প্রাচীন মিশর। আজও প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে অপার বিস্ময়ের খনি। কয়েক হাজার বছর আগেকার পৃথিবীর জলছাপ এখনও লেগে রয়েছে আজকের মিশরের গায়ে। এবার সেখানকার মাটি খুঁড়ে সন্ধান মিলল বিপুল পরিমাণে মদের ভাণ্ডারের। যা দেখে চমকে গিয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।
আজ থেকে অত বছর আগে ওই পরিমাণে মদ এভাবে তৈরি করে জমিয়ে রাখার ঘটনার সাক্ষী হতে পেরে অভিভূত তারা। তাদের দাবি, এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন মদ তৈরির কারখানা।
প্রসঙ্গত, মিশরের পুরাতত্ত্ববিদরা প্রায় ৫০০০ বছর আগের একটি বিয়ারের কারখানা খুঁজে পেয়েছেন; যা হয়তো হতে পারে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে প্রাচীন মদের কারখানা।
মরুভূমির মাঝখানে প্রাচীন আবিদোস শহরের একটি কবরখানার কাছে এই বিয়ার উৎপাদনের কারখানা আবিষ্কার করেছে একটি মিশরীয়-আমেরিকান দল।
সেখানে প্রায় ৪০টি পাত্র পাওয়া গেছে যাতে বিয়ার তৈরির জন্য যবজাতীয় শস্য ও পানি গরম করা হতো।
মিশরের পুরাতত্ব বিষয়ক সুপ্রিম কাউন্সিলের মহাসচিব মোস্তফা ওয়াজিরি বলেন, “প্রায় ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৮টি বড় বড় এলাকা নিয়ে কারখানাটি তৈরি, এবং প্রতিটিতে ৪০টি করে মাটির পাত্র দুই সারিতে সাজানো ছিল।”
কাউন্সিল বলছে, মদ তৈরির কারখানাটি সম্ভবত: রাজা নারমারের সময়কার; যিনি ৫০০০ বছর আগে রাজত্ব করতেন। রাজা নারমার প্রথম রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা এবং মিশরকে তিনিই একত্রিত করেছিলেন বলে মনে করা হয়।
কাউন্সিল বলছে, তারা মনে করছেন যে এটিই হয়তো পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো উচ্চমাত্রার উৎপাদনশীল বিয়ারের কারখানা। মনে করা হচ্ছে যে এখানে হয়তো এক বারে প্রায় ২২,৪০০ লিটার বা ৫০০০ গ্যালন বিয়ার উৎপাদিত হতো।
অনুসন্ধানী মিশনের সহ-প্রধান এবং নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ববিদ ম্যাথিউ এ্যাডামস বলছেন, মিশরের রাজাদের শেষকৃত্যের সময় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের জন্য বিয়ার সরবরাহ করতেই হয়তো এ কারখানাটি বানানো হয়েছিল।
আবিদোস হচ্ছে প্রাচীন মিশরের সবচেয়ে পুরোনো শহরগুলোর অন্যতম। এতে বিশাল বিশা্ল সমাধিক্ষেত্র এবং মন্দির পাওয়া গেছে।
এর আগেও ২০১৫ সালে প্রমাণ মিলেছিল যে প্রাচীন মিশরে তৈরি হত বিয়ার। বিভিন্ন মাটির ধ্বংসাবশেষ থেকে তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নিঃসন্দেহে এই বিপুল পরিমাণ মদের কারখানা বিস্ময়কর এবং তা অভূতপূর্বই।
এসডব্লিউ/এসএস/১৮৩৮
আপনার মতামত জানানঃ