অনলাইন উদ্যোক্তা অর্থাৎ, দেশের ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যারা ব্যবসা করছেন, তাদের জন্য সুখবর দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশি ই-কমার্স ওয়েবসাইট দিয়ে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রির পদ্ধতি সহজ করার ঘোষণা দিয়েছে তারা। এই নিয়ম চালু হওয়ায় এখন থেকে দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে বিদেশি ক্রেতারা কোনো পণ্য কেনার সময় ক্যাশ অন ডেলিভারিতে মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন।
এ ছাড়া জাহাজীকরণের পর মূল্য পরিশোধের (পেমেন্ট অন শিপমেন্ট) শর্তেও বিদেশি ক্রেতাদের কাছে পণ্য রপ্তানি করতে পারবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। ২১ ডিসেম্বর ২০২০, গতকাল সোমবার এ ধরনের লেনদেনের অনুমোদন দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এক সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোকে পাঠানো হয়।
এদিকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুদ্ধারে ৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রতি ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪২৫ কোটি টাকা। উন্নয়নমূলক উন্নয়ন এবং পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) মাধ্যমে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। পিকেএসএফ-এর মানদণ্ড অনুসরণ করলে উৎপাদনমুখী অনলাইন উদ্যোক্তারা সরকারের এ ধরনের প্রয়াসগুলো থেকে সুবিধা নিতে পারেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এতদিন পণ্য সরবরাহের আগেই রপ্তানি মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে ই-কমার্সের আওতায় রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালিত হতো। এখন থেকে দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে বিদেশি ক্রেতারা কোনো পণ্য কেনার জন্য ক্রয়াদেশ (অর্ডার) দিলে ভোক্তাপর্যায়ে (বিজনেস-টু-কনজ্যুমার) পণ্য সরবরাহের পর মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। এ ধরনের সরবরাহ ক্যাশ অন ডেলিভারি হিসেবে পরিচিত।
নতুন জারি করা সার্কুলারে আন্তর্জাতিক কার্ডের পাশাপাশি অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে সার্ভিস প্রোভাইডার, ডিজিটাল ওয়ালেট বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত যেকোনো পেমেন্ট ব্যবস্থায় ই-কমার্সভিত্তিক লেনদেন সম্পাদন করা যাবে বলে জানানো হয়।
নতুন নীতিমালার আওতায় বাংলাদেশের অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকের সঙ্গে বিদেশি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারের বৈদেশিক মুদ্রায় অথবা টাকায় সংরক্ষিত হিসাব থেকে রপ্তানি মূল্য দেশে আনার ব্যবস্থা নিতে পারবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি যথাযথ পেমেন্ট গ্যারান্টি থাকা সাপেক্ষে ওই হিসাবের বিপরীতে ঋণ বা ওভারড্রাফট সুবিধা নিতে পারবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো।
এদিকে দেশের ক্ষুদে উদ্যোক্তাদের চাঙ্গা করতে ৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। অনলাইন উদ্যোক্তারা তাদের উৎপাদনী কাঠামোকে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) মানদণ্ডের পরিপূরক করে গড়ে তুলতে পারলে বা আগে থেকেই সেরকম প্রতিষ্ঠান গড়া হলে এই ঋণের অর্থ থেকে প্রণোদনা পেতে পারেন উৎপাদনমুখী অনলাইন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাও।
এডিবির প্রধান বিশেষজ্ঞ (বাংলাদেশ) জ্যোৎস্না ভার্মা বলেন, প্রকল্পটি ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়নের প্রবেশাধিকার বাড়াবে। সেই সঙ্গে দেশে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বাড়াতেও অবদান রাখবে। বিজ্ঞপ্তিতে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, প্রকল্পের আওতায় পিকেএসএফের মাধ্যমে ৩০ হাজার অতিরিক্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে ঋণ সরবরাহ করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের ৭০ শতাংশ নারী নেতৃত্বাধীন। প্রকল্পটি ১২০ অংশীদার ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা জোরদার করবে।
অনলাইন উদ্যোক্তারা সরকারের এ ধরনের প্রয়াসগুলো থেকে সুবিধা নিতে পারেন। এ বিষয়ে অনলাইন ব্যবসা বাণিজ্যের সংগঠনগুলো দিক নির্দেশনা দিলে ক্ষুদে উদ্যোক্ততারা উপকৃত হতে পারবেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এসডাব্লিউ/ডিআর/আরা/ ১৪০০
আপনার মতামত জানানঃ