মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের মধ্যেই ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আজ শনিবার ভোরে ইসরায়েলি বিমানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে গাজার কয়েকটি ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিক হতাহতের তথ্য জানা যায়নি। খবর আল জাজিরা, রয়টার্স
শনিবার সকালে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে তারা গাজা উপত্যকার একটি রকেট উৎপাদন কারখানায় হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি এই কারখানাটি পরিচালনা করছে অবরুদ্ধ উপত্যকার শাসক দল হামাস।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, সকালে বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভাঙে গাজার মানুষের। দুইটি আলাদা স্থান লক্ষ্য করে এক ডজনের বেশি রকেট হামলা চালানো হয়।
এসব হামলায় কারো হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ব্যাপক অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। আশেপাশের এলাকাগুলোতে ব্যাপক আগুন জ্বলতে দেখার কথা জানান আল জাজিরার প্রতিবেদক। তিনি জানান, ঘটনাস্থলের আশেপাশের বেশিরভাগ এলাকায় কৃষি জমি।
এর আগে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে দুই বার সাইরেন বেজে ওঠে। এর মাধ্যমে বাসিন্দাদের সম্ভাব্য রকেট হামলার বিষয়ে সতর্ক করা হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি একটি রকেট প্রতিহত করা হয়েছে আর তিনটি খোলা স্থানে বিস্ফোরিত হয়েছে। তবে এই রকেট হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনও গ্রুপ।
গত মাসেও রকেট হামলার অভিযোগ তুলে গাজায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ওই সময়ে তারা হামাসের সামরিক স্থাপনায় হামলার দাবি করে। তবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ জানায়, এসব ক্ষেপণাস্ত্র কৃষি জমিতে পড়েছে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সফরকে কেন্দ্র করে অবরুদ্ধ গাজা ও পশ্চিম তীরে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। ইসরায়েলের সুবিধা অনুযায়ী নীতি নির্ধারণ করছে যুক্তরাষ্ট্র এমন অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
২০২১ সালের মে মাসে ১১ দিন ধরে গাজায় হামলা চালিয়ে ২৫৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েল। ওই সময়ে আহত হয় প্রায় দুই হাজার মানুষ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার ইসরায়েল সফর করেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদের সঙ্গে বৈঠকের বাইরে তিনি ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গেও সাক্ষাত করেন।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে মত দিয়ে বাইডেন বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণ নিজস্ব একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, কার্যকর ও সংলগ্ন রাষ্ট্রের দাবিদার। যদিও দুই পক্ষের শান্তিপ্রক্রিয়া শুরু করার উদ্যোগ সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি। ইসরায়েল থেকে সৌদি আরবে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এরইমধ্যে গাজায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইসরায়েল।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সফরকে কেন্দ্র করে অবরুদ্ধ গাজা ও পশ্চিম তীরে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। ইসরায়েলের সুবিধা অনুযায়ী নীতি নির্ধারণ করছে যুক্তরাষ্ট্র এমন অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
ফিলিস্তিনিদের একটি বড় অংশই মনে করেন, ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষায়ই কাজ করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই ক্ষোভই দেখা গেলো বাইডেনের সাম্প্রতিক সফরের সময়।
শিনহুয়ার খবরে জানানো হয়েছে, সমুদ্র তীরবর্তী শহর গাজায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বিক্ষোভে যোগ দেন। গাজার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নানা স্লোগান দেয় সেখানে।
বিক্ষোভ থেকে হামাসের ডেপুটি চিফ খলিল আল-হায়াহ বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং তার প্রশাসন সবসময় ইসরায়েলের প্রতি দুর্বল ছিলেন। তারা সবসময় আমাদের বৈধ অধিকারকে অবহেলা করেছেন। তাই আমরা তার এই সফরও প্রত্যাখ্যান করছি।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৮০০
আপনার মতামত জানানঃ