পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাকে ইরানের গোপন পরমাণু কর্মসূচির পেছনে প্রধান কর্তা ব্যক্তি বলে মনে করে। তাদের মতে ইরানের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে মোহসিন ফখরিযাদে মূল ভূমিকা রাখছেন। কূটনীতিকরা তাকে “ইরানে বোমার জনক” বলে বর্ণনা করতেন।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ যারিফ এই ঘটনাকে “সন্ত্রাসী কাজ” বলে বর্ণনা করে ইসরায়েল জড়িত থাকার দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কয়েক ঘন্টা আগে ফখরিজাদেহের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং আরও বলেছিল যে বেশ কয়েকটি আক্রমণকারী মারা গেছে। ফখরিজাদেহ মৃত্যুর সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গবেষণা ও উদ্ভাবনী সংস্থার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ইসরায়েল ফখরিজাদেহকে হত্যার বিষয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা প্রথমে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এরপর ঘটনাস্থল থেকে ব্রাশফায়ারের শব্দ শোনা যায়। ফখরিজাদেহের দেহরক্ষীসহ আহতদের পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছেিল। কোনও গ্রুপ তত্ক্ষণাত্ এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।

বিবিসি জানিয়েছে, ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে নতুন করে উদ্বেগ বেড়েছে। এরই মধ্যে এই হত্যার ঘটনা ঘটল। বেসামরিক খাতে পারমাণবিক জ্বালানি তৈরির জন্য এবং একইসঙ্গে সামরিক কাজে ব্যবহারযোগ্য পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনের জন্য সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম একটি আবশ্যিক উপাদান।ইরান সবসমেয়েই বলে এসেছে তারা শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের জন্যই একমাত্র তাদের পরমাণু কর্মসূচি ব্যবহার করে।
২০১৮ সালের মে মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে একটি বক্তৃতার সময় মোহসিন ফখিরাযাদের নাম বিশেষভাবে উল্লখ করে বলেছিলেন তিনিই ইরানের গোপন কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ যারিফ এই ঘটনাকে “সন্ত্রাসী কাজ” বলে বর্ণনা করেছেন। এক টুইট বার্তায় ইসরায়েলের জড়িত থাকার দিকে তিনি ইঙ্গিত করেছেন। তিনি আন্তজার্তিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা যেন এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী কাজ বলে নিন্দা করে। ইরানের রেভরল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডার বলেছেন এই হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
ইরানের সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির এক সামরিক উপদেষ্টা ইসরায়েলকে যুদ্ধ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করার জন্য ফখরিজাদেহকে হত্যা করার অভিযোগ এনেছেন। কমান্ডার হোসেইন দেহহান টুইট করেছেন, “তাদের… মিত্র [মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প] এর রাজনৈতিক জীবনের শেষ দিনগুলিতে জায়নিস্টরা (ইস্রায়েল) ইরানের উপর চাপ আরও বাড়িয়ে তুলতে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের চেষ্টা করার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেছিলেন, ফখরিজাদাহের কাজ ইরানের শত্রুদের জন্য “দুঃস্বপ্ন” হতে থাকবে। ফখরিজাদেহ হ’ল “জনগণের মধ্যে যারা রাজনৈতিক লড়াইয়ের নেপথ্যে কোন দাবি ছাড়াই লড়াই করে এবং এই পথে শাহাদাত অর্জন করেছিলেন।
মার্কিন পেন্টাগনও এই হামলার খবরে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।
আপনার মতামত জানানঃ