নারায়ণগঞ্জ নগরের মূল সড়ক থেকে অলিগলি—সব জায়গায় ঝুলছে নির্বাচনী পোস্টার। এর মধ্যে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তৈমুর আলম খন্দকারের প্রতীকের পোস্টার বেশি। পাশাপাশি চোখে পড়ছে অন্য প্রার্থীদের পোস্টারও। পরিবর্তনের আশায় তারাও ছুটছেন গণসংযোগে।
আগামী ১৬ জানুয়ারি এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে বেশ কয়েকজন প্রার্থী থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা দুইজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং তৈমূর আলম খন্দকার এবার দুই তারকা প্রার্থী। আইভী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন, তার নির্বাচনী প্রতীক নৌকা। অন্যদিকে বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা তৈমূর আলম খন্দকার নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে, হাতি প্রতীক নিয়ে। নির্বাচনে যার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়, তিনিও জয়ের আশা নিয়েই মাঠে নামেন। তবে জয় তো হয় একজনেরই। এবার কে হবেন নারায়ণগঞ্জের সিটি মেয়র তা জানার জন্য আমাদের আরও কয়দিন অপেক্ষা করতে হবে।
নিজ দল ও দলের লোকদের সাথে তারকা প্রার্থীদের সংকট
এবার সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং তৈমূর আলম খন্দকার দুইজনই জয়ের আশা ব্যক্ত করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে শুরু করেছেন। দুইজনই জনপ্রিয় মানুষ। আইভী আগে দুইবার সিটি মেয়র পদে জিতেছেন। তৈমূরের ঝুলিতে জয়ের মালা নেই। এবারও দল তার পক্ষে আছে কি না তা স্পষ্ট নয়। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আবার তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত হননি। স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা তার সঙ্গে আছেন, নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। তৈমূর আলম খন্দকার এখন নিজেকে সব দলের প্রার্থী বলে দাবি করছেন।
তৈমুর আলম বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রচারণা চলছে। জনগণ বনাম নৌকা, জনগণ বনাম সরকার। ইনশাল্লাহ আমি সর্বোদলীয় ভোট পাব। এ সুযোগ আমার দল (বিএনপি) করে দিয়েছে। আমি সেখানেই প্রচারণায় নেমেছি সেখানেই দলমত ও ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলেই আমার মিছিলে যোগদান করছে।
এই দাবি থেকে অবশ্য এটা বলা যায় না যে, সব দলের ভোটই তিনি পাবেন। ভোট দেওয়ার আগে মানুষ নানা কিছু বিবেচনা করে থাকে। প্রার্থী যেসব ওয়াদা করেন তা পূরণের সাধ্য ও সুযোগ তার আছে কিনা, সেটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার বিষয়।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বিএনপি দ্বৈতনীতি নিয়ে চলছে। একদিকে ঘোষণা দিয়েছে রেখেছে, তারা দলীয়ভাবে এই সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। কিন্তু অনেক জায়গায় বিএনপির পরিচিত নেতারা ধানের শীষ প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্রভাবে অন্য প্রতীকে নির্বাচন করছেন এবং জয়লাভও করছেন। যারা জয়লাভ করছেন তাদের দল থেকে বহিষ্কারের কোনো খবর জানা যায়নি। জিতলে দলের কৃতিত্ব, হারলে দলের দায় নেই– বিএনপির এই নীতি দলের মধ্যে এবং দলের বাইরে সমালোচিত হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়েও বিএনপি একটি দ্বিমুখী নীতি নিয়ে আছে। তৈমূর আলম খন্দকার জিতলে বলা হবে আওয়ামী লীগ শেষ। আর হারলে বলা হবে, তিনি তো আমাদের কথা শোনেননি। দলের অবাধ্য হওয়ার খেসারত তাকে দিতে হলো।
১৮ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধি হয়ে আছেন আইভী। এবার কি নারায়ণগঞ্জবাসী পরিবর্তনের পক্ষে নাকি যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবেন? তৈমূর আলম খন্দকার একজন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী সন্দেহ নেই। কিন্তু তার পক্ষে ভোটের হাওয়া প্রবলভাবে বইছে, তেমন কোনো খবর এখনো নেই।
অন্যদিকে আইভী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীক নৌকা পেলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের পূর্ণ সমর্থন তার দিকে না থাকার কথা শোনা যাচ্ছে। সংসদ সদস্য শামীম ওসমান এবং তার সমর্থকরা আইভীর পক্ষে সেভাবে নেই। অবশ্য সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ‘তার (শামীম ওসমান) সমর্থন খুব কি জরুরি এই নির্বাচনে? তিনি একজন সংসদ সদস্য। (নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে) ইচ্ছা করলেও তিনি আসতে পারবেন না।’
শামীম ওসমান বনাম আইভি
