সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রাচীনতম স্থাপনা আবিষ্কার করেছেন দেশটির প্রত্নতাত্ত্বিকরা। এগুলোর বয়স কমপক্ষে ৮ হাজার ৫০০ বছর। এতদিন যেই ভবনগুলোকে দেশটির সবথেকে প্রাচীন স্থাপনা মনে করা হতো সেগুলোর থেকেও ৫০০ বছর বেশি পুরানো নতুন আবিষ্কার হওয়া ভবনগুলো। এ খবর দিয়েছে সিএনএন।
পুরানো ভবন আবিষ্কার নিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির সংস্কৃতি ও পর্যটন দপ্তর। আর এই অনুসন্ধানটি পরিচালিত হয়েছে আবুধাবির সংস্কৃতি ও পর্যটন দপ্তরের অধীনেই। ঐ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবুধাবি শহরের পশ্চিমে থাকা ঘাঘা দ্বীপে এই ভবনগুলো খুঁজে পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আবিষ্কৃত কাঠামোগুলো মূলত ‘সাধারণ গোলাকার ঘরের মত’। আর ঘরের দেওয়ালগুলো পাথরের তৈরি, যেগুলো এখনও পর্যন্ত প্রায় এক মিটার (৩.৩ ফুট) উচ্চতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন, সারা বছর দ্বীপে নিরাপদে থাকার জন্য সম্ভবত ছোট কোনো সম্প্রদায় এই ঘরগুলো বানিয়েছিল।
তারা আরও বলছেন, এই ভবনগুলো দূর-দূরান্তের সামুদ্রিক বাণিজ্য পথ বিকাশের আগেই নিওলিথিক বসতিস্থাপনার অস্তিত্ব বহন করে। অর্থাৎ এটি প্রকৃতপক্ষে এ অঞ্চলে বসতি স্থাপনের প্রেরণা ছিলনা, যেমনটি প্রত্নতাত্ত্বিকরা আগে ধারণা করেছিলেন।
স্থাপনা ছাড়াও শতাধিক অন্যান্য নিদর্শনও এখানে খুঁজে পেয়েছেন তারা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘পাথরের তৈরি সূচালো তীর’, যা শিকারের জন্য ব্যবহার করা হত। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এখানে বসবাসকারী সম্প্রদায়টি সম্ভবত সমুদ্রের বিশাল সম্পদ ব্যবহার করেই জীবিকা নির্বাহ করতো।
যদিও প্রত্নতাত্ত্বিকরা এখনও নিশ্চিত নন, ঠিক কত আগে এখানে বসতি গড়ে উঠেছিল; তবে স্থাপনাগুলোর মধ্যে সমাহিত একটি মরদেহ আবিষ্কার করেছেন তারা। ধারণা করা হচ্ছে, মরদেহটি অন্তত ৫ হাজার বছর আগের।
পর্যটন বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আল মুবারক বলেন, ‘উদ্ভাবন, স্থায়িত্ব এবং স্থিতিস্থাপকতার বৈশিষ্ট্যগুলো যে হাজার হাজার বছর ধরেই এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের বংশ পরম্পরা একটি অংশ, সেটিই প্রমাণ করেছে ঘাঘা দ্বীপের এই আবিষ্কার’।
নতুন এই আবিষ্কারের নেতৃত্বদানকারী প্রত্নতাত্ত্বিক দলটি বলছে, ঘাঘা দ্বীপের এ আবিষ্কারের মাধ্যমে বোঝা গেল, আবুধাবির দ্বীপগুলো আগে ‘উর্বর উপকূল ভূমি’ ছিল; এখনকার মতো ‘শুষ্ক’ ও ‘অবাসিক অঞ্চল’ ছিল না। জমির উর্বরতা এবং পরিবেশগত অবস্থানের কারণে এই দ্বীপগুলোতে বসতি গড়ে তুলতে আগ্রহী হয়েছিলেন পূর্ব পুরুষেরা।
এর আগে আবুধাবির উপকূলে মারাওয়াহ দ্বীপে আমিরাতের প্রাচীনতম পরিচিত কিছু ভবনের সন্ধান পাওয়া যায়। তাছাড়া সেখানে বিশ্বের প্রাচীনতম মুক্তা পাওয়া যায় ২০১৭ সালে।
কেনাকাটা, দর্শনীয় স্থান, হাই-অ্যান্ড রিসোর্ট, সাদা বালির সৈকত, কৃত্রিম দ্বীপ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সব কিছু মিলিয়ে দেশটি পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য। প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করেন। আরব আমিরাত সরকার নিকট ভবিষ্যতে দেশটিকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্থান করার জন্য পর্যটন শিল্পে বিপুল বিনিয়োগ করেছে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৮২৮
আপনার মতামত জানানঃ