাপের ওঝা এসেছিল। পরে অবশ্য ভুল ভেঙেছিল। হ্যাঁ, এদের বাসা থেকে ডিম-বাচ্চা চুরি করে খায় ঈগল-বাজ-চিলরা, গুইসাপ আর ডিমখেকো সাপেরাও। রাতে খায় ভুতুমপেঁচারা। মানুষের নজরে পড়লে তো কথাই নেই।
এবার দেখা যাক, ওই দুটি পাখি কেন পানকৌড়িদের বাসা দখল করল। সম্ভাব্য কারণটি হচ্ছে, ওই জায়গাটি ওরা আগেভাগেই পছন্দ করে রেখেছিল। তবে ওদেরকে আমি কানিবক, ডাহুক আর পানকৌড়ির তৈরি বাসাও দখল করতে দেখেছি। পরের বাসা দখলের প্রবণতা এদের রয়েছে। নিজের দখল ঠিক থাকলে, একেবারে পাশেই বক বা পানকৌড়িতে বাসা করলেও আপত্তি করে না ওরা। অকারণে ঝগড়া-ফ্যাসাদও বাধায় না। এদের বাচ্চারা একটু বড় হলে বাসার তলায় গিয়ে হাততালি দিলে ভয়ে বাসা থেকে লাফিয়ে পড়ে। এই সুযোগ কাজে লাগায় বনবিড়ালরা। ওরা গাছতলায় গিয়ে জোরে ডাক ছাড়ে, আর বাচ্চারা তখন লাফ দেয়। বনবিড়াল ওদেরকে খায়। রাতে গাছে চড়েও শিকার করে। অন্তত দুবার আমি বনবিড়ালকে এই কৌশল কাজে লাগাতে দেখেছি।
সাপপাখির গলা সরু, গোলাকার ও লম্বা, মাথা ছোট। ঠোঁট সোজা ও চোখা। ঠোঁট ও পা হলুদ। পায়ের আঙুল চারটি, অনেকটা হাঁসের পায়ের মতো দেখায়। চোখের পাশ থেকে হলদেটে সাদা একটা টান এসেছে ঘাড়ের দিকে। মাথা-ঘাড়-গলা লালচে-বাদামি। সাদা খাড়া একটা টানও আছে। । পাখার মূল পালকগুলোও কালো। উজ্জ্বল-মায়াবি চোখ। ঋতুভেদে রং অতি সামান্য বদলায়। গলার তলাটা বাদামি-সাদা।
শ্রাবণ থেকে অগ্রহায়ণের মধ্যে এরা বাসা বাঁধে। তবে শীতকালেও বাসা বানায়। আমার বিচারে শীতকালে বাসা কম করে। দুজনে মিলে বাসার জায়গা খুঁজতে লাগায় ২-৩ দিন। তবে একই গাছের একই ডালে একজোড়া পাখিকে আমি পরপর তিন বছর বাসা বানাতে দেখেছি। বাসার উপকরণ শুকনো বা কাঁচা ডাল-পাতা, হোগলাপাতা, ধানের নাড়া ইত্যাদি। কাকের বাসার চেয়েও অগোছাল, গভীরতায়ও কম। দুজনে বাসাটি শেষ করে ৪-৭ দিনে। ডিম পাড়ে অধিকাংশ সময় ৫টি। ৬ ও ৩-এর সংখ্যা কম। শুধু ২টি ডিমও পাড়ে। ডিম চুরি গেলে ২০-২৫ দিন পরে আবারো ডিম পাড়ে। সে ক্ষেত্রে ডিমের সংখ্যা কমে যায়। দ্বিতীয়বার ডিম চুরি গেলে আর পাড়ে না। ডিমের রং ঘোলাটে সাদা, তাতে নীলচে আভা। ডিম লম্বাটে, মোটা মাথায় সবুজ ও নীলচে ছোপ।
দুজনে পালা করে ডিমে তা দেয়। ডিম ফোটে ২৬ দিনে। আমি দশবার ২৬ দিনে ডিম ফুটতে দেখেছি। তিনবার দেখেছি ২৯ দিনে ফুটতে। বাচ্চারা অন্ধ থাকে, দেখতে কাঁচা মাংসপিণ্ডের মতো। ৬ দিন পর শরীরে লোম গজাতে শুরু করে, ১২ দিনে সব লোম গজিয়ে যায়। ও সময় দেখতে লালচে-বাদামি। উড়তে শেখে ৪৫ দিনে। খাবার জন্য মা-বাবাকে বড্ড বিরক্ত করে। বাসায় থাকতে নিজেদের ভেতর মারামারি লাগায়। বাড়ন্ত বাচ্চারা বাসায় বসে মারামারি বাঁধালে মনে হয়, সাপের লড়াই লেগেছে। ও সময় চাপা ফোঁস-ফোঁস আওয়াজও করে। এমনিতে সাপপাখির গলার স্বর কর্কশ ডিগী ডিগী বা ডিগ্রী-ড্রু ধরনের। মা ও বাবা পাখি গলাভরে মাছ আনে বাসায়, উগরে দেয় বাচ্চাদের সামনে। আবারো যায় খাবার আনতে। এ সুযোগে অনেক সময় শঙ্খচিলেরা ছোঁ মেরে মাছ ছিনতাই করে, বাচ্চারা ছোট থাকলে বাচ্চাও তুলে নেয়। বাচ্চার কান্নায় তেড়ে আসে মা-বাবা, করে ধাওয়া।
ছেলেবেলায় যে পাখিটিকে বহুবার দেখেছি, এখন অনেক খুঁজেও সেই পাখিটিকে পাই না। চোখের সীমানায় ওরা নেই। তাই চোখের সীমানার বাইরে গিয়ে খুঁজি। যারা ঢাকায় আছে, তারা ইচ্ছে করলে ঢাকা চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখে আসতে পারে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো কখনো দেখা যায়।
আজ থেকে ৩০ বছর আগেও বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে সাপপাখি ছিল, এখন নেই। আগামী ৩০ বছর পরে হয়তো একটিও না থাকতে পারে। এমন সুন্দর ও উপকারী একটি পাখি বাংলাদেশ থেকে যেন হারিয়ে না যায়। সেই চেষ্টা আজ বড়ই জরুরি।
আপনার মতামত জানানঃ