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগে দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব পুরনো। ওসমান পরিবার এবং চুনকা পরিবারের বিরোধ মেটানোর কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। ওসমান পরিবারের শামীম ওসমান এবং চুনকা পরিবারের সেলিনা হায়াৎ আইভীর মধ্যে বিরোধও নতুন কিছু নয়। শামীম ওসমান এবং তার লোকজন আইভীর পক্ষে নামবে না-এই আশঙ্কা থেকেই সম্ভবত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ আইভীর পক্ষে থাকার জন্য, তাকে জিতিয়ে আনার জন্য আগেভাগেই সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। শামীম ওসমান ও সমর্থকদের ওপর এসব হুঁশিয়ারি প্রভাব ফেলবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। খোকন সাহা মেয়রপ্রার্থী আইভীর নাম ভাঙিয়ে একজন ঠিকাদারের কাছে টাকা দাবি করায় আইভী নিজেই তার শাস্তি দাবি করেছেন। শুধু নারায়ণগঞ্জে নয়, সারাদেশেই নৌকা ঠেকাতে নৌকার লোকজনই কাজ করছে। আওয়ামী লীগের এটাও এক বড় সমস্যা। দলের শৃঙ্খলা দারুণভাবে ভেঙে পড়েছে।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক একটি তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন যে, শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত যারা মানবে না তারা কখনো দলের লোক হতে পারেন না। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল সমর্থিত প্রার্থীরা সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে এই কর্মী সমাবেশে বক্তব্যে বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানকের এই বক্তব্য নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। জাহাঙ্গীর কবির নানক যেদিন বক্তব্য দিলেন সেই একই দিন আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জের হেভিওয়েট নেতা শামীম ওসমান আরেকটি চাঞ্চল্যকর বক্তব্য দেন। তিনি কারও নাম না বলে বলেন, যারা আওয়ামী লীগের সাথে বেইমানি করে, তাদের সাথে কোন আপস নয়। তিনি ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন যে বিমানবন্দরে মোস্তাক বঙ্গবন্ধুর কাছে ছিল এবং সে বঙ্গবন্ধুকে বুঝিয়েছিল যে তাজউদ্দীন আপনাকে আসতে দেয়নি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রচারণা চলছে। জনগণ বনাম নৌকা, জনগণ বনাম সরকার। ইনশাল্লাহ আমি সর্বোদলীয় ভোট পাব। এ সুযোগ আমার দল (বিএনপি) করে দিয়েছে। আমি সেখানেই প্রচারণায় নেমেছি সেখানেই দলমত ও ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলেই আমার মিছিলে যোগদান করছে।
-তৈমুর আলম
সুসময়ে যারা বন্ধু হয় দুঃসময়ে তারা দূরে সরে যায়। এ ধরনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রতি ইঙ্গিত করেছেন বলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা মনে করেন।জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং শামীম ওসমানের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন যে, শামীম ওসমান এখন নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ কারণেই শামীম ওসমানকে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে বলেও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা দাবি করেছেন।
আওয়ামী লীগ চাইছে যে, শামীম ওসমান এই নির্বাচনে আইভীর পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করুক। কিন্তু তিনি যেন আইভীর বিরোধিতা না করে। আইভীর বিরোধিতা না করলে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় অনিবার্য বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
একাধিক সূত্র বলছে যে, নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে সমন্বয়ক হিসেবে আওয়ামী লীগের এই হাই প্রোফাইল নেতাকে দায়িত্ব দেয়ার প্রধান কারণ হলো শামীম ওসমান। শামীম ওসমান রাজনীতিতে কী কী কৌশল করতে পারেন আইভীকে পরাজিত করার জন্য সে সম্পর্কে বুঝা/জানার জন্য রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দরকার।
আর এজন্যই জাহাঙ্গীর কবির নানককে দেওয়া হয়েছে। জাহাঙ্গীর কবির নানক এখন প্রতিদিনই নারায়ণগঞ্জে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন ধরনের কর্মী সমাবেশের মাধ্যমে তিনি কর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম সহ আওয়ামী লীগের নেতারা তিনটি কাজ করছেন।
প্রথমত, তারা আইভীর পক্ষে প্রচারণার জন্য নেতাকর্মীদের সঙ্ঘবদ্ধ করছেন।
দ্বিতীয়ত, তারা আওয়ামী লীগের মধ্যে যেন কোন বিভক্তি না থাকে নির্বাচনে যেন আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারে সেটি নিশ্চিত করেছেন এবং তৃতীয়ত, শামীম ওসমানকে নজরদারিতে রাখছেন।শামীম ওসমানই এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হারা এবং জেতার মধ্যবর্তী অবস্থানে রয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করেন। তারা মনে করেন যে, শামীম ওসমান যদি কিছু না করে চুপচাপ বসে থাকেন তাহলেই হয়।
কিন্তু শামীম ওসমান নীরবতা ভঙ্গ করে গতকাল কিছু বক্তব্য দিয়েছেন। এই বক্তব্যগুলো কর্মীদের মধ্যে নানা রকম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছেন। তাছাড়া শামীম ওসমানের নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের মধ্যে জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং তার সুনির্দিষ্ট কিছু কর্মী বাহিনী রয়েছে। এই কর্মীবাহিনীরা যদি নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে আইভীর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন তাহলে পরে এটি অন্যরকম একটি ফলাফল হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। আর একারণেই এখন নজরদারিতে রয়েছেন শামীম ওসমান।
একেক জায়গার চিত্র একেক রকম। কোথাও দলীয় কোন্দল নৌকাডুবির কারণ হয়, কোথাও আবার হয় না। নারায়ণগঞ্জে এর আগেও কোনো নির্বাচনে শামীম ওসমানের সমর্থন না পাওয়ায় আইভীর জয়লাভে কোনো সমস্যা হয়নি। এবার হবে, তেমন আশঙ্কা প্রবলভাবে আছে বলেও মনে হয় না।
আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায় থাকায় মানুষের মধ্যে কিছু বিরূপতা তৈরি হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। আওয়ামী লীগ শাসক দল হিসেবে অন্য দলের তুলনায় খারাপ নয়– এটা মুখে স্বীকার করেও কেউ কেউ পরিবর্তন চায়। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন আগের বারও করেছেন। তাই এ বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা আছে। ভোটারদের মধ্যে আইভীর প্রশ্নে এক ধরনের আবেগ কাজ করে বলে শোনা যায়। দীর্ঘদিন দায়িত্বে থাকলে কিছু না কিছু বদনাম না হয়ে যায় না। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, অনিয়ম করা জনপ্রতিনিধিদের একটি স্বাভাবিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দায়িত্ব পেয়েছেন অথচ কোনো অনিয়মের সঙ্গী হননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। কিন্তু আইভী ১৮ বছর দায়িত্ব পালন করলেও তার বিরুদ্ধে তেমন কোনো অভিযোগ তুলতে পারেনি তার রাজনৈতিক বিরুদ্ধবাদীরাও।
অন্য প্রার্থীদের হালচাল
নাসিক নির্বাচনে দুই হেভিওয়েট আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার ছাড়াও মেয়র পদে আরও ৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। এরা হলেন—খেলাফত মজলিশের এবিএম সিরাজুল ইসলাম মামুন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মাসুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন মোঃ জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মোঃ রাশেদ ফেরদৌস ও আরেক স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল ইসলাম। এরাও মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রচার চালাচ্ছেন।
মূল দুজনের চেয়ে কম আলোচনায় থাকা মেয়র পদপ্রার্থীরা বলছেন, রাজনীতি আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। এ দুই দলের প্রার্থী নিয়েই আলোচনা বেশি হয়। তবে তারা সাধারণ মানুষের মধ্যে পরিবর্তনের মনোভাব দেখতে পাচ্ছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে জয়ের আশাও দেখছেন তারা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হলে নিশ্চয়ই ক্ষমতাসীন সরকারের পতন হবে না। আবার তিনি আওয়ামী লীগের না হওয়ায় তার পক্ষে উন্নয়ন কাজকর্ম এগিয়ে নেওয়া কতটুকু সম্ভব হবে তা-ও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার বিষয়। সবকিছুই হয় দলীয় রাজনৈতিক সুবিধা বিবেচনা করে। ভিন্ন দলের কেউ স্থানীয় সরকারের বড় পদে নির্বাচিত হয়ে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করতে পেরেছেন, এমন নজির আছে কি? ভোটের আগে এটা কি ভোটারদের বিবেচনার বাইরে থাকবে?
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের এবার তৃতীয় বারের মতো নির্বাচন হচ্ছে। এর আগের দুই বারই মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছিলেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে লড়াইয়ে নেমেছেন। বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী আইভী বলেছেন, এবার হয়তো নানা কারণে পরিস্থিতি একটু কঠিন, তবে জয় নিয়ে শঙ্কা নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফলে কোনো চমকপ্রদ ঘটনা ঘটবে কি না, তা বলা না গেলেও নির্বাচনটি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হোক, মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারুক– এটাই এখন আমাদের চাওয়া।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৪১৮
আপনার মতামত জানানঃ